লগ্নিকারীকে পিটিয়ে খুন, এজেন্ট অভিযুক্ত

মেয়াদ শেষ হওয়া সঞ্চয়ের টাকা ফেরত চাওয়ায় এক আমানতকারীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্টের বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুরে মালদহের কালিয়াচকের ভীমটোলা গ্রামে দীপক মণ্ডল (৩৪) নামে ওই আমানতকারীকে লগ্নি সংস্থার ওই এজেন্ট মারধর করেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

পীযূষ সাহা

কালিয়াচক শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৩১
Share:

মেয়াদ শেষ হওয়া সঞ্চয়ের টাকা ফেরত চাওয়ায় এক আমানতকারীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্টের বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুরে মালদহের কালিয়াচকের ভীমটোলা গ্রামে দীপক মণ্ডল (৩৪) নামে ওই আমানতকারীকে লগ্নি সংস্থার ওই এজেন্ট মারধর করেন বলে অভিযোগ। জখম দীপকবাবুকে প্রথমে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে ‘রেফার’ করে দেওয়ায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এ দিন সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

লগ্নি করা টাকার মেয়াদ শেষ হওয়া নিয়েই যে ঘটনার সূত্রপাত, তা অবশ্য জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় মানতে চাননি। তাঁর দাবি, গণ্ডগোল বাঁধে টাকা পয়সার ভাগ নিয়েই। প্রসূনবাবুর কথায়, “নিহত এবং অভিযুক্ত দু’জনেই একই বেসরকারি সংস্থার এজেন্ট। টাকা পয়সার ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে বুধবার দুপুরে দু’জনের মধ্যে মারপিট হয়েছিল। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে দু’তরফের মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তও চলছে।”

দীপকবাবুর পরিবার সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, তিনি তিন বছরের জন্য ১৫ হাজার টাকা পড়শি ওই এজেন্টের মাধ্যমে একটি বেসরকারি লগ্নি সংস্থায় জমা রাখেন। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ায় পরে তিনি টাকা ফেরত পাচ্ছিলেন না। বেশ কয়েকবার ওই এজেন্টের বাড়িতে ঘোরাঘুরিও করেন তিনি। বুধবার দুপুরেও তিনি সেখানে গিয়েছিলেন বলে তাঁর পরিবারের দাবি। সেখানেই তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

দীপকবাবুর মৃত্যুর খবর চাউর হতেই অভিযুক্ত ওই এজেন্ট ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে গিয়েছেন বলে পুলিশের দাবি। তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই এজেন্টের এক আত্মীয়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্য দিকে, বুধবারই অভিযুক্ত এজেন্টও পাল্টা মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন দীপকবাবুর বিরুদ্ধে। সে অভিযোগের ভিত্তিতে নিহতের এক দাদা এবং ৩ ভাইকেও পুলিশ ধরেছে। ভীমটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের মাহাসুদা বিবি বলেন, “জমানো টাকা চাইতে গেলে আমানতকারীকে এক এজেন্ট পিটিয়ে মেরেছে বলেই শুনেছি।” বিজেপি-র পঞ্চায়েত সদস্য অর্চনা মণ্ডলের বক্তব্য, “নিহত দীপকবাবু এজেন্ট নন। জমানো টাকা চাইতে গেলে ওই এজেন্ট ও তাঁর পরিবারের লোকেরা আমানতকারী দীপককে পিটিয়ে মেরেছে।”

দুপুরে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দীপকবাবুর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বন্দনাদেবী দুই শিশুকন্যাকে বুকে আঁকড়ে কেঁদে চলেছেন। বন্দনাদেবীর অভিযোগ, “দিনমজুরি করে আমার স্বামী তিন বছরে ১৫ হাজার টাকা জমিয়েছিল। ওই এজেন্ট বলেছিল পাঁচ বছর পরে ৩০ হাজার টাকা ফেরত পাবে। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে টাকা দেননি।” দীপকবাবুর মা শোভাদেবীর অভিযোগ, “টাকা দেওয়ার নাম করে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ওই এজেন্ট ও তাঁর ভাইয়েরা ছেলেকে লাঠি, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।” বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, মারধরের খবর পেয়ে দীপকবাবুর দাদা এবং ভাইয়েরাও ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। দাবি, উল্টে তাঁদের নামে তখনই পাল্টা অভিযোগ করে অভিযুক্তের পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন