মানিকচকে ধর্ষিতার আত্মাহুতি নিয়ে হাইকোর্টে তিন রিপোর্ট পেশ

মালদহের মানিকচকে এক ধর্ষিতা গৃহবধূর আত্মাহুতির ঘটনা নিয়ে নিজের থেকে মামলা ঠুকেছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র। সেই বিষয়ে মালদহের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং জেলার মুখ্য বিচারক সোমবার প্রধান বিচারপতি মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের কাছে সিল করা খামে পৃথক ভাবে তিনটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩১
Share:

মালদহের মানিকচকে এক ধর্ষিতা গৃহবধূর আত্মাহুতির ঘটনা নিয়ে নিজের থেকে মামলা ঠুকেছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র। সেই বিষয়ে মালদহের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং জেলার মুখ্য বিচারক সোমবার প্রধান বিচারপতি মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের কাছে সিল করা খামে পৃথক ভাবে তিনটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, তিনি রিপোর্টগুলি খতিয়ে দেখবেন। চার সপ্তাহ পরে ফের এই মামলার শুনানি হবে।

Advertisement

একটি কিশোর তাঁকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন মানিকচকে ভুতনির বসন্তটোলা গ্রামের এক মহিলা। ওই কিশোরের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে নালিশ জানাতে চেয়েছিলেন তিনি। গ্রামের সালিশি সভায় মাতব্বরেরা তাতে আপত্তি তোলেন বলে অভিযোগ। তাঁদের সিদ্ধান্ত ছিল, অভিযুক্ত কিশোরকে শাস্তি হিসেবে কেবল অভিযোগকারিণীর পা ধরে ক্ষমা চাইতে হবে এবং তার পরে ২০ বার কান ধরে ওঠবোস করলেই চলবে। কিন্তু মাতব্বরদের বিধান মানতে পারেননি ওই মহিলা। তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর ব্যাপারে অনড় ছিলেন। তখন মাতব্বরেরা ভরা সভার মধ্যেই তাঁকে ‘কুলটা’ বলে গালাগালি দেন বলে অভিযোগ।

সালিশি সভায় সেই অপমানের পরে, গত বুধবার গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন মহিলা। বৃহস্পতিবার ভোরে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ, ঘটনার পরে পুলিশ ও প্রশাসন এলাকায় গিয়ে তদন্ত করার প্রয়োজন বোধ করেনি। ধরা পড়েনি অভিযুক্ত কিশোরও। যাঁরা সালিশি সভা ডেকেছিলেন, তাঁদেরও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

Advertisement

আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য শুক্রবার হাইকোর্টে ওই ঘটনার কথা তুলে ধরেন। তার পরেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জনস্বার্থের মামলা দায়ের করেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। তিনি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেন, জেলার মুখ্য বিচারক, এসপি এবং জেলাশাসককে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করতে হবে। তিন জনকেই আলাদা তদন্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সে-দিনই দুপুরে বসন্তটোলা গ্রামে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন মালদহের ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বিভাস পট্টনায়ক। জেলার মুখ্য বিচারক তদন্ত শুরু করার পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসকও ঘটনাস্থলে যান। আলাদা ভাবে তাঁরা রিপোর্ট পেশ করেন হাইকোর্টে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন