স্টেশনে যাতায়াতে নিত্য দুর্ভোগে যাত্রীরা

যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য দুটি প্ল্যাটফর্মের চারটি শৌচাগার বেহাল দীর্ঘ দিন ধরে। নলবাহিত পরিশ্রুত পানীয় জলের পরিকাঠামোও ভেঙে পড়েছে। একটি প্ল্যাটফর্মে দুটি নলকূপ থাকলেও সেগুলি নিয়ে নোংরা জল বের হওয়ায় তা খাওয়ার অযোগ্য। নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় দু’টি প্ল্যাটফর্মের যত্রতত্র পড়ে থাকা আবর্জনার দুর্গন্ধে যাত্রীদের কার্যত নাক বন্ধ করে চলাফেরা করতে হয়। রেল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জেরে প্রায় গত দু’মাস ধরে এভাবেই বেহাল হয়ে পড়েছে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ স্টেশনের যাত্রী পরিষেবা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪০
Share:

যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য দুটি প্ল্যাটফর্মের চারটি শৌচাগার বেহাল দীর্ঘ দিন ধরে। নলবাহিত পরিশ্রুত পানীয় জলের পরিকাঠামোও ভেঙে পড়েছে। একটি প্ল্যাটফর্মে দুটি নলকূপ থাকলেও সেগুলি নিয়ে নোংরা জল বের হওয়ায় তা খাওয়ার অযোগ্য। নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় দু’টি প্ল্যাটফর্মের যত্রতত্র পড়ে থাকা আবর্জনার দুর্গন্ধে যাত্রীদের কার্যত নাক বন্ধ করে চলাফেরা করতে হয়। রেল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জেরে প্রায় গত দু’মাস ধরে এভাবেই বেহাল হয়ে পড়েছে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ স্টেশনের যাত্রী পরিষেবা।

Advertisement

নিত্যযাত্রীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে সম্প্রতি উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএমকে ফোন করে অবিলম্বে স্টেশনের যাত্রী পরিষেবা উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেনয় কালিয়াগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায় ও কালিয়াগঞ্জ পুরসভার কংগ্রেসের বিদায়ী চেয়ারম্যান অরুণ দে সরকার। অবিলম্বে সমস্যার সমাধান না হলে কংগ্রেস ও নিত্যযাত্রীদের সংগঠনের তরফে পৃথকভাবে আন্দোলনে নামা হবে বলে জানা গিয়েছে। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম অরুণকুমার শর্মা বলেন, “কালিয়াগঞ্জ স্টেশন-সহ ডিভিশনের অন্তর্গত বিভিন্ন স্টেশনের যাত্রী পরিষেবা উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই সেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। তাঁর মতে, যাত্রীদের একাংশের অপব্যবহারের জেরেই বিভিন্ন স্টেশনের যাত্রী পরিষেবা বেহাল হয়ে পড়ে।”

কালিয়াগঞ্জ স্টেশন হয়ে প্যাসেঞ্জার ও এক্সপ্রেস মিলিয়ে প্রতিদিন ছ’টি ট্রেন যাতায়াত করে। তারমধ্যে তিনটি রাধিকাপুর-কাটিহার প্যাসেঞ্জার ট্রেন, একটি রাধিকাপুর-নিউ জলপাইগুড়ি ডিএমইউ প্যাসেঞ্জার ট্রেন, একটি রাধিকাপুর-কলকাতাগামী রাধিকাপুর এক্সপ্রেস ট্রেন ও একটি রাধিকাপুর দিল্লিগামী আনন্দবিহার এক্সপ্রেস ট্রেন। প্রতিদিন কয়েকশো যাত্রী কালিয়াগঞ্জ স্টেশন থেকে বিভিন্ন ট্রেনে ওঠানামা করেন।

Advertisement

স্টেশনের দু’টি প্ল্যাটফর্মে পুরুষ ও মহিলা যাত্রীদের জন্য দুটি করে মোট চারটি শৌচাগার রয়েছে। এছাড়াও যাত্রীদের পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য দুটি প্লাটফর্মে নলবাহিত ১৬টি ট্যাপকল রয়েছে। পাশাপাশি দুটি প্লাটফর্মে একটি করে নলকূপও রয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, এক নম্বর প্লাটফর্মের দু’টি শৌচাগারে জল সরবরাহের পরিকাঠামো বেহাল হয়ে পড়ায় আবর্জনার স্তুপে ভরে গিয়েছে। ফলে সেগুলি ব্যবহারের অযোগ্য। দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মের দু’টি শৌচাগারের দরজা ভেঙে যাওয়ায় যাত্রীরা সেগুলি ব্যবহার করতে পারেন না। নলবাহিত পরিশ্রুত পানীয় জলের ট্যাপকলগুলি থেকে জল বার হয় না। দু’টি নলকূপ থেকে নোংরা জল বার হওয়ায় যাত্রীরা তা খেতে পারেন না। শৌচাগারগুলিও বেহাল হয়ে পড়েছে। শৌচাগারের অভাবে মহিলা যাত্রীরা সমস্যায় পড়েন। দুটি প্লাটফর্ম চত্বর নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় প্রসাব ও আবর্জনার দুর্গন্ধে যাত্রীরা নাক বন্ধ করে চলাফেরা করতে বাধ্য হন।

কালিয়াগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথবাবু ও পুরসভার কংগ্রেসের বিদায়ী চেয়ারম্যান অরুণবাবু জানান, গত একমাস ধরে প্রতিদিনই নিত্য যাত্রীদের একাংশ তাঁদের কাছে স্টেশনের যাত্রী পরিষেবা বেহাল হয়ে পড়ার অভিযোগ করছেন। তাঁদের কথায়, “ডিআরএমকে সমস্যার কথা জানিয়ে অবিলম্বে যাত্রী পরিষেবার উন্নয়নের দাবি জানিয়েছি। দ্রুত সমস্যা না মিটলে যাত্রীদের স্বার্থে দলের তরফে আন্দোলনে নামা ছাড়া কোনও উপায় নেই।”

জেলা রেলযাত্রী সমিতির সম্পাদক তথা রেলওয়ে কনসাল্টেটিভ কমিটির সদস্য তপনকুমার চৌধুরীর দাবি, গত ১৫ সেপ্টেম্বর তিনি উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ স্টেশনে যাত্রীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “কালীপুজোর আগে দুটি স্টেশনের যাত্রী পরিষেবার উন্নয়নের কাজ শেষ না হলে নিত্যযাত্রীদের নিয়ে রেল অবরোধ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন