ম্যালের অবসর। রবিন রাইয়ের তোলা ছবি।
সমতলে শীত আসা নিয়ে এখনও চলছে নানা জটিল-জল্পনা। পাহাড়ে কিন্তু উল্টো ছবি। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই এবার শীতের আমেজ দার্জিলিঙে। দিনের বেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির বেশি উঠছে না বেশ কিছুদিন ধরেই। রাতের তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রির আশেপাশে বলে জানা গিয়েছে। এবার পাহাড়ে শীতের আগাম অনুভবে ট্যুর অপারেটরদের মুখে খুশির ঝলক।। নভেম্বর মাস থেকেই শীতের অনুভূতিতে এ বছর তুষারপাতের জল্পনাও শুরু হয়ে গেছে দার্জিলিঙে। আর তাতে রাজ্য তো বটেই, ভিন রাজ্য থেকেও পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন। মেঘ আর কুয়াশা মোড়া ভোরে পাকদন্ডি রাস্তায় দল বেধে হাঁটা, ছবি তোলার হুল্লোড় অথবা বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নামতেই টুপি-শাল মুড়ি দিয়ে, ধোঁয়া ওঠা কফিকাপ হাতে ম্যালে বসে থাকা। সেই ছবিই এখন দেখা যাচ্ছে শৈল শহরে।
দার্জিলিং শহর লাগোয়া টাইগার হিল অথবা ৬১ কিলোমিটার দূরের সান্দাকফুতে প্রতি বছরই অল্প পরিমাণে হলেও তুষারপাত পরিচিত ঘটনা। তবে গত ৬ বছর দার্জিলিং শহর তুষারপাত দেখেনি। এবারে শীতের আগাম অনুভূতি তুষারপাতের আভাস বলেই মনে করছেন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দা সুরজ লামার কথায়, “দীর্ঘদিন ধরে দার্জিলিঙে রয়েছি, কিন্তু সময়ের আগে শীতের অনুভব হয়নি কখনও। প্রতি বছরই ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকে শীত পড়ে। তাই এবার তুষারপাতও হতে পারে বলেই মনে হচ্ছে।”
দার্জিলিং অ্যাসোয়িয়েশন অব ট্র্যাভেল এজেন্টের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ লামা বলেন, “দার্জিলিঙে এবার তুষারপাতের সম্ভাবনায় পর্যটকদের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করছি।” ট্যুর অপারেটরদের কাছে নভেম্বর-ডিসেম্বরে শীতের শুরুর সময়টা ‘অফ সিজন’। এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা। কারণ এই সময়ে পর্যটকদের সংখ্যা অনেকটাই কম থাকে বলে তাঁদের অভিজ্ঞতা। তবে এবছর এখনই পর্যটকদের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে বলে তাঁদের দাবি। প্রদীপবাবু বলেন, “দার্জিলিঙের বিভিন্ন হোটেল এবং রিসর্ট মিলে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বুকিং রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।” নেপাল থেকে আসা পর্যটক মোহন ভান্ডারীর কথায়, “বেশ কয়েকদিন আগে দার্জিলিঙে এসেছি। কাঠমান্ডুর থেকেও দিনের বেলায় এখানে ঠান্ডা বেশি। শীতের আমেজ দিব্যি উপভোগ করছি।’’
উত্তরপূর্ব ভারতের ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন ইস্টার্ন হিমালয়া ট্র্যাভেল এন্ড ট্যুর অপারেটার্স অ্যাসোসিশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যালের কথায়, “বিপুল হারে না হলেও, দার্জিলিঙে এখন বেশ কিছু সংখ্যক পর্যটক রয়েছেন। তুষারপাতের জল্পনায় সেই সংখ্যা বাড়বে।” তবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের জন্য আগাম বুকিং ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সম্রাটবাবু। তিনি বলেন, “এখন যাঁরা দার্জিলিঙে রয়েছেন, তারা শীতের আমেজ চুটিয়ে উপভোগ করছেন বলেই আমাদের জানাচ্ছেন।”