ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে না পারায় নির্বাচনই হল না আলিপুরদুয়ারের চারটি কলেজে। শুক্রবার আলিপুরদুয়ার কলেজ, আলিপুরদুয়ার মহিলা মহাবিদ্যালয়, বিবেকানন্দ কলেজ ও জয়গাঁ ননী ভট্টাচার্য স্মারক মহাবিদ্যালয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রার্থীদের বিজয়ী বলে ঘোষণা করল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই চারটি কলেজই এখন বিরোধী শূন্য।
বিরোধীদের মনোনয়ন তুলতে না দেওয়ায় এই চারটে কলেজে বিরোধী ছাত্র সংগঠন গুলির প্রতিনিধিরা মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারেনি। ফলে শুক্রবার ছাত্র সংসদের নির্বাচন থাকলেও এই কলেজগুলিতে ভোট হয়নি। পরে আলিপুরদুয়ার কলেজের ৪৬টি, আলিপুরদুয়ার মহিলা মহাবিদ্যালয়ের ১৭টি, বিবেকানন্দ কলেজের ২৯টি ও জয়গাঁ ননী ভট্টাচার্য স্মারক মহাবিদ্যালয়ের ২৫টি আসনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রার্থীদের বিজয়ী বলে ঘোষণা করা হয়।
এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য রজত দেবনাথের অভিযোগ, ১২ ও ১৩ জানুয়ারি মনোনয়ন তোলার দিন থাকলেও তার আগে থেকে টিএমসিপির সমর্থকরা তাদের প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয়। এরই প্রতিবাদে তাঁরা ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন। একই দাবি করেন ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা। তিনি বলেন,“তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সন্ত্রাসের জেরেই আমরা নির্বাচন বয়কট করেছি।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা বাবলু করের দাবি, কলেজ নির্বাচনে বিরোধীদের কেউ আসেনি। ওদের কোনও প্রার্থী নেই, তাই মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি। সন্ত্রাসের অভিযোগ মিথ্যে।
এদিকে শুক্রবার ডুয়ার্সের বীরপাড়া কলেজের যে ১৫ টি আসনে ভোট হয় তার মধ্যে ১২ টি আসনেই জয়ী হয়েছে এবিভিপি প্রার্থীরা। টিএমসিপি পেয়েছে তিনটি আসন। এই কলেজের মোট ৩২ টি আসনের মধ্যে আগেই ১৭ টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় টিএমসিপি। তাই মোট ২০ টি আসনে জয় লাভ করে সংসদ নিজেদের হাতে আসায় যখন বিজয়োৎসব করছে টিএমসিপি, ঠিক সে সময় সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পেলেও এই জয় কে তাঁদের প্রকৃত জয় বলে দাবি করেছে এবিভিপি। তাঁদের দাবি, স্বচ্ছ ভাবে নির্বাচন করা হলে ছাত্র সংসদ তাদের হাতেই আসত।
বিকালে ফলাফল ঘোষণার পর ১২ আসনে এবিভিপি জয়ী হওয়ায় উল্লাসে মেতে পড়েন সমর্থকরা। আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপি নেতা মনোজ টিগ্গার কথায়, “যে ভাবে আমাদের আক্রমণ করা হয়েছে তার মধ্যে আমাদের প্রার্থীরা ভোটে লড়াই করে ১২ টি আসনে জয়ী হওয়ায় এখন আমরা নিশ্চিত যে স্বাভাবিক ভোট করতে দেওয়া হলে আমরাই জয়ী হতাম।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা সৌম্যদীপ নাহার কথায়,“ওদের কোনও রকম বাধা দেওয়া হয়নি। ওঁরা সবকটি আসনে প্রার্থী দিতে সক্ষম হলেও আমরা জয়ী হতাম।”