আদিবাসী মহিলা শ্রমিককে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল বাগানের কারখানার সহকারী ম্যানেজারকে। রবিবার ডুয়ার্সের মালবাজার থানার নিদাম চা বাগানে এই ঘটনাটি ঘটে। বাগানের ফ্যাক্টরির কাজে নিযুক্ত ২৭ বছরের এক মহিলা শ্রমিকের লিখিত অভিযোগ পেয়ে সহকারি ম্যানেজার মলয় চক্রবর্তীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। গত শনিবার রাতেই অভিযোগকারী তাঁর স্বামী ও বাগানের সহকর্মীদের কাছে সহকারী ম্যানেজারের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি জানান। মলয়বাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ ঘিরে রাত ন’টার পর থেকে বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। শ্রমিকেরা চড়াও হয়ে মলয়বাবুকে মারধর এবং তার ঘরে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। রাতেই পুলিশ গিয়ে মলয়বাবুকে বাগান থেকে বের করে নিয়ে আসে।
এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মলয়বাবুর স্ত্রী সঙ্ঘশ্রী পাল চক্রবর্তী। পুরো ঘটনা সাজানো বলে তিনি দাবি করেন। বাগানের কয়েকজন শ্রমিকের মদতে তাঁদের কোয়াটার্সে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। মালবাজার থানায় পাল্টা অভিযোগও জমা দেন। তিনি বলেন, “আমার স্বামীর ওপর মিথ্যা অভিযোগ এনে উল্টে আমাদের বাড়িতেই শ্রমিকেরা চড়াও হন। আমাকে এবং ওকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহও করা হয়। আমার স্বামী দীর্ঘ দিন ধরে নিদাম চা বাগানে কর্মরত থাকলেও এ ধরনের অভিযোগ অতীতে কখনও হয়নি।”
বাগানের ম্যানেজার মনোজ রায় বলেন, “আমরাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। পাশাপাশি পুলিশের তদন্তেও পূর্ণ সহয়োগিতা করব।” মালবাজারের এসডিপিও নিমা ভুটিয়া জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৩৫৪ ধারায় মামলা করা হয়েছে। বাগানের সার্বিক পরিস্থিতির ওপরেও পুলিশ নজর রাখছে। গত বছর ৯-২০ নভেম্বর শ্রমিক-মালিক অসন্তোষে নিদাম চা বাগান বন্ধ ছিল। এবারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে ফের শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের অবনতি না হয় সে দিকেও মালিক পক্ষ নজর রাখছেন জানা গিয়েছে। এ দিন সকালে মহিলা চা শ্রমিক থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ মলয় চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে। অভিযোগকারী জানান, ২ জুন এবং ৫ জুন ফ্যাক্টরিতে কাজে গেলে মলয়বাবু তাঁকে ফোন এবং টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক করার কুপ্রস্তাব দেন। নানা রকম ভাবে তাঁকে উত্ত্যক্তও করতেন বলে অভিযোগ। ওই মহিলা বলেন, “এপ্রিল মাস থেকে কাজে যোগ দিয়েছি। মলয়বাবু যে কুপ্রস্তাব দেবেন তা কল্পনাও করতে পারিনি।”