ফের সালিশির অভিযোগ মালদহে। এবার সালিশি সভা ডেকে স্বামী স্ত্রীর বিবাদ মেটাতে গিয়ে ছুরিকাহত হলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। শুক্রবার বেলা তিনটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ জেলার পুখুরিয়া থানার পীরগঞ্জের সাতমারা গ্রামে। তৃণমূলের ওই নেতা গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব সালিশির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। হামলাকারীরা সিপিএমের কর্মী বলে দাবি করেছে তৃণমূল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,আহত নেতার নাম সফিউর আলম ওরফে রিয়াজউদ্দিন। তিনি তৃণমূলের রতুয়া ২ ব্লকের সভাপতি।এছাড়া তিনি পঞ্চায়েতেরও সদস্য। এদিনের ঘটনার পর বাসিন্দারা অভিযুক্ত যুবককে আটক করে রাখেন। পরে পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম আখতারুল হক। তিনি দিনমজুরের কাজ করেন। চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযু্ক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কী কারণে হামলা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রতুয়া ২ ব্লকের পীরগঞ্জ পঞ্চায়েতের সাতমারা গ্রামের বাসিন্দা আখতারুল হকের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী সেরিনা বিবির বিবাদ চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। এই নিয়ে এদিন দুপুরে গ্রামে সালিশি সভা বসানো হয় বলে অভিযোগ। সালিশির সভার নেতৃত্বে ছিলেন ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সদস্য রিয়াজউদ্দিন। সালিশিতে দুই পক্ষকে একসঙ্গে থাকার নির্দেশ দেন তিনি। এরপরেই বাড়ি যাওয়ার পথে আখতারুল ছুরি নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। আহত নেতার ছেলে মহফুজ আলম বলেন, ‘‘বিচারের রায় পছন্দ না হওয়ায় বাবার উপরে হামলা বলে মনে হচ্ছে।’’ যদিও জেলা নেতৃত্ব এবং রিয়াজউদ্দিন নিজে সালিশির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি নমাজ পড়ে ফেরার পথে আখতারুলের বাবা এসারউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলছিলাম। সেই সময় আমার উপরে পরিকল্পিতভাবে সে হামলা চালায়।’’ এ দিন বিকেলে অভিষেকের সভার শেষে আহত নেতাকে দেখতে মেডিক্যাল কলেজে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। তিনিও বলেন, ‘‘সিপিএমের কর্মী তাঁর উপরে হামলা চালিয়েছে। এখানে সালিশির কোন বিষয় নেই। ’’ তবে সিপিএম নেতৃত্ব এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘সালিশি করার জন্য হামলার মুখে পড়েছেন তৃণমূল নেতা। এখন দোষ ঢাকতে সিপিএম কর্মীর উপরে দায় চাপাচ্ছেন।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘সালিশি হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। রিয়াজউদ্দিন সুস্থ হলে কারণ জানা যাবে।’’