সংগঠন এখনও তেমন শক্তিশালী নয়, এ কথা মাথায় রেখেই শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গে দলীয় কর্মীদের পুরভোটের প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরামর্শ দিলেন বিজেপি-র বসিরহাটের বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। শনিবার শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, মালবাজার পুর এলাকাগুলিতে সভা করে সেই বার্তাই দিলেন তিনি। বিভিন্ন জেলাতে এখনও তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে। তা সত্ত্বেও মানুষ তাদের পক্ষে থাকলে কেউ যে তাদের রুখতে পারবে না সে কথা বলে কর্মীদের তত্পর হতে বলেন। বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, কেন্দ্রে তাদের সরকার রয়েছে। রাজ্যে এবং পুরসভাগুলিতে তারা ক্ষমতায় এলে একই সুরে সুর মিলিয়ে উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।
শিলিগুড়ি পুর এলাকায় ১০ নম্বর ওয়ার্ডে এ দিন সন্ধ্যায় দলের কার্যালয় উদ্বোধন করতে এসে তিনি বলেন, ‘‘প্রকৃত উন্নয়নের ক্ষেত্রে কেন্দ্র, রাজ্য এবং পুরসভাগুলিকে উন্নয়ন কাজ করতে হবে। কেন্দ্রে আমাদের সরকার হয়েছে। একই সুরে সুর মেলাতে রাজ্য এবং পুরসভাগুলি আমাদের হাতে এলে বিকাশের কাজ সম্পূর্ণ হবে।” তাঁর আরও বক্তব্য, বিচার ব্যবস্থাকে এই সরকার হাস্যকর করে তুলতে চাইছে। মানবাধিকার-সহ বিভিন্ন কমিশনগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হচ্ছে।
জেলা বিজেপি-র মজদুর মোর্চার সভাপতি দেবব্রত মিত্র জানান, দ্রুত তারকাদের সামিল করে মালবাজারে পুরভোটের প্রচার হবে। এ দিন মালবাজারের কয়েকজন আইনজীবি শমীকবাবুর হাত থেকে বিজেপির পতাকা নেন।
আসন্ন পুরসভাগুলির নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জলপাইগুড়িতে শমীকবাবু বলেন, “রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা আছে কি? যাদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত তারা সরাসরি পুলিশকে বোম মারার কথা বলছে! কী করে খুন করছে তা প্রকাশ্যে বলছে। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা কোথায়? পুলিশ বিজেপি করার অপরাধে একটি ছেলের কাকিমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে সর্বাঙ্গে বিচুটি ঘষে দেয়। তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে গিয়ে তাঁর হাতের তালু ব্লেড দিয়ে চিরে দেয়। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আস্থা রেখে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে যেভাবে প্রতিবাদ করা যায় করছি। জলপাইগুড়িতে শমীকবাবুর হাত থেকে পতাকা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি’তে যোগদান করলেন নিউ টাউনপাড়া এলাকার একজন যুবক রাজু ভৌমিক। তিনি অসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের স্বেচ্ছাসেবীদের সভাপতি। তাঁর দাবি, তাঁর সঙ্গে আরও ৬৪ জন তৃণমূল সদস্য বিজেপিতে যোগদান করেছেন।
অন্য দিকে চা শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে তাদের জমির অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, পাট্টা দেওয়া, মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে জটিলতা মেটানোর কথা বলেছেন শমিকবাবু। মালবাজারের সভায় জানান, উত্তরবঙ্গে ৫০ হাজার ক্ষুধার্ত চা শ্রমিক পরিবারের জন্যে রাজ্য সরকার নীরব। নিঃশব্দে মৃত্যু ঘটছে বন্ধ চা বাগানে। অথচ চা শ্রমিকের সমস্যা মেটাতে ঢিলেমি করা হচ্ছে। আর পাহাড়ের ডেলোয় বৈঠক হচ্ছে। শমীকবাবু বলেন, “শীঘ্রই রাজ্যের চা শিল্পের পরিস্থিতি দেখতে আসছেন কেন্দ্রীয় শিল্প মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তবে রাজ্য উদ্যোগী না হলে একা কেন্দ্র সরকার বেশি কিছু করতে পারবে না বলে জানান তিনি।”