স্ট্রংরুম ঘিরে কড়া সতর্কতা কোচবিহারে

ভোট মেটার পরেও গণনার আগে পর্যন্ত সতর্ক প্রশাসন। কোচবিহারে স্ট্রংরুম চত্বরে সে কারণে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। লিখিত অনুমতি ছাড়া স্ট্রংরুম চত্বরে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। আগামীকাল, মঙ্গলবার কোচবিহারের চার পুরসভার ভোট গণনা। শনিবার ভোটের পরেই ইভিএম মেশিনগুলি নিয়ে যাওয়া হয় স্ট্রংরুমে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৫ ০২:০৭
Share:

ভোট মেটার পরেও গণনার আগে পর্যন্ত সতর্ক প্রশাসন। কোচবিহারে স্ট্রংরুম চত্বরে সে কারণে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। লিখিত অনুমতি ছাড়া স্ট্রংরুম চত্বরে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন।

Advertisement

আগামীকাল, মঙ্গলবার কোচবিহারের চার পুরসভার ভোট গণনা। শনিবার ভোটের পরেই ইভিএম মেশিনগুলি নিয়ে যাওয়া হয় স্ট্রংরুমে। সেখানকার নিরাপত্তায় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। স্ট্রংরুমের দরজা সিল করার সঙ্গেই চারদিক পুলিশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। কোচবিহারে ভোট প্রক্রিয়া শুরু হতেই সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠতে শুরু করে। শাসক তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে ভোটে প্রশাসনকে ব্যবহারের মতো হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি তোলপাড় হয়। প্রশাসনকে কী ভাবে ব্যবহার করা হবে তা নিয়ে আশঙ্কায় পড়েন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এই অবস্থায় ভোটে নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক ছিল প্রশাসন। ইভিএম মেশিনের নিরাপত্তা নিয়েও যাতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি কোনও অভিযোগ তুলতে না পারে সে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

কোচবিহারের জেলাশাসক পি ঊল্গানাথন বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে আমরা চার পুরসভার স্ট্রংরুমে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়েছে। কেউ অশান্তি করার চেষ্টা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কোচবিহার সদর মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা বলেন, “স্ট্রংরুম ঘিরে রয়েছে সশস্ত্র পুলিশ। কমিশনের অনুমতি ছাড়া কাউকে ওই চত্বরে যাওয়ার উপরে নিষেধ রয়েছে। এ ছাড়া স্ট্রংরুম সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সামনে সিল করা হয়।” বস্তুত, কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে ভোট শতাংশের হার নিয়ে নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করে। সেই ধরনের কোনও অভিযোগ যাতে কোচবিহারের ক্ষেত্রে না ওঠে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই অতিরিক্ত সতর্কতার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।

Advertisement

কোচবিহার সদর, দিনহাটা, মাথাভাঙা এবং তুফানগঞ্জ-পুরসভাতেই শাসক দল তৃণমূলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়েছেন বামেরা। পিছিয়ে ছিল না বিজেপিও। এর পরেও বিভিন্ন বুথে সন্ত্রাসের একাধিক অভিযোগ ওঠে। তুফানগঞ্জের বাম নেতা সুভাষ ভাওয়ালের অভিযোগ, ওই পুরসভায় বাম মনোভাবাপন্ন ভোটারদের অনেককেই ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। এই অবস্থায় ইভিএম মেশিনের নিরাপত্তায় প্রশাসন আরও কড়া মনোভাব নেয়। কোচবিহারে নৃপেন্দ্রনারায়ণ হাইস্কুলে স্ট্রংরুম করা হয়েছে। তুফানগঞ্জে ট্রেজারি বিল্ডিং, দিনহাটায় ট্রেজারি বিল্ডিং এবং মাথাভাঙায় ট্রেজারি বিল্ডিংয়ে স্ট্রংরুম করা হয়েছে। স্ট্রংরুমের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকায় আশ্বস্ত বিরোধী দলগুলি।

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মন বলেন, “তৃণমূল সভাপতি যেভাবে প্রশাসনকে ভোটে ব্যবহারের হুমকি দিয়েছিলেন তা নিয়ে এখনও আতঙ্ক রয়েছে সবার মধ্যে। আপাতদৃষ্টিতে প্রশাসন ইভিএমের নিরাপত্তায় কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে। এটা শেষ সময় পর্জন্ত থাকবে বলেই আমাদের ধারণা।” বাম নেতা তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ একধাপ এগিয়ে প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ভোটে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েছে প্রশাসন। স্ট্রংরুম নিরাপত্তায় তাঁরা কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন। এভাবেই পুলিশ-প্রশাসন চলবে বলে আশা করছি।” তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, সন্ত্রাসের পরিবেশ কখনও কোচবিহারে ছিল না। সব বিরোধীদের তৈরি করা। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষের ভোট ইভিএম বন্দি হয়েছে। মানুষের আমাদের সঙ্গে আছেন। জয় আমাদেরই হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন