সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ

সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো ছাড়াও অনুপ্রবেশের অভিযোগে ধৃত ব্যক্তিদের সম্পর্কে বিশদ তথ্য সংগ্রহ করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারদের। শুক্রবার শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে ৫ জেলার পুলিশ সুপার সহ উত্তরবঙ্গের পদস্থ পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি জিএমপি রেড্ডি। ঘণ্টাখানেকের সেই বৈঠকে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৪১
Share:

শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট থেকে বৈঠকের পরে স্বরাষ্ট্র সচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি জেএমপি রেড্ডি। —নিজস্ব চিত্র।

সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো ছাড়াও অনুপ্রবেশের অভিযোগে ধৃত ব্যক্তিদের সম্পর্কে বিশদ তথ্য সংগ্রহ করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারদের। শুক্রবার শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে ৫ জেলার পুলিশ সুপার সহ উত্তরবঙ্গের পদস্থ পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি জিএমপি রেড্ডি। ঘণ্টাখানেকের সেই বৈঠকে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে মহরমের আগে উত্তরবঙ্গ জুড়েই যাতে সর্তকতামুলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় তারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশ সুপারদের।

Advertisement

সূত্রের খবর, সীমান্তে নজরদারি করতে গেলে জেলা পুলিশের পরিকাঠামোও কিছুটা বাড়ানো প্রয়োজন বলে কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপাররা স্বরাষ্ট্রসচিবকে আর্জি জানান। সেই সঙ্গে সীমান্তে মূলত বিএসএফ নজরদারি চালায়, জেলা পুলিশ সেখানে কী করে কড়াকড়ি বাড়াবে তাও একাংশ পুলিশ কর্তা জানতে চান বলে জানা গিয়েছে। বিএসএফের সঙ্গে যাতে জেলা পুলিশের কোনরকম ‘এক্তিয়ারজনিত’ সমস্যা তৈরি না হয়, তার জন্য স্বরাষ্ট্রসচিব এবং ডিজি দু’জনেই বৈঠকে জানিয়ে দেন জেলা পুলিশের নিজেদের এক্তিয়ার অনুযায়ী কাজ করবেন। সীমান্ত এলাকায় সন্দেহজনক গতিবিধি দেখলে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। সে কারণে সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলা পুলিশকে বাড়তি অফিসার এবং গাড়ি দেওয়া হবে বলেও জানা গিয়েছে।

এ দিনের বৈঠকের পরে স্বরাষ্ট্রসচিব বা ডিজি কেউই এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেববাবু শুধু বলেন, “আজকে কিছু বলছি না।”

Advertisement

এ দিনের বৈঠকে মালদহ এবং দক্ষিণ দিনাজপুর ছাড়া উত্তরবঙ্গের বাকি জেলার পুলিশ সুপাররা উপস্থিত ছিলেন। উত্তরবঙ্গের আইজি জাভেদ শামিম, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারও বৈঠকে ছিলেন। বৈঠকের শেষ পর্যায়ে দার্জিলিঙের জেলাশাসক আসেন। তবে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে সৌজন্যমুলক সাক্ষাত্‌ করতেই জেলাশাসক এসেছিলেন। গত বৃহস্পতিবার মালদহে গিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব এবং ডিজি। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনায় মালদায়র সুজাপুর, কালিয়াচক এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। মালদহ পরিদর্শন সেরে রাতেই শিলিগুড়ি চলে আসেন দু’জনে। রাতেই স্থির হয় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারদের ডেকে বৈঠক করে বেশ কিছু ‘জরুরি’ নির্দেশ দেওয়া হবে।

সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশের অভিযোগে বিএসএফের হাতে কেউ ধরা পড়লে, তাদের পুলিশ প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই সব ধৃতদের সম্পর্কে বিশদে তথ্য সংগ্রহ করে রেখে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় টহলদারি বাড়ানো, সাদা পোশাকের পুলিশ অফিসার মোতায়েন করে নানারকম তথ্য সংগ্রহ করে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সন্দেহজনক কোনও ব্যক্তিকে দেখলে থানায় ডেকে জেরা করা এবং সে তথ্যও নিয়মিত নবান্নকে জানাতে বলা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দার্জিলিং জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং দার্জিলিং জেলায় নেপাল এবং ভূটান সীমান্তও রয়েছে। বর্ধমান কাণ্ডের পরে উত্তরবঙ্গের সব জেলাকেই সীমান্ত নিয়ে সর্তক করে দিয়েছিল রাজ্য পুলিশের ‘ডিজি অফিস’ থেকে। উত্তরবঙ্গের এক জেলা পুলিশ সুপারের কথায়, “ফ্যাক্সে পাঠানো সেই সর্তকবার্তা যে শুধু রুটিন নয়, সেটা বুঝিয়ে দিতেই রাজ্যের দুই শীর্ষকর্তা নিজেরা বৈঠক করে নির্দেশ দিলেন। বৈঠকে অনেকেই পরিকাঠামোর সীমাবদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আর্জি জানান। সেই বিষয়গুলিও দেখা হবে বলে স্বরাষ্ট্রসচিব আশ্বাস দিয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন