সরস্বতী পুজোর মণ্ডপে ভিড় শিলিগুড়িতে
সরস্বতী পুজোয় বাসন্তী রঙের শাড়ি।
ভ্যালেন্টাইন’স ডে-তে সমুদ্রনীল রঙের জিন্স। আর কুর্তি।
সরস্বতী পুজোয় ফুল তোলা, অঞ্জলি দেওয়া, সেই ছবি হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে দেওয়া। বিকেলে কোথাও বেড়িয়ে আসা।
ভ্যালেন্টাইন’স ডে-তে পাড়ার পাটই নেই। সকাল থেকেই যে যেখানে থাকেন, তার কাছেপিঠে ঘুরতে যাওয়া। কোথাও না গেলে কোনও বন্ধুর বাড়িতে জমিয়ে আড্ডা।
এ বারে শুধু সকালে দধিকর্মাটা মাস্ট। সরস্বতী পুজোর পরের দিনটাই যে প্রেম দিবস।
তিস্তা-মহানন্দা পাড়ের শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি শহর হোক অথবা কুলিক-আত্রেয়ীর পাড়ের রায়গঞ্জ বা বালুরঘাট, মালদহ থেকে কোচবিহারের সব শহর-জনপদ দু’দিন প্রেম-উদ্যাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে নিজেদের মতো।
শিলিগুড়ির জেন ওয়াইয়ের একাংশ দাবি করলেন, এ বারের বসন্তে সাফারি পার্ক সেরা উপহার। কাচের বড় জানলা লাগানো শব্দহীন বাসে চেপে জঙ্গলে ঘোরার সময়ে নিজেদের ‘নিজস্বী’ তুলে তার ব্যাকড্রপে হরিণ-সম্বরদের দৌড়ের ছবিও উঠে যেতে পারে। জঙ্গল ঘেরা সাফারি পার্কের দিগন্তে পাহাড়ের রেখাও দেখা যায়।
সেখানে প্রিয়জন বা প্রিয়বন্ধুর সঙ্গে আড্ডায় অন্তত কোনও ব্যাখাত ঘটবে না বলেই দাবি করলেন তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া। জানালেন, আজ সরস্বতী পুজোর দিন বিশেষ বন্ধুকে নিয়ে সাফারি পার্কে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, এবং ভ্যালেন্টাইন’স ডে-র দিনে সেবক রোডের একটি মলে চুটিয়ে আড্ডা এবং সন্ধ্যের শোতে সিনেমা, ডিনার দিয়ে দিন শেষ। শিলিগুড়ি শহরে সাফারি পার্ক-সূর্যসেন পার্কের মতো একাধিক শপিং মল, চা-কফি পার্লার এবং রেস্তোরাও প্রেম উদযাপনের গন্তব্য।
তাই সরস্বতী পুজোর জন্য যেমন শহরের স্কুল কলেজগুলিতে এ দিন বিকেল থেকেই মণ্ডপ প্রস্তুতি-আড্ডা দেখা গেল, তেমনিই ভ্যালেন্টাইন ডের প্রস্তুতিতে শপিং মলগুলিতে লাল-গোলাপি হাজার রঙের হৃদয় আকৃতির বেলুন, আলোর মালায় সেজে উঠেছে।
জলপাইগুড়ির প্রথম বর্ষের পড়ুয়া অর্কমিত্র দত্ত জানালেন, এ বছরই ওঁর প্রথম ভ্যালেন্টাইন। তায় সরস্বতী পুজো আর ভ্যালেন্টাইন পরপর দু’দিন। এক নিশ্বাসে বলল, ‘‘দুপুরের দিকটা বাঁধে নির্জন থাকে সরস্বতী পুজোর দিন ওই সময়টায় জুবলি পার্কে যাব।’’
সদ্য কলেজ পাশ করা ঋতুশ্রী চক্রবর্তী জানান, সরস্বতী পুজোর দিন কলেজেই আড্ডা।
জলপাইগুড়ি শহরের প্রেমের ঠিকানা বলতে কিন্তু তিস্তা-করলার দুই বাঁধ পরিচিত। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নানা রেস্তোরাঁ, শপিং মল তৈরি হয়েছে, তবে এই শহরের জেন ওয়াইদেরও প্রবীণদের পথে বাঁধ-জুবলি পার্কের রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায়।
তিস্তা বা করলার বাঁধের পাশাপাশি হেঁটে না গেলে জলপাইগুড়িতে আবার প্রেম কী? দাবি করলেন কলেজ শিক্ষক দেবাশিস বিশ্বাস। কেউ যাবেন জলদাপাড়ার জঙ্গলেও।