ধৃত দুই যুবক। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁর মাঝবয়সী মায়ের সামনেই অশ্লীল কটূক্তি ও অঙ্গভঙ্গি করছিল কয়েক জন মদ্যপ যুবক। কাছাকাছি অনেকেই থাকলেও কেউ-ই প্রতিবাদ করেননি। প্রতিবাদে কলেক পড়ুয়া ছেলে এগিয়ে এলে ওই মদ্যপ যুবকেরা তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহরের সাহেবকাছারি এলাকার ঘটনা। ছেলেকে বাঁচাতে গেলে অভিযুক্ত যুবকেরা ওই মহিলার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ। রাতেই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ওই মহিলা বালুরঘাট থানায় যান। এলাকায় হানা দিয়ে ঘটনায় জড়িত দুই অভিযুক্তকে পুলিশ রাতেই গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম প্রাণেশ সাহা এবং সন্তু সাহা। বালুরঘাটের ডিএসপি উত্তম সাহা বলেন, “শনিবার সকালে ওই মহিলা ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বাকি চার জনের খোঁজ চলছে।”
নির্যাতিতা মহিলার স্বামী পুলিশের এএসআই। বর্তমানে তিনি উত্তর দিনাজপুরের একটি থানায় কর্মরত। স্বামী পুলিশকর্মী পরিচয় দিলেও মদ্যপ যুবকেরা ছেলেকে মারধর থামায়নি বলে ওই মহিলা জানিয়েছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, ঘটনার সময় সাহেবকাছারি মোড়ের রাস্তায় দোকানপাট খোলা ছিল। রাস্তায় লোক জনও ছিলেন। কিন্তু প্রায় ১৫ মিনিট ধরে মা-ছেলের পিছু নিয়ে ইভটিজারদের দলটির এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে কেউ-ই এগিয়ে আসেননি। শনিবার সকালে ঘটনার খবর জানাজানি হতেই শহরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে বালুরঘাট থানায় যান খোদ জেলাশাসক তাপস চৌধুরী। তিনি বলেন, “পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ করতে বলেছি। বাকি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করতে বলা হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, পেশায় ঠিকাদার ধৃত ওই দু’জন বেশ কিছু দিন হল সিপিএম ছেড়ে তৃণমূল করা শুরু করেছেন। যদিও তৃণমূলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর রায় বলেন, “ওঁরা দলের কেউ নন। আমরাও চাই পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিক।” ওই মহিলার ছেলে কলকাতার একটি কলেজে প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। সম্প্রতি তিনি বাড়িতে এসেছেন। এ দিন থানায় বসে ওই মহিলা বলেন, “ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। রাত সোয়া ১০টা নাগাদ সাহেবকাছারি মোড়ে আসতেই কয়েকজন ছেলে কটূক্তি করতে থাকে। সকলেই মদ্যপ অবস্থায় ছিল।” বিষয়টিকে ততটা আমল না দিয়ে তাঁরা হাঁটা থামাননি। কিন্তু অভিযোগ, ওই ছেলেগুলিও পিছু নিয়ে কুৎসিত ইঙ্গিত করে টিজ করতে থাকে। মহিলা আরও বলেন, “ছেলে প্রতিবাদ করলে দলটি চড়াও হয় ছেলেকে ঘুসি, চড় মারে। জুতো দিয়েও পেটাতে থাকে। বাঁচাতে গেলে ওরা আমার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে।”