কেন্দ্রের প্রকল্পে থাকবে রাজ্যের নদী

রাজ্যের প্রস্তাব মেনেছে কেন্দ্র, জানালেন রাজীব

উত্তর-পূর্বের নদীগুলির জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের বড় এবং মাঝারি সব নদী-ই থাকছে বলে জানিয়ে দিলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার শিলিগুড়িতে এসে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির বড় নদীগুলির সমস্যা খতিয়ে দেখে পরিকল্পনা গ্রহণ করার কথা জানান কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী উমা ভারতী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৪৭
Share:

উত্তর-পূর্বের নদীগুলির জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের বড় এবং মাঝারি সব নদী-ই থাকছে বলে জানিয়ে দিলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

বুধবার শিলিগুড়িতে এসে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির বড় নদীগুলির সমস্যা খতিয়ে দেখে পরিকল্পনা গ্রহণ করার কথা জানান কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী উমা ভারতী। উত্তর-পূর্ব ভারতের একই এলাকার কয়েকটি নদীকে একই প্রকল্পের আওতায় এনে নাব্যতা ফেরানো, পাড় বাঁধাই এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার কাজ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। শিলিগুড়িতে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী উমা ভারতী জানিয়েছেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের পরিকাঠামোর উন্নয়নের যে পরিকল্পনা কেন্দ্র নিয়েছে, তাতে নদী সংস্কারও রয়েছে।

রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “উত্তর-পূর্বের নদীগুলির জন্য যে প্রকল্পের কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, তাতে রাজ্যের বড় এবং মাঝারি সব নদী-ই থাকছে। রাজ্যের সব প্রস্তাবই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্ন্তভুক্তি করানো সম্ভব হয়েছে।”

Advertisement

এই পরিকল্পনা রূপায়ণে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিরও সম্মতি প্রয়োজন। সেই সম্মতি আদায়ের রাস্তা মসৃণ করতে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী রাজ্য সফরে বেরিয়েছেন বলে সরকারি সূত্রের খবর। ঝাড়খন্ড, বিহারের সফর সেরে গত মঙ্গলবার ফরাক্কা হয়ে শিলিগুড়িতে পৌঁছন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বুধবার সকালে তিনি সিকিমের নামচিতে যান। সিকিমের জলসম্পদ দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক সেরে ফের শিলিগুড়িতে এসে অসমে রওনা দিয়েছেন তিনি। পরপর ৫টি রাজ্য সফরের পরে দিল্লি ফিরে গিয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির সেচমন্ত্রী এবং আধিকারিকদের ডেকে ফের বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে, সেই বৈঠকেই বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। এই পরিকল্পনায় গঙ্গা, কোশী ছাড়াও তিস্তা, রঙ্গিত, মহানন্দার মতো নদী থাকবে বলে জানা গিয়েছে।

এ দিন শিলিগুড়িতে অবশ্য কোনও সরকারি বৈঠক করেননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তবে জলসম্পদ দফতরের স্থানীয় আধিকারিকদের সঙ্গে শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে ঘরোয়া আলোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এ দিন তিনি বলেন, “নদী সংস্কার করে উত্তরপূর্ব ভারতের নানা পরিকাঠামো উন্নয়ন সম্ভব। যে কোনও জনপদের স্বাস্থ্য নির্ভর করে তার এলাকার নদীর উপর। এই এলাকাগুলির নদীগুলিকে কেন্দ্র করে পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। সে কারণেই ঝাড়খন্ড, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, অসমের সঙ্গে আলোচনা করছি এবং করব।”

গত মঙ্গলবার ফরাক্কায় গঙ্গা নদীর নানা সংস্কার পরিকল্পনায় রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অনান্য আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি। এ দিন উমা বলেন, “ফরাক্কা ব্যারেজের কিছু সংস্কার কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সমস্যা শুনেছি। সে নিয়েও পর্যালোচনা বৈঠক হবে। বাংলার সেচমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা হয়েছে।”

রাজনৈতিক ভাবে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি এবং রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও, তা উন্নয়নের কাজে বাঁধা হবে না বলে বিজেপি নেত্রী দাবি করেছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও নিয়মিত টেলিফোনে কথা হয় বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, “বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার নিয়মিত ফোনে কথা হয়। উনি গতকাল ফরাক্কায় আলোচনার জন্য সেচমন্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য যাই হোক, উন্নয়নের কাজে যেন কোনও বাধা না আসে। আমরা সেই নির্দেশ মেনেই পদক্ষেপ করছে।”

শিলিগুড়িতে ফের এসে উত্তরবঙ্গ বিষয়ে বৈঠক করতে পারেন বলে এ দিন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী দাবি করেছেন। শিলিগুড়ির মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানও তিনি পর্যালোচনা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এ দিন সকালে জেলা বিজেপি নেতারা শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে গিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। মহানন্দা সংস্কারের পরিকল্পনা ঘোষণা করতে তাঁরাও আর্জি জানিয়েছেন মন্ত্রীকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন