বেহাল উদ্যানের হাল ফেরাতে উদ্যোগী প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র।
শীতের মরসুমের আগেই রসিক বিল কে আরও আকর্শনীয় করে তুলতে উদ্যোগী হল কোচবিহার জেলা পরিষদ। এরজন্য রসিকবিল পর্যটন কেন্দ্র চত্বরের বেহাল শিশু উদ্যানটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত রসিকবিলের প্রায় দু’বিঘা জমি জুড়ে থাকা এই শিশু উদ্যানের সীমানা প্রাচীর নতুন করে তৈরির কাজের সূচনা করেছেন কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া। তিনি বলেন, পর্যটকদের কাছে রসিকবিলকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলার যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তার প্রথম ধাপ হিসাবে সেখানকার বেহাল শিশু উদ্যানটিকে নতুন ভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। সবমিলিয়ে ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক দশকেরও বেশি সময় আগে কোচবিহারের রসিকবিল পর্যটন কেন্দ্র সাজিয়ে তুলতে একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তৈরি হয় শিশু উদ্যান, অ্যাকোয়ারিয়াম ভবন, সংগ্রহশালা, ও অতিথি নিবাস। ২০০৮ সাল থেকে রসিকবিলের ওই সব এলাকার মালিকানা নিয়ে তৃণমূলের দখলে থাকা তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে বামেদের দখলে থাকা কোচবিহার জেলা পরিষদের বিরোধে জটিলতা তৈরি হয়। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর ওই পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে সঙ্গে জেলা পরিষদও দখল করে তৃণমূল। তারপরেই নতুন করে রসিকবিল পর্যটন কেন্দ্রকে সাজিয়ে তোলার ব্যাপারে দুই তরফে পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হয়।
তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতির তরফে সাত লক্ষ টাকা খরচ করে রসিক বিলের অতিথি নিবাস সংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে এপ্রিল মাসে। কিন্তু আর্থিক কারণে শিশু উদ্যানের হাল ফেরানো তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি বলে জানা যায়।
এদিকে রসিকবিল চত্বরে আগাছায় ঢেকে যাওয়া ওই শিশু উদ্যানের ভেঙে পড়া দেওয়াল টপকে সহজেই অসামাজিক কাজের আসর বসাতে একটি চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ ওঠায় চিন্তা বাড়ে তাঁদের। অন্যদিকে শিশু উদ্যানে খেলার পরিবেশ না থাকায় কচিকাঁচাদের নিয়ে এসে ক্ষোভের কথা জানান পর্যটকরাও। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেই পঞ্চায়েত সমিতির তরফে বেহাল শিশু উদ্যানের হাল ফেরানর বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানান হয়। তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি স্বপন সাহা বলেন,“দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত হয়ে থাকায় ওই শিশু উদ্যানে নানা অসামাজিক কাজের অভিযোগ আমরাও পাচ্ছিলাম। কিন্তু আর্থিক সমস্যায় কাজ করা যাচ্ছিল না। বিষয়টি জেলা পরিষদের নজরে আনতেই ওই আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে বন্ধ অ্যাকোয়ারিয়াম, সংগ্রহশালা, ও জলাভূমি পরিচিতি কেন্দ্রের মত প্রকল্পগুলি ফের চালুর চেষ্টা হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, উদ্বোধনের সময় ওই শিশু উদ্যানে দোলনা, স্লিপ- সহ ছোটোদের রকমারি খেলনার সামগ্রী বসানো হয়েছিল। সেসবই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া জানান, খেলনা সরঞ্জামের জন্যও প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়েছে।