কোহিনুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হিরণবালা দেবনাথ সাতাত্তর বছরের অসহায় বিধবা। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বিপিএল তালিকায় নাম রয়েছে। টানা দশ বছর বার্ধক্য ভাতা পেয়ে আসছেন। ২০১৩-র জানুয়ারি থেকে হঠাৎই ভাতা বন্ধ।
চাপরের পার ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের শোভাগঞ্জ গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধা ফুলন দাস ১৮ বছর ধরে ভাতা পেয়েছেন। কিন্তু, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ভাতা পাচ্ছেন না ওই বৃদ্ধা।
শুধু হিরণবালা বা ফুলনদেবী নয়, বিডিও অফিসের কর্মীদের গাফিলতিতে আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৮০০ বৃদ্ধ বৃদ্ধা ১৪ মাস ধরে ভাতা পাচ্ছেন না। টাকা না পেয়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে অসহায় ভাবে তাঁরা জীবন কাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে বিডিও-র কাছে দফায় দফায় অভিযোগ জানানো পরেও কাজ হয়নি। আলিপুরদুয়ার ২ বিডিও সজল তামাং বলেন, ‘‘সেবা সফটওয়ারের তালিকায় যে সমস্ত বৃদ্ধবৃদ্ধার নাম আছে তাঁদের প্রতি মাসে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী যাঁদের নাম ‘সেবা সফটওয়ারে’ নেই তাঁদের ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না। তবে কী কারণে তাঁদের নাম সেখানে নেই, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁরা যাতে ভাতা পান সেটা দেখা হবে।” চাপরের পাড় ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা শোভাগঞ্জ এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য রঞ্জন রায় বলেন, “শোভাগঞ্জ গ্রামের অন্ধ বৃদ্ধ শশধর পাল, অসহায় বৃদ্ধা ভবানী দাস ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছেন। হঠাৎ তাঁদের তা দেওয়া বন্ধ হয়েছে। বিডিও অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেবা নামে সরকারি সফটওয়ারে যাঁদের নাম নেই তাঁরা ভাতা পাবেন না।” রঞ্জনবাবুর অভিযোগ, বিডিও অফিসের যে কর্মীরা তালিকা তৈরিতে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের চরম গাফিলতিতে দরিদ্ররা সরকারি ভাতা থেকে বঞ্চিত। শীঘ্র তাদের ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে।” শামুকতলা পঞ্চায়েত প্রধান গাব্রিয়েল হাসদা বলেন, “এলাকার ৮০ বৃদ্ধবৃদ্ধা বার্ধক্য ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অসহায় জীবন কাটাচ্ছেন। তাঁদের দ্রুত ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা জরুরি।” জেলাশাসক পৃথা সরকার বলেন, কী কারণে এত জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার নাম বাদ গিয়েছে সেটা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। বিপিএল তালিকাভুক্ত অসহায় দরিদ্র কোনও বৃদ্ধবৃদ্ধার নাম বাদ গিয়ে থাকলে তাঁদের নাম যাতে তালিকায় তোলা হয় সে ব্যাপারে বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হবে।”