রটনাকে বলা হচ্ছে ঘটনা, মিছিল করে দাবি অভিষেকের

বিরোধী দল থেকে সংবাদমাধ্যমের একাংশের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার এবং দলের বিরুদ্ধে ‘কুত্‌সা’ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে, শিলিগুড়িতে প্রতিবাদ মিছিল করল তৃণমূল। বাঘা যতীন পার্ক থেকে মহানন্দা সেতু পর্যন্ত মিছিলে নেতৃত্ব দিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দেব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৪১
Share:

শিলিগুড়িতে মিছিলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবও।—নিজস্ব চিত্র।

বিরোধী দল থেকে সংবাদমাধ্যমের একাংশের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার এবং দলের বিরুদ্ধে ‘কুত্‌সা’ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে, শিলিগুড়িতে প্রতিবাদ মিছিল করল তৃণমূল। বাঘা যতীন পার্ক থেকে মহানন্দা সেতু পর্যন্ত মিছিলে নেতৃত্ব দিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দেব।

Advertisement

মিছিল শুরুর আগে বাঘাযতীন পার্কে একটি সভায় ম্যাটাডরে উঠে মাইকে বক্তব্য রাখেন অভিষেক এবং গৌতমবাবু। সংবাদমাধ্যমের একটি অংশও নিয়ম করে কুত্‌সা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করে সাংসদ অভিষেকের দাবি, “এ এক সন্ধিক্ষণ। পান থেকে চুন খসলে, বরফ গলে জল হলে, আকাশ থেকে বাজ পড়লে সবেতেই নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী! মা-মাটি-মানুষের সরকারের কারণেই নাকি সব হচ্ছে! এমন ভাবেই কুত্‌সা চলছে। রটনাকেও ঘটনা হিসেবে দেখানো হচ্ছে।”

নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত সোমবার এসজেডিএ-র দফতর ঘেরাও করেছিল বামেরা। সারদাকাণ্ড সহ এনসেফ্যালাইটিসের মোকাবিলা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে গত মাসের শেষে উত্তরকন্যা অভিযানও করেছে কংগ্রেস। যাদবপুরের আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সমর্থন জানিয়ে ডান-বাম বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বরা শিলিগুড়িতে একসঙ্গে ‘অরাজনৈতিক’ মিছিলে হাঁটেন। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতিও সম্প্রতি শিলিগুড়িতে এসে সভা করেছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, পরপর এই সব বিভিন্ন অভিযোগের রাজনৈতিক জবাব দিতেই এদিনের মিছিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দলের জেলা সভাপতি গৌতমবাবুর অভিযোগ, “সারদা থেকে এসজেডিএ নানা বিষয় নিয়ে অপপ্রচার চলছে। জলপাইগুড়ি থেকে কোচবিহার পর্যন্ত যে উন্নয়ন হচ্ছে, তা স্তব্ধ করে দিতে বিরোধীরা নানা চেষ্টা চালাচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের একাংশও তাদের সঙ্গে কুত্‌সা চালাচ্ছে।”

Advertisement

বিভিন্ন অভিযোগে দলের পাল্টা বক্তব্য কী হবে, তা নিয়ে দলের নেতা কর্মীদের কাছে শীর্ষ নেতৃত্বের বার্তা পৌঁছে দিতেই এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো তথা সাংসদ অভিষেককে মিছিলে চেয়েছিলেন দলের জেলা নেতৃত্ব। অভিষেকের আগে বক্তব্য রাখার সময়ে গৌতমবাবু বলেন, “কুত্‌সা-অপপ্রচারের বিরুদ্ধে দলের মূল দিশা, কর্মসূচি ব্যাখ্যা করবেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।” যদিও, দলের নেতা-কর্মীদের অনেকেরই দাবি, সাংসদ বক্তব্য এতটাই সংক্ষিপ্ত ছিল যে, তাতে পাল্টা জবাবের কোনও ‘দিশা’ সে ভাবে মেলেনি। মিছিল শুরুর আগের সভায় সাংসদ ১৭ মিনিটে বক্তব্য শেষ করেন। তাতে সারদা প্রসঙ্গে দলের পুরোনো ঘোষণা আরও একবার তুলে ধরা এবং যাদবপুর কাণ্ড নিয়ে একটি পোস্টারের প্রসঙ্গ ছাড়া শুধু বিজেপি-সিপিএম এবং সিবিআইয়ের সমালোচনা ছিল।

তবে অভিষেক বলেছেন, ‘কুত্‌সার’ জবাবের উত্তর শিলিগুড়ির পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদের ভোটে দিতে হবে। দলের অনেক নেতার আক্ষেপ, পাল্টা প্রচারে যাদবপুর থেকে সারদা প্রসঙ্গে কী বলতে হবে, তা যুবার সর্বভারতীয় সভাপতির বক্তব্যে এ দিন জানা গেল না। এ দিনের মিছিলে শাসক দলের ছাত্র থেকে অসংগঠিত শ্রমিক সব সংগঠনকেই সমথর্র্কদের নিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ডাবগ্রাম, একতিয়াশাল থেকে জলপাইগুড়ি থেকেও দলের নেতা-কর্মীরা মিছিলে এসেছিলেন। দীর্ঘ মিছিলের কারণে হিলকার্ট রোডে এ দিন বিকেলে যানজট হয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন