মন্ডপের ভেতরের কাজ করছেন কাঁথির শিল্পীরা।—নিজস্ব চিত্র।
শুকনো ফলের টুকরো, শুকনো লতাপাতা এসব দিয়ে তৈরি মন্ডপ। আকারে বিরাট একটা রথ। সেই রথের ভেতরেও থাকছে শুকনো ফল এবং লতাপাতার কারুকাজ। জলপাইগুড়ির অন্যতম পুজো কমিটি তরুণ দল ক্লাবের পুজোর এ বারের মন্ডপ হবে এ রকম। এজন্য জলপাইগুড়িতে কাঁথি থেকে এসেছেন শিল্পীদের একটা বড় দল।
তরুণ দলের পুজোর প্যান্ডেলের এ বছর তিনটি পর্যায় আছে। তিনটি পর্যায়ে তিন জন শিল্পী কাজ করছেন। প্রথমত মূর্তি। তার পর মন্ডপের কাঠামো এবং শেষে শিল্পের কাজ। মুর্তী স্থানীয় শিল্পী জীবন পাল তৈরি করছেন। মূর্তির ধরন চিরাচরিত নয়। দেবী দুর্গা এবং তার ছেলেমেয়েরা প্রত্যেকেই তাঁদের বাহনের ওপর বসে থাকবেন। দুর্গাও সিংহের ওপর আসীন হবেন।
৭৫ ফুট উঁচু এবং ৬৫ ফুট চওড়া রথের আদলে তৈরি মন্ডপটি তৈরি করছেন স্থানীয় শিল্পী দীপক সরকার। বাঁশ এবং কাঠ দিয়ে তিনি মন্ডপটি তৈরি করছেন। তার কাজ শেষ হলে মন্ডপ সাজানোর কাজে হাত দেবেন কাঁথি শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আঠিলাগোরী এলাকার বাসিন্দা বাবলু সিং এবং তার দল। ইতিমধ্যে তারা ঘরের ভেতরে কাজ করছেন।
কাঁথির বাবলু সিংহ বলেন, “আমরা মূলত শুকনো ফল এবং লতাপাতা দিয়ে মন্ডপ সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছি। সমস্ত সরঞ্জাম আমরা কাঁথি থেকে নিয়ে এসেছি। আমাদের ১৫ জনের একটা দল এসেছে। তারা দিনরাত কাজ করে চলেছে।”
বেল, কতবেল, হরিতকি, আমরা, পাইন, কাঠবাদাম, মেহগনি, লোটাস, চালতা, সুপুরি, অর্জুন, ঝাউয়ের ফল এবং এক ধরনের লতা, ছত্রাক এবং স্বল্প পাটকাঠি ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলি কেটে প্লাইএর টুকরোর ওপর আলপনার আকারে আঠা দিয়ে বসানো হচ্ছে। মন্ডপের ভেতরে হবে একটি ছোট রথ। রথের সারথী হবে ইঁদুর। দশ ফুট ব্যাসের দুটি ছাতার মত ঝার তৈরি হচ্ছে। একটি থাকবে ভেতরে ও একটি বাইরে। মন্ডপের ভেতর দুর্গা বসবেন, বাইরে সেই রথের সারথী হবেন কৃষ্ণ।
তরুণ দল ক্লাবের পুজো কমিটির সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, “আমাদের ক্লাবের পুজো এবার ৫৬তম বর্ষে পা রাখছে।” ক্লাব সুত্রে জানা যায় যে তৃতীয়ার দিন প্রতিমা মন্ডপে বসবে। সেদিন ৫৬টি ঢাকের বাদ্যি দিয়ে শোভাযাত্রা হবে। সঙ্গে থাকবে তাসাপার্টি। পাড়ার মহিলারা লালপাড় শাড়িতে সজ্জিত হয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন। পুজোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে ষষ্ঠীর দিন। সে দিন ২০০ জন দুঃস্থকে বস্ত্রদান করা হবে।