বৃষ্টিতে জলমগ্ন বালুরঘাটের বাঘাযতীন কলোনি। ছবি: অমিত মোহান্ত।
বৃষ্টি থেমে যাওয়ার দশ ঘণ্টা পরেও রাজবাড়ির সামনের প্রধান সড়কে হাটু ছুঁইছুঁই জল দাঁড়িয়ে আছে। দুপাশের নিকাশি উপচে আবর্জনা চলে এসেছে রাস্তার উপরে। তার উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। কেউ ৫০ মিটারের রাস্তা পার হওয়ার জন্য ১০ টাকা দিচ্ছেন রিকশাচালককে। মিনিবাস স্ট্যান্ডের সামনে নিকাশি উপচে জল ঢুকে পড়েছে। আশেপাশের বাড়িগুলিতে তার মধ্যে দিয়েই চলছে চলাফেরা। নিকাশি বেহাল হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে এমনই বেহাল দশা কোচবিহারের রাস্তার।
কোচবিহার পুরসভার বিরোধী দলনেতা মহানন্দা সাহা বলেন, “রাজবাড়ির সামনে জল জমে থাকাটা দুর্ভাগ্যের। অপরিকল্পিত ভাবে নিকাশি তৈরি হওয়ায় এমনটা হচ্ছে। নিউ টাউন, কলাবাগান সহ বেশ কিছু এলাকায় অল্প বৃষ্টিতে জল দাঁড়িয়ে যায় নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।” কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান দীপক ভট্টাচার্জ বলেন, “যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে কিছুটা জল দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ওই জল বৃষ্টি থামার আধ ঘণ্টার মধ্যে নেমে গিয়েছে। রাজবাড়ির সামনের জল বিটি অ্যান্ড ইভিনিং কলেজের সামনে দিয়ে বেরিয়ে যায়। সেখানে একটি নির্মিত ভবনের জন্য জল ধীরে ধীরে বেরোচ্ছে। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”
বাসিন্দারা জানান, রবিবার থেকে বৃষ্টির জন্য রাজবাড়ির সামনে জল দাঁড়ানোয় সেখানে ঢোকার প্রধান ফটক, টিকিট কাউন্টারে যাওয়ার রাস্তায় প্রায় এক-হাঁটু জল দাঁড়িয়ে যায়। পাশে রাজবাড়ি পার্কে যাওয়ার রাস্তাতেও একই অবস্থা। রবিবার শেষ রাতের দিকে বৃষ্টি কমে গেলে শহরের বিভিন্ন রাস্তা থেকে জল নেমে যায়। রাজবাড়ির সামনে সোমবার সারা দিন জল জমে থাকে।
এদিন বাসস্ট্যান্ডে নেমে আদালতের দিকে যাচ্ছিলেন পুন্ডিবাড়ির বাসিন্দা অতুল রায়। মিনিবাসের স্ট্যান্ড পার হয়ে রাজবাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। পরে ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে রিকশায় জল পার হতে বাধ্য হন। তিনি বলেন, “নিকাশিতে আবর্জনা। জমা জলে তা চলে এসেছে। সে সবের মধ্যে দিয়ে আর হেঁটে যেতে ইচ্ছে করল না। তাই রিকশা ভাড়া করলাম। রাজবাড়ির মতো একটি ঐতিহ্যের সামনে কেন যে এমন অবস্থা হয় বুঝতে পারি না?” শুধু কোচবিহার না, নিকাশির অভাবে টানা বৃষ্টিতে মাথাভাঙা ও দিনহাটা শহরের বেশ কিছু এলাকায় জল দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পুরসভা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, আগের থেকে শহরের নিকাশির অবস্থা অনেকটা ভাল হয়েছে।