ভাবা হয়নি পর্যটন নিয়ে

১৯৪৯ সালের ঘটনা। সেই বছর তৈরি হওয়া শিলিগুড়ি পুরসভা ছিল হিলকার্ট রোডে। মেঘদূত সিনেমা হলের উল্টোদিকের তারের জাল দেওয়া ঘরেই ছিল পুর দফতর। মহানন্দা দিয়ে বহু জল চলে গিয়েছে।

Advertisement

শিলিগুড়ি

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৫ ০১:৪১
Share:

এমনই হাল রাস্তার। —নিজস্ব চিত্র।

১৯৪৯ সালের ঘটনা। সেই বছর তৈরি হওয়া শিলিগুড়ি পুরসভা ছিল হিলকার্ট রোডে। মেঘদূত সিনেমা হলের উল্টোদিকের তারের জাল দেওয়া ঘরেই ছিল পুর দফতর। মহানন্দা দিয়ে বহু জল চলে গিয়েছে। সেদিনের ওই পুরসভা এখন রাজ্যের অন্যতম বিরাট পুর কর্পোরেশন।

Advertisement

প্রথম থেকেই পরিকল্পনা নিয়ে পাহাড়, নদী, জঙ্গল ঘেরা এই শহরে অনায়াসেই পর্যটনের গন্তব্য করা যেত। শিলিগুড়ি বরং পরিচিত হল বাণিজ্য নগরী হিসাবে। হাতি সাফারি, মিউজিয়াম মিলিয়ে এলাকাটি যে কোনও সময় গড়ে তোলা যেতে পারে আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে।

শিলিগুড়ি লাগোয়া সরকারের মেগা প্রজেক্ট গজলডোবা হতে পারে আরেকটি আকষর্ণীয় কেন্দ্র। নানা প্রকল্পের কথা বলা হলেও এখনই দেখা মেলেনি বাস্তব কোনও কিছুই। সেখানে তিস্তার ধার ঘেঁষে বাগান গড়ে বসার ব্যবস্থা, রেঁস্তোরা, শৌচালয় বা নৌকাবিহার সবই হতে পারে। এখনও প্রতি শনিবার, রবিবার ছুটির দিনে প্রচুর লোকে ভিড় করেন গজলডোবায়। আমরাও সুযোগ পেলে সেখানে যাই। সেখানের ক্যানালের দুই দিকের জায়গাটি অসাধারণ। সেখানে বহু বেসরকারি পুকুরে মাছ ধরার ব্যবস্থাও রয়েছে। সব মিলিয়ে দ্রুত পরিকাঠামো গড়লে গজলডোবা অত্যন্ত আকর্ষণীয় কেন্দ্র হতে পারে।

Advertisement

আর একটি জায়গাকে পযর্টন কেন্দ্র হিসাবে গড়াই যায়। ফুলবাড়ির মহানন্দা ব্যারেজ এলাকাকে। বিভিন্ন গাছে ঘেরা, পরিযায়ী পাখিদের বাসস্থল হিসাবে জায়গাটি অতুলনীয়। রয়েছে মাছে ভরা জলাভূমিও। কিন্তু মুখেই শোনা যায়, ফুলবাড়ি ব্যারেজের নানা প্রকল্পের কথা। কাজ আর হয় না। দুভার্গ্য শিলিগুড়িবাসীর, দুভার্গ্য পযর্টকদের।

আমার শহর শিলিগুড়িতে আছে অনেক কিছুই। আছে ইসকন মন্দির, দাগাপুর লোকনাথ মন্দির, করোনেশন ব্রিজ, পাহাড়ের মাথায় সেভশ্বরীর মন্দির। শিলিগুড়িতে আচে অনেক কিছুই, কেবল নেই করার ইচ্ছা বা সেই আন্তরিকতার, যাতে শহর শিলিগুড়ি নিজেই একটা গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে। কিছুদিন হল জানতে পারছি, শালুগাড়া লাগোয়া সোরিয়াতে তৈরি হচ্ছে, নর্থবেঙ্গল ওয়াইল্ড অ্যানিমেল পার্ক। ডিসেম্বরেই নাকি উদ্বোধন। এটা অবশ্য খুবই ইতিবাচক দিক শিলিগুড়ির জন্য। আমি চাই সব মিলিয়ে শিলিগুড়ি জায়গা করে নিক রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে গন্তব্য হিসাবে, শুধু, ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে নয়।

মানস তরফদার, বিদ্যাসাগর পল্লি, শিলিগুড়ি

হাল ফিরুক ট্রাফিকের

শিলিগুড়ি নামটা দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে খুব অজানা নয়। কারণ, শিলিগুড়ির উপর দিয়েই যেতে হয় দার্জিলিং মানে কুইন অব হিলসে। যেতে হয় সিকিমে। এমনকী, ভুটানেও। সহজে সড়ক পথে নেপাল যাতায়াতের অন্যতম রুটও শিলিগুড়ি। ইদানীং তো ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে যাতায়াতের ব্যবস্থা হচ্ছে বলে শুনেছি। তা হলে শহরে তো ভিড় বাড়বে। যে শহরে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আনাগোনা সেখানে ট্রাফিকের এমন বেহাল দশা মানায় না। রাস্তায় বার হলে হাঁটা যায় না। যে যেখানে খুশি গাড়ি রেখে দিচ্ছে। টোটো, রিকশা, অটোওর স্ট্যান্ড ঠিক কোথায় জানার দরকার নেই। সব রাস্তায় মর্জি হলে যে কেউ যে কোনও যানবাহন রাখতে পারে।

পুলিশ ইচ্ছে করলে অনেক কিছুই পারে। তা হলে করছে না কেন সেটাই শহরবাসী জানতে চায়। অতীতে শিলিগুড়িতে তো এমন হাল ছিল না ট্রাফিকের। কয়েক বছর আগেও শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা অনেকটাই ভাল ছিল। এখন তো হিলকার্ট রোড, বিধান রোড, সেবক রোডে চলাফেরা করা দায়। ট্রাফিকের অফিসার-কর্মীদের প্রতি আমার অনুরোধ, শিলিগুড়ির ভাবমূর্তি যাতে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে আরও ভাল হয় সে জন্য দয়া করে বাড়তি উদ্যোগী হন। বিধান মার্কেটের মাছ বাজারের কাছে ট্রাফিক পুলিশ সারাদিন নজরদারি করুক। সেখানে সকাল থেকে যে হারে যত্রতত্র পার্কিং হয় তা বন্ধ করা জরুরি। শহরের প্রথম সারির নাগরিকদের অনেকেরই সেই বাজারে আনাগোনা রয়েছে। তাঁরা চাইলে এটা হতেই পারে। মাননীয় পুলিশ কর্তাদের কাছে নাগরিক হিসেবে আমার আর্জি, শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরও মসৃণ করতে আপনারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুন। এ ছাড়া একজন সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে আমার শহরের সংস্কৃতি প্রেমী নাগরিকদের কাছে একটা নিবেদন রয়েছে। তা হল, সুযোগ পেলেই প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বর্জনের পক্ষে আরও জোরাল সওয়াল করে শহরের মুকুটে যে ‘প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ মুক্ত শিলিগুড়ি’ শিরোপা রয়েছে তা আরও ঝকঝকে করে তুলতে হবে।

অনিন্দিতা চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন