বিশ্বকাপ জ্বরে গা গরম শিলিগুড়ির

বেশি বিক্রি হচ্ছে ব্রাজিলের জার্সি। পরেই রয়েছে আর্জেন্টিনা। স্পেন, পর্তুগালের জার্সির বিক্রিও যেন পাল্লা দিচ্ছে। এখনও ২০ দিন বাকি থাকলেও বিশ্বকাপ ফুটবলের উন্মাদনায় মেতেছে শিলিগুড়ি। শহরে ছেয়ে গিয়েছে বিশ্বকাপের জার্সি, প্যান্ট, মোজা, চাবির রিং, বুট, সিন গার্ড, পোস্টার, স্কার্ফ, রিস্ট ব্যান্ড থেকে পতাকায়। এমনকী, চলতি বিশ্বকাপে যে বলটি ব্যবহৃত হবে সেই ‘ব্রাজুকা’-র রেপ্লিকাও। সাজানো রয়েছে এ বারের বিশ্বকাপের ম্যাসকট ‘ফুলেকো’-র বড় কাট আউট।

Advertisement

সংগ্রাম সিংহ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৪ ০১:৪৭
Share:

শহরে বিকোচ্ছে বিভিন্ন দেশের জার্সি। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

বেশি বিক্রি হচ্ছে ব্রাজিলের জার্সি। পরেই রয়েছে আর্জেন্টিনা। স্পেন, পর্তুগালের জার্সির বিক্রিও যেন পাল্লা দিচ্ছে। এখনও ২০ দিন বাকি থাকলেও বিশ্বকাপ ফুটবলের উন্মাদনায় মেতেছে শিলিগুড়ি। শহরে ছেয়ে গিয়েছে বিশ্বকাপের জার্সি, প্যান্ট, মোজা, চাবির রিং, বুট, সিন গার্ড, পোস্টার, স্কার্ফ, রিস্ট ব্যান্ড থেকে পতাকায়। এমনকী, চলতি বিশ্বকাপে যে বলটি ব্যবহৃত হবে সেই ‘ব্রাজুকা’-র রেপ্লিকাও। সাজানো রয়েছে এ বারের বিশ্বকাপের ম্যাসকট ‘ফুলেকো’-র বড় কাট আউট। সব মিলিয়ে শহরে বিশ্বকাপ জ্বর বাড়ছে।

Advertisement

বিধান মার্কেট, জাজোদিয়া মার্কেট, শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে প্রতিটি খেলার সরঞ্জামের দোকানের রঙ এখন বিভিন্ন দেশের জাতীয় দলের জার্সিতে ও পোস্টারে রঙিন। যে কোনও দোকানে ঢুঁ মারলেই পাওয়া যাচ্ছে ওইসব সরঞ্জাম। প্রতিবারের মতই এবারও বেশি এসেছে ব্রাজিলের সবুজ-হলুদ ও আর্জেন্টিনার নীল-সাদা জার্সিই। তার সঙ্গে চাহিদায় পাল্লা দিচ্ছে স্পেনের লাল-হলুদ বা পর্তুগালের সবুজ-মেরুন জার্সি। দৌড়ে রয়েছে ইতালির গাঢ় নীল বা ক্রোয়েশিয়ার লাল-নীল-সাদা চৌকো নকশার জার্সিও। আপাতত মোটামুটি চাহিদা থাকলেও আইপিএল শেষ হলেই এক লাফে এই চাহিদা তুঙ্গে উঠবে বলে আশা করছেন ক্রীড়া সরঞ্জাম বিক্রেতারা। তবে টুর্নামেন্ট যত এগোয়, দলের সংখ্যা ততই কমতে থাকে। ততই ওইসব দলের জিনিসের চাহিদা বাড়ে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

শিলিগুড়ি শহরে ছোট-বড় প্রায় দুশো দোকানে খেলার সামগ্রী বিক্রি হয় বলে জানা গিয়েছে। এবার বিশ্বকাপ যে সময়ে, সেই সময়টা এশিয়ান ফুটবল বিশেষ করে ভারতীয় ফুটবলের ভরা মরশুম। তাই এ বারের বিশ্বকাপ আলাদা উন্মাদনা তৈরি করবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস শেঠ শ্রীলাল মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তথা উত্তরবঙ্গ ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক এবং বিক্রেতা সমিতির সদস্য খোকন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “বাঙালির আবেগে বিশ্বকাপ ফুটবল সবসময়ই বাড়তি উৎসাহের। তার উপরে জুন-জুলাইয়ে এ বার বিশ্বকাপ হওয়ায় সোনায় সোহাগা।” তিনি মনে করছেন, বিশ্বকাপের এক মাসে বা তার পরের কয়েক মাসের মধ্যে যে ব্যবসা হবে তা সারা বছরের ব্যবসার দ্বিগুণ। তাই বিশ্বকাপ ব্যবসায়ীদের কাছে উন্মাদনার পাশাপাশি লক্ষ্মীলাভেরও।

Advertisement

কিশোর-যুবদের মধ্যে ঝোঁক রয়েছে বিভিন্ন খেলোয়াড়দের নামাঙ্কিত জার্সি। বিধান মার্কেটের এক ব্যবসায়ী প্রকাশ বসাক বলেন, “অনেকেই দল না দেখে শুধু মাত্র নিজের পছন্দের খেলোয়াড়দের নাম ও নম্বর লেখা জার্সি কিনছেন।” এর মধ্যে লিওনেল মেসি, নেইমার, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, ওয়েন রুনি, ক্যাসিয়াসের জার্সির চাহিদা বেশি। মারাদোনা, পেলে, জিদান বা রোনাল্ডিনহোর মত চিরকালীন তারকাদের নাম লেখা জার্সিরও চাহিদা রয়েছে। আর কয়েকদিনের মধ্যেই বাজার ঊর্ধ্বমুখী হবে ধরে নিলেও, আপাতত হিসেব করে সামগ্রী তুলছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিল প্রথম রাউন্ডে ছিটকে গেলে ক্ষতির সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানান এক ব্যবসায়ী। সুরেশ সাহা নামের ওই ব্যবসায়ী বলেন, “নজর রাখতে হচ্ছে কেমন দল গড়ছে। বিশ্বকাপের গোড়া থেকেই নজর না রাখলে মুশকিলে পড়তে হতে পারে। তখন লাভের গুড় পিঁপড়েয় খেয়ে যাবে।”

বিশ্বকাপ চলাকালীন জার্সি, প্যান্ট, মোজা বা পতাকা বিকোতে শুরু করে সাধারণ কাপড় দোকানেও। শিলিগুড়ির হকার্স কর্ণারের এক কাপড়ের ব্যবসায়ী সমীর ঘোষ জানান, তিনি বিভিন্ন দেশের এক হাজার পতাকা ও পাঁচশো জার্সি বায়না করেছেন। জুনের প্রথম সপ্তাহের শেষেই তা চলে আসবে। মহাবীরস্থানের এক পোস্টার বিক্রেতা সারা বছর চিত্র তারকা ও কিছু ক্রিকেট খেলোয়াড়দের ছবি বিক্রি করেন। বিশ্বকাপের বাজারে মেসি-নেইমার বা বালোতেলি-রবেনদের ছবিও আনবেন বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন