বিজেপিকে নিয়ে চুপ কেন কংগ্রেস, প্রশ্ন মন্ত্রীর

কংগ্রেস কেন তাঁদের দলীয় কার্যালয় ‘দখল’ নিয়ে ‘নিশ্চুপ’ তা নিয়ে উদ্বেগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। গত শুক্রবার শিলিগুড়ি জংশন এলাকায় বিজেপির পার্টি অফিস উদ্বোধন হয়। রাতের কংগ্রেসের তরফে প্রধাননগর থানায় অভিযোগ করে জানানো হয়, তাদের অফিস দখল করে বিজেপি পার্টি অফিস করেছে। পরদিন শনিবার সকালে সেই বিজেপি পার্টি অফিস ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৪ ০১:২১
Share:

কংগ্রেস কেন তাঁদের দলীয় কার্যালয় ‘দখল’ নিয়ে ‘নিশ্চুপ’ তা নিয়ে উদ্বেগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। গত শুক্রবার শিলিগুড়ি জংশন এলাকায় বিজেপির পার্টি অফিস উদ্বোধন হয়। রাতের কংগ্রেসের তরফে প্রধাননগর থানায় অভিযোগ করে জানানো হয়, তাদের অফিস দখল করে বিজেপি পার্টি অফিস করেছে। পরদিন শনিবার সকালে সেই বিজেপি পার্টি অফিস ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জয়জিত্‌ দত্তকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। এ দিন অবশ্য ধৃত তৃণমূল সমর্থক আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। ধৃতের বিরুদ্ধে পুলিশ লঘু ধারায় মামলা দায়ের করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। শনিবারের ঘটনায় তৃণমূল কর্মীরা জড়িত নয় বলে দাবি করলেও, বিজেপি পার্টি অফিস ‘দখল’ করার পরে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী।

Advertisement

রবিবার সারাদিনই দলের কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন মন্ত্রী। তার ফাঁকে তৃণমূল জেলা সভাপতি মন্ত্রী গৌতমবাবুকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ওই এলাকায় বিজেপির কোনও দলীয় কার্যালয় কোনওদিনই ছিল না। ইন্দিরা ভবন কীভাবে ইন্দ্র ভবন হয়ে গেল তা বুঝতে পারছি না। তবে কংগ্রেস কেন তা নিয়ে উচ্চবাচ্য করছে না তাও বুঝতে পারছি না।” তবে তৃণমূল কোনও রকম ভাঙচুর করেনি বলে দাবি করে গৌতমবাবু পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “বিজেপিই ওই এলাকারই আরেকটি তৃণমূলের অফিস দখলের চেষ্টা করেছিল। ফের এ ধরণের চেষ্টা করা হলে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে মোকাবিলা করা হবে।”

এ দিন সকালে অবশ্য তাদের পার্টি অফিস দখলের অভিযোগ করে জেলা কংগ্রেসের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জীবন মজুমদার, জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সরকার সহ জেলা নেতৃত্বও পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার দাবি তোলেন। জীবনবাবু অভিযোগ করে বলেন, “রেলের জায়গায় আমাদের ওই অফিস দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। তদানিন্তন ওয়ার্ড সভাপতি থাকায় শ্যামসুন্দর সিংহের নামেই ঘরের নথিপত্র করা হয়েছিল। বিজেপিতে যোগ দিয়ে ও তার অপব্যবহার করছে। পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কংগ্রেস নিজেদের ক্ষমতায় তা ফেরত্‌ আনবে।” শ্যামসুন্দরবাবু অবশ্য জংশন এলাকায় টিনের চাল দেওয়া কংক্রিটের ভবনটিকে ব্যক্তিগত বলে দাবি করেছেন।

Advertisement

শিলিগুড়ির প্রধাননগর এলাকার ভাঙা অফিসকে ভাঙচুরকে ঘিরে এদিনও থমথমে ছিল ওই এলাকা। শনিবারের মতো এদিনও সকাল থেকে ওই ভাঙা ভবনের সামনে পুলিশ মোতায়েন ছিল। এ দিন অবশ্য কোনও দলের সমর্থককেই অফিসের কাছাকাছি আসতে দেখা যায়নি। এ দিন দুপুরে ধৃত তৃণমূল কর্মী জয়জিত্‌কে শিলিগুড়ি আদালতে হাজির করে পুলিশ। বিকেলে তিনি জামিনে ছাড়া পান। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন বসু পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, “তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারের বিষয়টি লোক দেখানো ছিল। ইচ্ছে করেই লঘু মামলা দায়ের করা হয়েছিল। অনান্য অভিযুক্তদেরও ইচ্ছে করেই পুলিশ গ্রেফতার করছে না।” শনিবারে ধৃত তৃণমূল কর্মীর বিরদ্ধে জামিন যোগ্য ধারাতে পুলিশ মামলা রুজু করে। গুজব ছড়িয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা, গোলমাল পাকানো, মারামারির মতো অভিযোগে ধৃতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বিজেপির দাবি, গত শনিবার অস্ত্র নিয়ে পার্টি অফিসে ঢুকে হামলার অভিযোগ দায়ের করা হলেও, পুলিশ অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেনি। পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ মানতে চাননি শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানি তিনি বলেন, “ওই ঘটনায় একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন