শিলিগুড়িতে ছাত্রী আত্মঘাতী, পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ

অসম্মানের আশঙ্কায় দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী আত্মহত্যা করার ২৪ ঘণ্টা পরেও মূল অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারায় ক্ষোভ দানা বাঁধছে শিলিগুড়িতে। এক সহপাঠী সম্প্রতি ওই ছাত্রীকে ভয় দেখিয়েছিল, মোবাইল ও ইন্টারনেটে তার অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এরপর থেকেই বিমর্ষ থাকত সে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫১
Share:

অসম্মানের আশঙ্কায় দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী আত্মহত্যা করার ২৪ ঘণ্টা পরেও মূল অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারায় ক্ষোভ দানা বাঁধছে শিলিগুড়িতে। এক সহপাঠী সম্প্রতি ওই ছাত্রীকে ভয় দেখিয়েছিল, মোবাইল ও ইন্টারনেটে তার অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এরপর থেকেই বিমর্ষ থাকত সে। মঙ্গলবার রাতে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বুধবার সে মারা যায়। সেই রাতে অভিযুক্ত যুবককে এলাকাতেই দেখা গিয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। কিন্তু তবু পুলিশ কেন তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি সেই প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ।

Advertisement

ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ বিষয়টিকে লঘু করে দেখাতে চাইছে। বুধবার সকালেই ছাত্রীটির বাড়ির লোকজন এনজেপি ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তকে ধরতে রাতে চেষ্টা করেনি বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে এলাকা তেতে উঠলে পুলিশ আসরে নামতে বাধ্য হয়। কিন্তু ততক্ষণে অভিযুক্ত এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।

এই ঘটনার পরে মৃতার বাড়ির লোকজন ও পড়শিদের অনেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। শিলিগুড়িতে ৫ জন এসিপি, ২ জন এডিসিপি, ২ জন ডিসি, একজন সিপি রয়েছেন। তা হলে কেন কোনও পদস্থ অফিসার মৃতার বাড়িতে যাননি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শুধু তা-ই নয়, স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, এনজেপি ফাঁড়ির পুলিশ ভ্যান এলাকায় গিয়ে কেন মৃতা ও অভিযুক্তের সম্পর্কে কোনও তথ্য জানতে চাননি? বাসিন্দারা অনেকেই জানান, অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে অতীতেও একাধিক কিশোরী, তরুণীকে উত্যক্ত করার নালিশ উঠেছে। তাঁদের অভিযোগ, প্রেমের টোপ দিয়ে ঘনিষ্ঠতার পরে মোবাইলে ছবি তুলে ভয় দেখিয়ে অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করার চেষ্টা করত ওই যুবক। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন অবশ্য দাবি করেছেন, তদন্তে গাফিলতি হয়নি। তিনি বলেন, “অভিযোগ পেয়েই মামলা রুজু হয়েছে। ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতারে জন্য তল্লাশি চলছে। সে শীঘ্রই ধরা পড়বে বলে আশা করছি।”

Advertisement

ওই ছাত্রী ও অভিযুক্তের বাড়ি একই পাড়ায়। দু’জনের ঘনিষ্ঠতাও ছিল। বাড়ির লোকজন জানান, সম্প্রতি ওই ছাত্রী অবশ্য ওই যুবককে এড়িয়ে চলতে শুরু করেছিল। ওই সহপাঠীর ব্যাপারে বাড়িতেও জানিয়েছিলেন ছাত্রীটি। ওই ছাত্রীর বাবা পেশায় কাঠমিস্ত্রি। তিনি বলেন, “আমার মেয়ে সহপাঠী হিসেবে ওই যুবকের সঙ্গে মিশত। ইদানীং ওই যুবককে এড়িয়ে চলত। ছেলেটি ক্ষেপে গিয়ে হুমকি দিত।” তিনি জানান, তাঁর সামনেই ওই যুবক তাঁর মেয়েকে ধমকে ‘দেখে নেব’ বলেছিল। তিনি জানান, সেই সময়েই মেয়ে তাঁকে বলেছিল, ওই যুবক তার মোবাইলে কিছু ছবি তুলে রেখেছে, যা থেকে আপত্তিকর ছবি তৈরি করে ইন্টারনেটে ছড়ানোর ভয় দেখাচ্ছে।

যুবককে দ্রুত গ্রেফতার না করলে তাঁরা আদালতে যাবেন বলে জানান দার্জিলিং জেলা আইনি পরিষেবা সমিতির সম্পাদক অমিত সরকার। তিনি বলেন, “শুক্রবার মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের আইনি সহায়তার বন্দোবস্ত করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন