লোকশিল্পের থিমে সাজছে পুজো

বাতিল কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। তার চারপাশে কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি নানা রকম রংবাহারি মূর্তি ঘিরে রয়েছে দেবীকে। তার কোনওটা ১৫ ফুট, কোনওটা ২৫ ফুট। ৩০ ফুট লম্বাও রয়েছে কয়েকটি। সাবেকি আমলের কারুকাজ করা তাতে।

Advertisement

সংগ্রাম সিংহ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৯
Share:

বাতিল কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। তার চারপাশে কাগজের মণ্ড দিয়ে তৈরি নানা রকম রংবাহারি মূর্তি ঘিরে রয়েছে দেবীকে। তার কোনওটা ১৫ ফুট, কোনওটা ২৫ ফুট। ৩০ ফুট লম্বাও রয়েছে কয়েকটি। সাবেকি আমলের কারুকাজ করা তাতে। সবই বাংলার হারিয়ে যাওয়া লোকশিল্পের আদলে তৈরি। শিলিগুড়ির গেটবাজারের সেন্ট্রাল কলোনি দুর্গাপুজো কমিটির এ বারের শারদোৎসবের থিম এটিই।

Advertisement

বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের পুরনো অথচ বিখ্যাত এই লোকশিল্পগুলিই মণ্ডপে শিল্পীর হাতে জীবন্ত হয়ে উঠবে পুজোর সাত দিন। এখানকার পুজো চলবে সাতদিন ধরেই। খরচ ও আয়োজনও তাই প্রচুর। তাই চতুর্থীতেই সাধারণ দর্শকদের জন্য পুজো মণ্ডপের দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা।

শিলিগুড়ির গেটবাজারের নিউ জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কলোনির পুজো এবারে বাহান্ন বছরে পড়ল। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে শিলিগুড়ির অন্যতম সেরা পুজো হিসেবে উঠে এসেছে সেন্ট্রাল কলোনির নাম। বাজেটও বেশ বেশিই। সেন্ট্রাল কলোনি পুজো কমিটির সম্পাদক পার্থ দে বলেন, “অর্থলগ্নি সংস্থার উপরে আমাদের পুজো কখনওই নির্ভরশীল ছিল না। তাই মন্দার বাজারে অন্য সমস্ত পুজো কমিটির যখন বাজেটে কোপ পড়েছে, তখন আমরা আমাদের পুজোর বহর আরও বাড়িয়েছি। প্রতিবারই অভিনব কিছু করার চেষ্টা করি। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।”

Advertisement

মণ্ডপ চত্বরের কাছাকাছি গেলেই কানে আসবে বাউল, ভাটিয়ালি, গম্ভীরা বা ভাওয়াইয়ার সুর। দেখা যাবে ছৌ নাচও। উদ্যোক্তাদের আশা, লোকশিল্পীদের সুর ভরিয়ে দেবে মণ্ডপ। মণ্ডপের অন্দরসজ্জা হবে ডোকরা বা পটচিত্র দিয়ে। মণ্ডপসজ্জায় জায়গা পাবে জলপাইগুড়ির কাঠের কাজ, বাঁকুড়ার পুতুল ঘোড়া বা কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুলও। বাদ যাবে না মাটির হাঁড়ি, কলসি, গেলাস কিংবা শীতলপাটির কাজ।

নিউ জলপাইগুড়ি রেলওয়ে ইন্সটিটিউটে প্রায় তিন মাস ধরে ঘাঁটি গেড়েছেন কলকাতার শিল্পীরা। প্রতিমা ও মণ্ডপের সঙ্গে আলোকসজ্জাতেও থাকছে অভিনবত্ব। শিলিগুড়ির শিল্পীরাই মণ্ডপ ও মূর্তির মডেলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সাজানোর দায়িত্বে রয়েছেন। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৪০ ফুট উঁচু তৈরি ওই মণ্ডপ কমপক্ষে দু’কিলোমিটার দূর থেকে দেখা যাবে। চতুর্থীর দিন কোনও চিত্রতারকাকে নিয়ে এসে উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে। চমকের পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাওয়ার তাগিদ তো রয়েছেই।

এর সঙ্গে রয়েছে মাঠের মেলার আয়োজন। এবারও চতুর্থী থেকে দশমী, সাতদিন ধরে চলবে মেলা। মণ্ডপের পরিকল্পনা এমনভাবে করা হচ্ছে, যাতে মণ্ডপে প্রবেশ করলে মেলা হয়েই বাইরে বেরতে হবে। প্লাস্টিক, পলিথিন বর্জন করে পরিবেশ বান্ধব পুজোর উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। এ বারও পুজোর ক’দিন বস্ত্র বিতরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে বলে জানিয়েছেন পুজো আয়োজকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন