ভুটান সীমান্ত লাগোয়া জয়ন্তীর মহাকাল পর্বতে দর্শনার্থীদের ভিড়। ছবি: নারায়ণ দে।
খাড়া সিঁড়িতে উঠতে বা নামতে বন্ধুর মত হাত বাড়িয়ে টেনে তুলছে কখনও। আবার পাহাড়ের খাদের পাশ থেকে দর্শনার্থীদের সরিয়ে নিচ্ছেন ওঁরা। ওঁরা মানে ভুটানের ফুন্টশিলিংয়ের ভুটান ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। প্রথম বার শিবরাত্রি উপলক্ষে জয়ন্তীর মহাকাল পাহাড়ে দর্শনার্থীদের সাহায্যে করতে এগিয়ে এসেছে ভুটানের এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। প্রথম বার ভুটানের কোন সংগঠন এগিয়ে আসায় খুশি দর্শনার্থী থেকে ভারতের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলি।
মঙ্গলবার শিব রাত্রি উপলক্ষে সোমবার সকাল থেকে কয়েক হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছেন কালচিনি ব্লকের জয়ন্তীর মহাকালে। মহাকাল পাহাড়টি ভুটান সীমান্তের ভেতর পড়লেও শিবারাত্রি উপলক্ষে কালচিনি থানার পুলিশ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দুর্গম মহাকাল পাহাড়ে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা, বিশ্রাম, খাওয়া ও চিকিত্সার ব্যবস্থা করত। এই প্রথম বার ভুটান ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের প্রায় ৬৫ জন সদস্য দর্শনার্থীদের দুর্গম পাহাড়ে উঠতে সাহায্য করছে।
কালচিনি ব্লকের শিব শক্তি সেবা মন্ডলের তরফে দীপক অগ্রবাল জানান, প্রতি বছর প্রায় দেড় থেকে দু’লক্ষ দর্শনার্থী মহাকালে ভিড় জমান। এ বছরেও বিহার অসম সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন। তাদের সংগঠনের তরফে সেখানে বিশ্রাম ও খাওবার ব্যবস্থা করা হয়। এই প্রথম ভুটানের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও মহাকাল পাহাড়ে দর্শনার্থীদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। কালাচিনি থানার ওসি প্রেমা ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, প্রতিদিন কয়েক হাজারর দর্শনার্থী মহাকালে আসছেন। বুধবার পর্যন্ত সেখানে পুজো চলবে। নিরাপত্তা ও দর্শনার্থীদের সাহাজ্যের জন্য পুলিশ মোতায়ান করা হয়েছে।
ভুটান ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের ফুন্টশেলিংয়ের সম্পাদক ছুন্দে দর্জি জানান, কিছু দিন আগে তাদের সংগঠনের তরফে মহাকালে গিয়ে জানতে পারেন, মহাকাল পাহাড়ে পুজো দিতে কয়েক হাজার মানুষ ভিড় জমান। তাই তাঁরা সাহায্যের জন্য রবিবার থেকে মহাকাল পাহাড়ে আছেন। বয়স্ক মানুষদের সাহাজ্যের সঙ্গে ভিড় সামলাচ্ছেন। তাদের ৬৫ জন সদস্য সঙ্গে তারা ভুটানের একজন চিকিত্সকেও নিয়ে এসেছেন। জল ও ফলের রসও বিলি করছেন তাঁরা। দীপক অগ্রবাল বলেন, “মহাকাল পাহাড়কে ঘিরে এলাকায় পর্যটনের বিকাশ ঘটানো সম্ভব। এখানে নদীর উপর ছোট ছোট কাঠের সেতু তৈরি করে দিলে সারা বছর পর্যটকরা সেখানে আসবে। এতে এলাকার আর্থিক বিকাশ হবে। জেলা প্রশাসনের উচিত বিষয়টিতে নজর দেওয়া।”