যাদবপুরের কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিলে পা মিলিয়েছেন শিলিগুড়ির পড়ুয়া ও অন্যরা।
যাদবপুর কাণ্ডে প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পা মেলাল বেঙ্গালুরুর বেসরকারি কলেজও। এ দিন ‘স্টুডেন্টস সলিডারিটি’ নামে একটি সংগঠন বাঘাযতীন পার্ক থেকে প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করেছিল। বিকেল তিনটের সময়ে ওই মিছিল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ সহ শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকার কলেজ পড়ুয়ারা মিছিলের জন্য জড়ো হয়। মিছিল শুরুর আগেই বাঘাযতীন পার্কে আসেন জনজিৎ বাগচী। বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি কলেজের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষার্থী জনজিৎ শিলিগুড়িতে পুজোর ছুটিতে এসেছেন। নিজের শহরে প্রতিবাদ মিছিলের কথা শুনে জনজিৎ তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে পার্কে চলে আসেন। জনজিতের সঙ্গীদের কেউ শিলিগুড়ির বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া।
বিকেল তিনটের কিছু পরে বাঘাযতীন পার্ক থেকে মিছিল শুরু হয়ে কোর্ট মোড়, হাসমি চক, সেবক মোড় হয়ে মহানন্দা সেতুর সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে একটি ছোট সভাও হয়। পরবর্তীতেও মিছিল, অবস্থানের কথা জানায় সলিডারিটির সদস্যরা। এ দিনের মিছিলেও ‘হোক কলরব’, ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ চাই না’ প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। হোক কলরব স্লোগানও শোনা গিয়েছে হিলকার্ট রোডে। মিছিলের সামনে যাদবপুরের পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে ‘তোমাদের মিছিলে আমরাও হাঁটি’ লেখা বড় ব্যানারে ধরা পড়ুয়াদের মুখে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি তোলা হয়। মিছিলের অন্যতম আহ্বায়ক দীপক গিরি বলেন, “অরাজনৈতিক ভাবেই মিছিল হয়েছে। মিছিল যত এগিয়েছে, ভিড় তত বেড়েছে।” বেঙ্গালুরুর পড়ুয়া জনজিতের কথায়, “কোনও দলের সমর্থন না বিরোধিতা নয়, যাদবপুরের ঘটনা ছাত্র সমাজের উপর আক্রমণ। সে কারণেই বন্ধুদের নিয়ে মিছিলে যোগ দিয়েছে।”
প্রতিবাদ হয়েছে জলপাইগুড়িতেও। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ধূপগুড়ি কাণ্ডের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএসও সংগঠনের কর্মী সমর্থক ছাত্রছাত্রীরা মিছিল ও পথ অবরোধ করে জলপাইগুড়িতে। বিকেলের পরে বিভিন্ন পেশার বাসিন্দারাও পৃথক একটি মিছিলে হাঁটেন জলপাইগুড়িতে। মিছিল হয় ধূপগুড়িতেও। ছাত্র জাগরণ নামে অরাজনৈতিক মঞ্চের মিছিলে সামিল হয় পড়ুয়ারা। তিনটি মিছিলেই এ দিন পুলিশের বিরুদ্ধে ধিক্কার শোনা যায়।
এ দিন বেলা ১টা নাগাদ ডিএসও সংগঠনের শতাধিক কর্মী সমর্থক শহরের পোস্ট অফিস মোড় থেকে মিছিল করে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ধূপগুড়ির ঘটনা প্রতিবাদীদের কণ্ঠস্বর রোধ করার ষড়যন্ত্র বলে সংগঠনের অভিযোগ। কদমতলায় মিছিল পৌঁছনোর পরে পথ অবরোধ শুরু হয়। প্রায় আধ ঘণ্টার অবরোধে যানজটে জেরবার হতে হয় বাসিন্দাদের।
ডিএসওর জেলা সম্পাদক সুজয় লোধ বলেন, “রাজ্যে গণতন্ত্র বিপন্ন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ এবং ধূপগুড়ি কাণ্ডে জড়িত প্রত্যেকের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছি।” এদিন বিকেলে আজাদহিন্দ পাঠাগার থেকে বিভিন্ন পেশার কয়েকশো মানুষ মিছিল করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ধূপগুড়ি কাণ্ড ছাড়াও সম্প্রতি আনন্দচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষকে বাড়ির সামনে হেনস্থার ঘটনার প্রতিবাদ জানান। গাঁধী মূর্তির পাদদেশে মিছিল শেষ হয়। ধূপগুড়ি শহরে ছাত্র জাগরণ মঞ্চের মিছিল বের হয় বেলা দু’টো নাগাদ। শতাধিক পড়ুয়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ধূপগুড়ি কাণ্ডের প্রতিবাদে সামিল হয়।