রয়্যাল-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি জোরালো হচ্ছে কোচবিহারে। আজ বৃহস্পতিবার অর্থলগ্নি সংস্থা রয়্যাল ইন্টার ন্যাশনালের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চেয়ে জেলাশাসককে চিঠি দেবে কোচবিহার জেলা বিজেপি। ইতিমধ্যে আমানতকারীর একাংশও এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে সরব হন। এক মাসে পুলিশ-প্রশাসন টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা না করলে তদন্ত চেয়ে এ দিন সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হওয়ার হুমকি দেন অর্থলগ্নি সংস্থার আমানতকারীদের সংগঠন কোচবিহার রয়্যাল ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং আমানতকারী বাঁচাও সমিতি।
সমিতির অভিযোগ, মোটা টাকার প্রলোভন দিয়ে সংস্থাটি কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২০০ কোটির বেশি টাকা তোলে। গত বছরের এপ্রিল থেকে আমানতকারীদের টাকা ফেরানো বন্ধ করে সংস্থাটি। এতে লক্ষাধিক আমানতকারী বিপাকে পড়ে গিয়েছেন। এ নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনে অভিযোগ করা হলেও সংস্থার শীর্ষ কর্তারা কেউ গ্রেফতার হননি।
বিজেপি-র জেলা সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে বলেছেন, “পুলিশ-প্রশাসন তত্পর হলে রয়্যালের শীর্ষ কর্তারা নির্বিঘ্নে গা ঢাকা দিতে পারতেন না। পুরো ঘটনা প্রকাশ্যে আসা দরকার। সিবিআই তদন্ত ছাড়া এটা সম্ভব নয়। তাই জেলাশাসকের কাছে আজ, বৃহস্পতিবার লিখিত আর্জি জানানো হবে।” রয়্যালের আমানতকারী বাঁচাও সমিতির সম্পাদক নিখিলরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “রয়্যাল টাকা ফেরানো বন্ধ করে দেওয়ায় লক্ষাধিক মানুষ বিপাকে। প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে বলেছে, তা না হলে সিবিআই-তদন্তে আর্জি জানাব।”
প্রশাসনের অবশ্য দাবি, রয়্যাল ইন্টারন্যাশনালের স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ডিরেক্টরদের একটি তালিকা করে তাদের স্থায়ী ঠিকানা জোগাড়ের চেষ্টা হচ্ছে। সমস্ত তথ্য সংগ্রহের কাজ সম্পূর্ণ হলেই খুব দ্রুত পুলিশের হাতে সে সব তুলে দেওয়া হবে। অভিযোগও জানানো হবে। সদর মহকুমা শাসক বিকাশ সাহা বলেন, “রয়্যাল সংক্রান্ত তথ্য জোগাড় প্রক্রিয়া অনেকটা এগিয়েছে। খুব শীঘ্রই তথ্য-সহ পুলিশে জানানো হবে।”
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের চাঁন্দামারির বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় সরকার ২০১০ সালে ওই সংস্থা গড়ে তোলেন। দেড় বছরে টাকা দ্বিগুণের কথা বলে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে অফিস খোলা হয়। ২০১৩ সালে মৃত্যুঞ্জয়বাবু মারা যান বলে সংস্থার তরফে দাবি করা হয়। এর পরে সংস্থার চিফ ম্যানেজিং ডিরেক্টর হন মৃত্যুঞ্জয়বাবুর স্ত্রী অর্চনা দেবী। আমানতকারীদের অভিযোগ, গত বছরের এপ্রিল থেকে আমানতকারীদের টাকা ফেরানো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর কিছু দিনের মধ্যে অফিসগুলিতে তালা ঝুলিয়ে অর্চনা দেবী-সহ শীর্ষ কর্তারা উধাও হন। সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন।