মালদহে ফের কেরল সিআইডি

ইংরেজি পড়ানোর নাম করে কেরলে শিশু-কিশোর পাচারের ঘটনার তদন্তে মালদহে এসেছে কেরল পুলিশের সিআইডি। তদন্তে এসে কেরলে পড়ুয়া এক কিশোরের মুখে একই সঙ্গে ইংরেজি ও মালয়ালম ভাষায় দক্ষতা দেখে তার পিঠ চাপড়ে দিলেন কেরল পুলিশের সিআইডির দল। গাড়িতে ওঠার আগে ডেকে দিলওয়ার হোসেন নামে ওই কিশোরের সঙ্গে হাতও মেলালেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৪ ০২:০৯
Share:

ইংরেজি পড়ানোর নাম করে কেরলে শিশু-কিশোর পাচারের ঘটনার তদন্তে মালদহে এসেছে কেরল পুলিশের সিআইডি। তদন্তে এসে কেরলে পড়ুয়া এক কিশোরের মুখে একই সঙ্গে ইংরেজি ও মালয়ালম ভাষায় দক্ষতা দেখে তার পিঠ চাপড়ে দিলেন কেরল পুলিশের সিআইডির দল। গাড়িতে ওঠার আগে ডেকে দিলওয়ার হোসেন নামে ওই কিশোরের সঙ্গে হাতও মেলালেন তাঁরা। পাচারকারী সন্দেহে ধৃতদের বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের আগেই জেরা করেছিল কেরল পুলিশের সিআইডি। আর এবার তারা জেরা করলেন অভিভাবকদের পাশাপাশি কেরলে যাওয়া শিশু-কিশোরদের শংসাপত্র দেওয়া পঞ্চায়েতের বর্তমান ও প্রাক্তন কর্তাদের।

Advertisement

মালদহের চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে কেরলে যাওয়ার পর ৫৮ জন শিশু-কিশোরকে পরিচয়পত্র না থাকার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করে সেখানকার রেল পুলিশ। পরে তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় পাচারের অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতারও করা হয়। সেই ঘটনার তদন্তে কেরল পুলিশ সিআইডির দলটি মালদহে গিয়ে এর মধ্যেই দুই ধৃতের বাড়ি গিয়ে তদন্ত করেছে। বৃহস্পতিবার দিন হরিশ্চন্দ্রপুরে এক ধৃতের বাড়িতে গেলে তার কিশোর ছেলেও বাবা পাচারকারী নন বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে।

এদিন সিআইডি দলটি যায় চাঁচলের ধানগাড়া এলাকায়। সেখানে গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে হাজির হয়ে তারা জেরা শুরু করেন বর্তমান কংগ্রেস প্রধান, বিগত বোর্ডের সিপিএম প্রধান সহ কয়েকজন সদস্যকেও। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় ভাষা। তখন বছর পনেরোর কিশোর দিলওয়ার হোসেন এগিয়ে যায়। তার বাবা সামশুল হক ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। গত ৫ বছর ধরে কেরলে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে নিখরচায় পড়াশুনা করছে দিলওয়ার। দিনকয়েক আগে তার কেরলে ফেরার কথা থাকলেও উদ্ভূত সমস্যায় য়ে কেরলে যেতে পারেনি। তার ইংরেজি ও মালয়ালমে দক্ষতা দেখে ওই সময় পিঠ চাপড়ে দেন সিআইডি অফিসাররা। ফেরার আগে হাত বাড়িয়ে দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে যান।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কেরলে পড়তে যাওয়া শিশু-কিশোরদের শংসাপত্র দিয়েছিলেন প্রাক্তন সিপিএমের প্রধান আজমল হোসেন ও বর্তমান কংগ্রেসি প্রধান রিনাতুন্নেসা। তাঁরা শংসাপত্র দেওয়া শিশুদের অভিভাবকদের চেনেন কী না তার বিস্তারিত খোঁজখবর নেয় সিআইডি। প্রাক্তদন ও বর্তমান প্রধান দুজনেই সিআইডিকে জানিয়ে দেন যে, কেরলে নিখরচায় ইংরেজি মাধ্যমে শুধু পড়াশুনা করার সুযোগই নয়। ওখানে খাকা খাওয়ারও কোনও খরচ নেই। এই আবেদন নিয়ে অভিভাবকরা আসলে পঞ্চায়েত কর্তা হিসাবে তাদের ফেরানোর এক্তিয়ার গ্রাম প্রধানের নেই বলেও তিনি দাবি করেন। বর্তমান প্রধান রিনাতুন্নেসা বলেন, “যাদের শংসাপত্র দিয়েছি তাদের চিনি কী না তা জানতে চাওয়া হয়েছিল! ওদের সব বলেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন