(বাঁ দিকে) মথুরা চা বাগান এলাকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (ডানদিকে) দিনহাটার সভায়। শনিবার। ছবি: নারায়ণ দে ও হিমাংশুরঞ্জন দেব।
মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য বালুরঘাটে রেলের মাঠ চেয়েও আবেদন করলেও, রেল মন্ত্রকের সম্মতি না মেলায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল। আগামী ১৬ এপ্রিল অর্পিতা ঘোষের সমর্থনে বালুরঘাটে জনসভা করতে আসার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। সেই সভার জন্যই রেলের মাঠ চেয়ে আবেদন করা হয় দলের পক্ষ থেকে। তৃণমূলের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই রেলের মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সভা করতে দেওয়া হল না।
শনিবার রেলের ডিআরএম অরুণ শর্মা বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। মাঠ চেয়ে কোনও আবেদনপত্র আমি পাইনি।” যদিও ডিআরএম দফতরের বিভাগীয় সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মাঠ চেয়ে তৃণমূলের আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন। গত ৯ এপ্রিল বালুরঘাটের টাউন তৃণমূল সভাপতি রেলের মাঠে সভার জন্য সংশ্লিষ্ট উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার বিভাগের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়র এস চন্দার কাছে আবেদন করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি কাটিহারের সদর দফতরেও কর্মীদের মাধ্যমে আবেদন জানানো হয়েছিল। যদিও, গত ১১ এপ্রিল রেলের তরফে টাউন তৃণমূল সভাপতিকে চিঠি (মেমো নম্বর: ডব্লিউ-২১৪-সার্কুলার-এসটিএল-ডব্লিউ-৪) দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, রেলের মাঠে রাজনৈতিক সভা সমাবেশ করার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায়, ওই মাঠ জনসভার কারণে দেওয়া সম্ভব হবে না। সংশ্লিষ্ট সিনিয়র বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ার জানান, রেলের মাঠে রাজনৈতিক সভা সমাবেশ করা যাবে না বলে ২০০৪ সালে রেলবোর্ড সিদ্ধান্ত নেয়। তাঁর কথায়, “সে কারণেই বালুরঘাটের রেলের মাঠে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রচার সভার জন্য অনুমতি দেওয়া যায়নি।”
যদিও রেলের এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেতারা। তাঁরা জানিয়েছেন, গত ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারে বালুরঘাটের ওই রেলের মাঠেই কংগ্রেস-তৃণমূল জোট প্রার্থীর হয়ে প্রচার করতে তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসভা করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুকুল রায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় বালুরঘাটের রেলের মাঠে একাধিক সভা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবানীও এই মাঠে সভা করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
বালুরঘাটের বিধায়ক তথা রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী অভিযোগ করে বলেন, “রাজনৈতিক কারণেই রেলের মাঠ দেওয়া হল না। অথচ এর আগের বছরগুলিতে ওই মাঠেই ভোটের একাধিক জনসভা হয়েছে।” তৃণমূলের টাউন সভাপতি অসিত রায়ের অভিযোগ, “কংগ্রেস নেতাদের নির্দেশেই রেল কর্তৃপক্ষ মাঠ দেন নি।” যদিও, কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নীলাঞ্জন রায় পাল্টা বলেন, “এ সব নিয়ে দলের নেতা মন্ত্রীদের মাথা ঘামানোর সময় এখন নেই। মাঠ নিয়ে রাজনীতি কংগ্রেস করে না। রেলের সরকারি মাঠ ব্যবহার করা রেলের নিজস্ব বিষয়।”