ম্যাচের একটি মুহূর্ত। নিজস্ব চিত্র।
টান টান উত্তেজনার ম্যাচে হারল আঠারোখাই সরোজিনী সঙ্ঘ। গোটা ম্যাচের পর তাঁদেরই জেতার কথা থাকলেও প্রতিপক্ষ উল্কা ক্লাবের গোলরক্ষক শুভ দাসের দস্তানায় আটকে এবারের প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিতে হল তাঁদের। সঙ্গত কারণেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ হিসেবে তাঁকে বেছে নিয়ে একটুও ভুল করেননি বিচারকেরা। গতবারের প্রতিযোগিতার রানার্স শিলিগুড়ি উল্কা ক্লাব ১-০ গোলে জিতলেও তাঁদের এদিন বিজয়ী দলের মত লাগেনি। ম্যাচ যে কোনও সময় হেরে যেতে পারেন বুঝে শেষ আধ ঘন্টা রেফারিকে দুূষে গেলেন উল্কা কর্তারা। ম্যাচ শেষ হতেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন তাঁরা। তাঁদের কোচের কথাতেও সেই কথারই প্রতিধ্বনি।
উল্কা কোচ বিধান মণ্ডল দলের খেলায় সন্তুষ্ট নন বলে জানান। তিনি বলেন, “পরের রাউন্ডে আমাদের আরও ভাল খেলতে হবে। বিপক্ষ দল যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে গোল খেয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। গোলরক্ষককে ধন্যবাদ।” উল্টোদিকে বিজিত দলের পক্ষে অবশ্য হতাশা ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট ছিল না। তাঁদের কোচ কমল রায় হতাশা লুকোনোর চেষ্টাও করেননি। তিনি বলেন, “ভাল খেলেও লাভ হল না। খেলায় স্কোরটাই শেষ কথা। আমাদের আক্রমণভাগের ব্যর্থতায় সুযোগ কাজে লাগানো গেল না। না হলে অন্তত ৪-৫ গোলে জেতা উচিত ছিল।”
এদিন অবশ্য প্রথম দিনের ম্যাড়মেড়ে ভাব উধাও। গোটা ম্যাচে মনোরঞ্জনের মশলা ভরপুর ছিল। প্রথম থেকেই উল্কা তেড়েফুঁড়ে খেলা আরম্ভ করে। প্রথমার্ধে বল দখলে তাঁদেরই আধিপত্য ছিল। ম্যাচের ৪৪ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বিদেশী সিডর্ফের পাস থেকে মাটিঘেঁষা শটে গোল করতে ভুল করেননি অপর বিদেশি ইকে। এই গোলেই শেষ পর্যন্ত ফয়সালা হয়। দু’পক্ষই খেলার রাশ নিজেদের দখলে আনতে গিয়ে মাথা গরম করে ফেলে। ফলস্বরূপ বেশ কয়েকটি কার্ড দেখাতে বাধ্য হন রেফারি। একবার অবশ্য সরোজিনীর বিদেশী ক্লিয়ারেন্সকে হলুদ দেখানোর পর দু’বার কার্ড হয়েছে মনে করে লাল কার্ড দেখিয়ে পেলেন রেফারি। পরে অবশ্য নিজের ভুল বুঝতে পেরে কার্ড প্রত্যাহার করে নেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে সরোজিনীর খেলা ছাপিয়ে যায় উল্কাকে। একের পর এক আক্রমণ আছড়ে পড়ে উল্কার রক্ষণে। তবে বারবার শেষ রক্ষণে আটকে যায় তাঁদের সমস্ত আক্রমণ। সারোজিনীর স্ট্রাইকার নূরবুদ্দিন একাধিক সহজ সুযোগ মিস না করলে খেলার ফল উল্টো হতে পারত। এদিন প্রথম দিনের চেয়ে দর্শক সংখ্যা বেশি ছিল। প্রতিযোগিতা যত গড়াবে দর্শক আরও বাড়বে বলে ক্রীড়া পরিষদ কর্তাদের আশা।