শিলিগুড়ি মহকুমার দুটি বিধানসভার দুই বিধায়ক শঙ্কর মালাকার ও সুনীল তিরকেকেই ফের প্রার্থী করে প্রচার শুরু করে দিল কংগ্রেস।
শনিবার শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার ঠিকনিকাটা জুনিয়র হাইস্কুল মাঠে এক জনসভায় প্রদেশ কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্র এই কর্মসূচির সূচনা করলেন। জোট হোক বা না হোক এঁরাই যে প্রার্থী হবেন তাও পরিষ্কার করে দিয়েছেন সোমেনবাবু।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হলে মাইক বাজানো যাবে না। তাই তার আগে হাতে থাকা দু’দিনে যতটা পারা যায় প্রচার এগিয়ে রাখতে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গে ক্রমশ পিছিয়ে পড়া কংগ্রেস উত্তরবঙ্গে তৃণমূল বিরোধী হাওয়াকে যে কাজে লাগাতে চাইছে তাও এ দিনের সভায় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এ দিন মাটিগাড়ার সভা শেষ করে ফাঁসিদেওয়া নজরুল মঞ্চে আরও একটি সভায় যোগ দেন প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি।
এদিন সোমেনবাবু বলেন, ‘‘মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি ও ফাঁসিদেওয়া বিধানসভা কেন্দ্র দু’টি আমাদের দখলে রয়েছে। এই দুটি কেন্দ্রে গত নির্বাচনে জয়ী হয়েছি। এবারও গতবারের বিজয়ীরাই প্রার্থী হবে।’’ জোট হলে কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘জোট হলেও আমাদের গত বিধানসভায় জেতা সবকটি আসনে প্রার্থী দেব। এটা আমাদের অন্যতম জোট শর্ত।’’ কংগ্রেসের আগ বাড়িয়ে প্রচারে অন্যায় কিছু দেখছেন না সিপিএম নেতা তথা শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘জোটের বিষয় এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। চূড়ান্ত কিছু হয়নি। আলোচনা চলছে। তাতে তাঁরা প্রচার করতেই পারেন। আমরাও নিজেদের মত প্রচার শুরু করেছি। এতে অসুবিধা কোথায়? চূড়ান্ত হলে তারপর কিছু বলার মত জায়গায় থাকব।’’
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর মতই জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও প্রকাশ্যে বিরোধী জোটকে পাত্তা দিতে চাইছে না। দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘তৃণমূল ফের ক্ষমতায় আসছে। কোনও জোটই আমাদের টলাতে পারবে না। আমরা একে কোনও গুরুত্ব দিচ্ছি না।’’
এদিন মঞ্চে উপস্থিত বক্তারা তাঁদের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার দাবি জানান। শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত, জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জীবন মজুমদার, শঙ্কর মালাকার, সুনীল তিরকেরা দু’টি সভাতেই উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যেকের কণ্ঠেই ছিল জোটের পক্ষে সওয়াল ও কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়ী করার আহ্বান।
কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক ও মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি কেন্দ্রের বিধায়ক শঙ্কর মালাকার নিজেও আশাবাদী জিতবেন বলে। গত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ ভোটে পিছিয়ে পড়লেও বিধানসভা ভোটে অন্য সমীকরণ কাজ করবে বলে আশা করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ ভোটবাক্সে সমস্ত জবাব দেবে। তৃণমূলের অপশাসনকে রুখতে আর কোনও বিকল্প রাস্তা নেই।’’ তাঁর দাবি প্রতিটি নির্বাচন আলাদা। মানুষকে বোকা বানানো যে সম্ভব নয় তা শিলিগুড়িতে পরপর ভোটে তৃণমূল বুঝতে পেরেছে বলে তিনি দাবি করেন।