আহত ফণিভূষণ মাহাতো। —নিজস্ব চিত্র।
কলেজ ভোটের মনোনয়নপত্র তোলা নিয়ে অশান্তির প্রতিবাদে বিজেপি-র ডাকা ১২ ঘণ্টার দক্ষিণ দিনাজপুর বন্ধকে ঘিরে বৃহস্পতিবার রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটল বুনিয়াদপুরে। এ দিন দুপুরে বন্ধ সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের হামলায় বিজেপি-র বংশীহারি ব্লক সভাপতি ফণিভূষণ মাহাতোর মাথা ফেটে যায়। অভিযোগ, এলাকার তৃণমূল বিধায়ক সত্যেন রায়ের মদতে ফণিভূষণবাবুকে তাড়া করে তাঁর বাড়িতে ঢুকে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। ঘটনায় আরও ৬ জন বিজেপি কর্মী সমর্থক জখম হয়েছেন। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ফণিভূষণবাবুর আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁকে বংশীহারি ব্লক হাসপাতাল থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের এসপি শীষরাম ঝাঝারিয়া জানিয়েছেন, বিকেল পর্যন্ত থানায় এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ করা হয়নি। তবে বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক মানস সরকার জানান, ফণিভূষণবাবুর চিকিৎসা নিয়েই তাঁরা এখন ব্যস্ত। তবে দ্রুত তাঁরা থানায় অভিযোগ করবেন।
বুধবার হরিরামপুর কলেজে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বা এবিভিপি-র প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গেলে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সদস্যেরা তাঁদের উপরে হামলা করেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় ৫ জন এবিভিপি কর্মী সমর্থক জখম হন। চলে বোমা ও গুলিও। ঘটনার প্রতিবাদে এবং পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে এবিভিপি এবং বিজেপি বৃহস্পতিবার জেলায় বন্ধের ডাক দেয়। এ দিন সকাল থেকে বন্ধের সমর্থনে রাস্তায় নামেন বংশীহারি ব্লকের দৌলতপুর, পাথরঘাটা এলাকার কর্মী-সমর্থকেরা। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ড মোড়ে বন্ধ সমর্থকদের উপর একদল তৃণমূল কর্মী সমর্থক লাঠি ও লোহার রড নিয়ে হামলা চালান বলে অভিযোগ।
ওই বাসস্ট্যান্ডের কাছেই ফণিভূষণবাবুর বাড়ি। বিজেপি-র মানসবাবু জানান, হামলাকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ফণিভূষণবাবু বাড়িতে ঢুকতে যান। তখন তাঁকে তাড়া করে মাথায় রড দিয়ে আঘাত করা হয়, লাঠি দিয়ে মারা হয়। মানসবাবুর দাবি, “তৃণমূলের গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সত্যেন রায় উপস্থিত থেকে হামলায় মদত দেন।” দু’পক্ষের গোলমাল থামাতে পুলিশ লাঠি চালায়। পরে ৩ বিজেপি কর্মী গ্রেফতার হয়। হামলায় জড়িয়ে থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সত্যেনবাবু দাবি করেছেন, “দেখলাম রাস্তায় গোলমাল হচ্ছে। তখন পুলিশকে দিয়ে দু’পক্ষকে সরিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে চেষ্টা করেছি।”
তবে গঙ্গারামপুর মহকুমার ৪টি কলেজেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতা ধরে রাখল টিএমসিপি। এ দিনই ওই কলেজগুলিতে ছিল প্রার্থী মনোনয়নের শেষ দিন। এ দিনও শাসক দলের ভয়ে বিরোধী সংগঠনগুলি মনোনয়নপত্র পেশ করতে পারেনি বলে বিজেপি এবং সিপিএমের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।