মদনমোহন মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে রেল মিউজিয়াম। কোচবিহারে তোলা নিজস্ব চিত্র।
মদনমোহন মন্দিরের আদলে নির্মীয়মাণ কোচবিহার রেল মিউজিয়ামের ভবন তৈরির কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ করার তোড়জোড় চলছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার মদনমোহন মন্দিরের টাউন স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় প্রায় এক বিঘা জমিতে ওই মিউজিয়াম তৈরি হচ্ছে। খরচ ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা। ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে ভিতরের কাজ শুরু করা হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করার পর আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে ভবনে ভিতর সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুর দুয়ারের ডিভিশনাল ম্যানেজার বীরেন্দ্র কুমার বলেন, “নির্মাণ কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরে মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারপরেও মিউজিয়াম সাজিয়ে তোলা, আভন্ত্যরীণ কারুকার্যে জন্য আরও মাস তিনেক সময় লাগবে। আগামী মার্চের মধ্যে সব শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।”
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় কাজের শিলান্যাস করেন। প্রাথমিক আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু চার বছরের বেশি সময় পার হলেও ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। রেল কর্তাদের একাংশের গড়িমসির অভিযোগ নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। যদিও রেলকর্তারা তা মানতে চাননি। রেলের কয়েক জন পদস্থ কর্তার দাবি, শ্রমিক সরবরাহের কর্তৃত্ব নিয়ে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের বিরোধে ২০১১ সাল থেকে এক বছর কাজ বন্ধ রাখতে হয়। কিছুদিন পরে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় কাজের গতি কমেছে। সমস্যা মিটিয়ে গত বছর থেকে ভবনের নির্মাণ কাজে জোরকদমে শুরু হয়েছে।
রেল সূত্রে জানা যায়, মিউজিয়াম বাইরে থেকে মদনমোহন মন্দিরের ছাপ থাকবে। ভিতরে আধুনিক নির্মাণ শৈলীর নিদর্শন মিলবে। মিউজিয়ামের মূল ঘর থাকছে তিনটি। একটি ঘরে গ্যালারি হবে। অন্য দুটি অডিটোরিয়াম ও লাইব্রেরি। মিউজিয়ামের আকর্ষণ হিসেবে কোচবিহার রাজাদের আমলের রেলের মিটার ও ন্যারো গেজ লাইনের স্টিম ইঞ্জিন, ট্রলি, হ্যান্ড সিগনালিং যন্ত্র, গার্ডদের পতাকা, ওয়াটার কলম, আলোক স্তম্ভ ছাড়াও যোগাযোগের খুঁটিনাটি সামগ্রী ও নানা প্রাচীন নিদর্শন রাখা হবে বলে ঠিক হয়েছে। প্রাচীন রেল সেতু, ইঞ্জিন, ভবনের ছবি, নানা দলিল দস্তাবেজ রাখা হবে। অন্য দিকে অডিটোরিয়ামে থাকছে রেল সংক্রান্ত নানা তথ্যচিত্র দেখানোর ব্যবস্থা। এ প্রসঙ্গে কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটি সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “দ্রুত কাজ সম্পূর্ণ করে সব দিক থেকে মিউজিয়ামটি আকর্ষণীয় করে তোলা হলে পর্যটকদের একটি বাড়তি পাওনা হবে। গবেষকরাও উপকৃত হবেন।”