গলা ভেজাতে আখের রসে চুমুক। বুধবার শিলিগুড়িতে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
তাপমাত্রা বেড়ে দশ বছরের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছুঁয়েছিল দু’দিন আগেই। বুধবার সেই রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেল দুই শহরের তাপমাত্রা।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাতিরা ছিল ৩৮.৩ ডিগ্রি। স্বাভাবিকের থেকে যা ৬ ডিগ্রি বেশি। গত সোমবারই জলপাইগুড়ির তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল, যা ২০০৫ সাল থেকে সর্বোচ্চ। জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ি দুই শহরেই তাপপ্রবাহ চলেছে বুধবার। ভোর থেকেই চড়া রোদে কাহিল হতে হয়েছে দুই শহরের বাসিন্দাদের। রাতের দিকে সাধারণত তাপমাত্রা কম হলেও, গত মঙ্গলবার রাতেও শিলিগুড়ি শহরের তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রির বেশি ছিল। এ দিনও আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলাতেই গত দু’সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি নেই। তবে অনান্য শহরের নিরিখে জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ির তাপমাত্রা অনেকটাই বেশি। চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই দুই শহরের তাপমাত্রা ৩৭ এর আশেপাশে ছিল। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বঙ্গোপসাগর এবং রাজস্থান দুই এলাকায় তৈরি নিম্নচাপের জেরে উত্তরবঙ্গ থেকে বর্ষা উধাও হয়ে গিয়েছে। মৌসুমী অক্ষরেখাও উত্তরবঙ্গের থেকে অনেকটা দূরে অবস্থান করেছে। সেই সঙ্গে উত্তরবঙ্গের আকাশে নতুন করে কোনও নিম্নচাপও তৈরি হয়নি। যার জেরেই আকাশে মেঘ এলেও, কোনও নিম্নচাপ না থাকায় বৃষ্টি হতে পারছে না বলে আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘নিম্নচাপ তৈরি না হলে, সমতল এলাকায় বৃষ্টি সম্ভব নয়।’’
এ দিকে, মঙ্গলবারের মতো বুধবারেও শিলিগুড়ি হাসপাতালের বর্হিবিভাগে রোগীদের ভিড় দেখা গিয়েছে। রক্তচাপ, মাথাব্যাথা, দুর্বলতা নিয়ে রোগীরা চিকিৎসককে দেখাতে এসেছেন। বিশেষত মহিলা এবং শিশুদের ভিড় দেখা গিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়েরিয়ার সংক্রমণ নিয়েও অনেক রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ দিন দুপুরে শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে সারা শরীর কাপড়ে ঢেকে বাইক চালাতে দেখা গিয়েছে অনেককে।
অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি শহরের বেশ কিছু রাস্তা কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে জল দিয়ে ভিজিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। গত কয়েকদিনের মতো বুধবারও জলপাইগুড়ি শহরের দিনবাজার, ডিবিসি রোড, মার্চেন্ট রোডের মতো ব্যস্ত এলাকায় দুপুর বেলাতেও তুলনামুলক কম ভিড় দেখা গিয়েছে। সরকারি, বেসরকারি অফিসেও কর্মীসংখ্যা স্বাভাবিকের থেকে কম ছিল। বাসে-ট্রেনেও কম ভিড় দেখা গিয়েছে।