মধু চা বাগানে ব্যর্থ ত্রিপাক্ষিক বৈঠক

ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে মালিকপক্ষ না আসায় পুজোর আগে মধু চা বাগান চালু নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেল। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারে সহকারী শ্রম আধিকারিকের দফতরে বাগান খোলা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ছিল। এ দিন দুপুরে মালিক পক্ষ না আসায়, বাগান খোলা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। দ্রুত বাগানের বোনাস সমস্যা মেটানোর দাবি করে আসেন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৭
Share:

ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে মালিকপক্ষ না আসায় পুজোর আগে মধু চা বাগান চালু নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেল। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারে সহকারী শ্রম আধিকারিকের দফতরে বাগান খোলা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ছিল। এ দিন দুপুরে মালিক পক্ষ না আসায়, বাগান খোলা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। দ্রুত বাগানের বোনাস সমস্যা মেটানোর দাবি করে আসেন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।

Advertisement

আলিপুরদুয়ারের সহকারী শ্রম আধিকারিক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “মালিকপক্ষ বৈঠকে উপস্থিত না হওয়ার কথা আগে থেকে কিছু জানাননি। শুক্রবার জলপাইগুড়িতে উপ শ্রম কমিশনারের দফতরে বাগান খোলা নিয়ে বৈঠক হবে।” শ্রম দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ এবং ৩১ অগস্ট কলকাতায় চেম্বার অফ কমার্সের সভাকক্ষে চা শ্রমিকদের বোনাস চুক্তি হয়। ২৩ টি রুগ্ন চা বাগানের ক্ষেত্রে ৯ থেকে ১৪ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়া হবে বলে স্থির হয়। সেই তালিকায় ডুয়ার্সের কালচিনি এলাকার মধু চা বাগান রয়েছে। মধু চা বাগানের ক্ষেত্রে শ্রমিকরা ১৪ শতাংশ হারে বোনাস পাবেন বলে ঠিক হলেও মালিক পক্ষ জানায়, পুজোর আগে অর্ধেক বোনাস এবং বাকি অংশ ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তের পরেই গত মঙ্গলবার শ্রমিকরা বাগানের মালিকের বাড়ি ঘেরাও করে প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখান। ওই রাতেই বাগানে সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস টাঙিয়ে দেন বাগান কর্তৃপক্ষ।

বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন বাগানের অন্তত সাড়ে ন’শো শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। ইনটাকের চা শ্রমিক ইউনিয়ন এনইউপিডব্লুর নেতা বাবলু মুখোপাধ্যায় ও তৃণমূল শ্রমিক নেতা অরবিন্দ গোস্বামী অভিযোগ করে বলেন, “একে তো বোনাসের হার কম। তারপরে দু’দফায় পুজোর বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্তে স্বাভাবিক ভাবে ক্ষুব্ধ হন। তবে বাগান বন্ধ থাকলেও যাতে শ্রমিকদের পুজোর আগে বোনাস মেটানো হয় সে দাবি জানিয়েছি।” আরএসপি-র চা শ্রমিক নেতা গোপাল প্রধানের কথায়, “শ্রমিকরা মালিকের বাড়ি ঘেরাও করে ভুল করেছিল। তবে ১৪ শতাংশ বোনাস দেওয়ার চুক্তি না মেনে কেন তা দু’দফায় দেবেন, তা বুঝতে পারছি না।”

Advertisement

অসুস্থততার কারণেই বাগান কর্তৃপক্ষ বৈঠকে আসতে পারেননি বলে চা মালিকদের সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে। চা বাগান মালিক সংগঠন ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব মলয় মৈত্র বলেছেন, “বাগানের মালিক ও ম্যানেজার দু’জনেই অসুস্থ। তাই তাঁরা বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি।” তবে জলপাইগুড়ির বৈঠকে কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিনিধি থাকবে কি না, সে বিষয়ে জানাতে পারেননি মলয়বাবু।

এ দিকে, ফি বছর বাগানে দুর্গাপুজোর ব্যয় বহন করত মালিকপক্ষ। এবার বাগান বন্ধ থাকায় পুজো হবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। পুজোর জন্য মণ্ডপ ও প্রতিমা বায়না দেওয়া থেকে সমস্ত আয়োজন পাকা হয়েছে। এই অবস্থায় শ্রমিকরা নিজেরা চাঁদা তুলে পুজো করবেন বলে ঠিক করেছেন। বাগানের শ্রমিক শক্তি মিনজ ও দিলীপ ওঁরাও বলেছেন, “‘বাগানে দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা পুজো আমরা বন্ধ হতে দেব না বলে ঠিক করেছি। দশ-কুড়ি টাকা যে যেমন পারেন চাঁদা তুলে এবার নিজেরাই পুজো করব। তার আগে বাগান খুললে, এর থেকে ভাল কিছু হতে পারে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন