বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছাত্র সংসদের ৩৩টি আসন দখল করলেও, সংসদের সাধারণ সম্পাদক স্থির করতে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ভোটাভুটি হল মালবাজারের পরিমল মিত্র কলেজে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) গোষ্ঠী বিবাদ এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে সংগঠনের জেলা সভাপতিকেও ঘেরাও করে বিক্ষোভ এমন কী শারীরিক ভাবে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। যদিও, জেলা সভাপতি অভিজিৎ সিংহ শারীরিক নিগ্রহের কথা মানেননি।
শুক্রবার মালবাজার পরিমল মিত্র স্মৃতি কলেজে ছাত্র সংসদের কমিটি গঠন করার কথা ছিল। সেই মত কলেজ ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জেতা টিএমসিপি জেলা কমিটির সুপারিশে তাদের কমিটির খসড়়া তৈরি করে জমা দিলে তার বিরোধিতা করে টিএমসিপিরই এক দল নেতা কর্মী। টিএমসিপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি অভিজিতবাবুর উপস্থিতিতে সংগঠনের তরফে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী শ্বেতা বাক্সলাকে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তুলে ধরলেও, অন্যদিকে মালবাজারের পুর এলাকার বাসিন্দা ছাত্র নেতা আনন্দ লোহারকে সাধারণ সম্পাদক করার দাবি তোলেন তৃণমূল চা শ্রমিক নেতা পুলিন গোলদার সহ অন্যান্যরা। প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁরা অধ্যক্ষার কাছে অভিযোগ জানান। এরপরেই সাধারণ সম্পাদক চূড়ান্ত করতে জয়ী সদস্যদের মধ্যে ভোট করার সিদ্ধান্ত নেন অধ্যক্ষা নন্দিতা সরকার।
একভোটে জেতেন জেলা সভাপতির গোষ্ঠীর মনোনীত শ্বেতা বাক্সলা। এরপরই সংগঠনের একদল নেতা সমর্থক ক্ষুব্ধ হয়ে সবাপতি অভিজিৎবাবুকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান অন্য গোষ্ঠীর সমর্থকেরা। শারীরিক ভাবে অভিজিতকে হেনস্থা করার অভিযোগও ওঠে। যদিও প্রথমে শারীরিক হেনস্থা হয়েছে স্বীকার করলেও পরে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি এদিন বলেন, “মালবাজার কলেজে দলবিরোধী ঘটনার জন্যে দলেরই একাংশ দায়ী। তাদের বিরুদ্ধে জেলা এবং রাজ্য স্তরে অভিযোগ জানাব।”
অন্যদিকে পাল্টা অভিযোগ করে দলত্যাগের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। মালবাজার কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কলেজ ইউনিটের নেতা এবং যুব তৃণমূলের মালবাজার শহরের নেতা আনন্দ এবং অজয় লোহার অভিযোগ করে বলেন, “সারা বছর ধরে যারা কাজ করে তৃণমূলকে কলেজে প্রতিষ্ঠা দিল তাদেরই দলে কোন দাম নেই। এ ভাবে চললে প্রয়োজনে রাজনৈতিক বিকল্পের কথাও আমাদের ভাবতে হবে।” অন্যদিকে মালবাজারের তৃণমূল নেতা তথা তৃণমূল কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা পুলিন গোলদার অভিযোগ করে বলেন, “নীচু তলায় যারা পরিশ্রম করে দল করছে তাদের বিরুদ্ধে এদিন চক্রান্ত করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা চলতে থাকলে প্রয়োজনে চরমতম সিদ্ধান্তও নিতে পারি।”