সঙ্কটে চরের তরমুজ চাষিরা

অবৈধভাবে বালি তুলে নেওয়ায় দক্ষিণ দিনাজপুরে তরমুজ চাষে সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা। বহু বছর ধরে জেলার আত্রেয়ী নদীর পাড় বরাবর বালির চরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চাষিরা তরমুজের চাষ করেন।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৪ ০১:৩৪
Share:

অবৈধভাবে বালি তুলে নেওয়ায় দক্ষিণ দিনাজপুরে তরমুজ চাষে সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা। বহু বছর ধরে জেলার আত্রেয়ী নদীর পাড় বরাবর বালির চরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চাষিরা তরমুজের চাষ করেন। জেলার উদ্যান পালন দফতর সূত্রের খবর, জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের সমজিয়া থেকে বালুরঘাটের পতিরাম, পাগলিগঞ্জ, পরানপুর, মাহিনগর, কালিকাপুর পর্যন্ত আত্রেয়ী নদীর তীর বরাবর বালির চরে প্রায় ৬০০ বিঘাতে তরমুজের চাষ হয়। উত্‌পাদন মেলে ১৪ টন। ফেব্রুয়ারি থেকে তরমুজের বীজ বোনার কাজ শুরু হয়। এপ্রিলের শেষে থেকে ফসল উঠতে শুরু করে।

Advertisement

চলতি বছরের শুরু থেকে শুকিয়ে যাওয়া আত্রেয়ীর চরের দখল নিয়ে দিনরাত যত্রতত্র বালি তুলে ট্রাক্টর ভর্তি করে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, চরে নির্দিষ্ট বালি তোলার রাজস্ব জমা দিয়ে প্রচুর পরিমাণে বালি তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ব্লক ভুমি রাজস্ব দফতরে একাংশ কর্মী অফিসার জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক সুবলচন্দ্র রায় বলেন, “সরজমিনে তদন্তে বিভাগীয় অফিসারকে পাঠানো হচ্ছে। দফতরের কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সামনে লোকসভার ভোট। এ সময়ে প্রশাসনের কর্তাদের ব্যস্ততার সুযোগে চরের যেখানে সেখানে থেকে বালি তুলে নেওয়া হচ্ছে। আর এর জেরে তরমুজ চাষের এলাকা কমে যাচ্ছে। চাষিদের আক্ষেপ, “এমনিতে নদী শুকিয়ে গিয়েছে। তার উপর বালি কেটে নেওয়ার জেরে যত্রতত্র বড় বড় গর্ত তৈরি হচ্ছে। চাষের এলাকা প্রায় দেড়শো বিঘা কমে গিয়েছে।” চাষিরা জানান, আত্রেয়ীর ওই সমস্ত এলাকায় এবারে প্রায় সাড়ে চারশো বিঘাতে তরমুজ চাষ হচ্ছে। চাষিরা জানান, ওই এলাকায় বছর দুয়েক আগেও ৫০ বিঘা চরে তরমুজের চাষ হত। এ বছর মেরে কেটে ৩০ বিঘায় দাঁড়িয়েছে। বঙ্কু সরকার, প্রতীম সরকার, সনাতন রায়, প্রদীপ শীল, রাকেশ সিংহ ও নেপাল সিংহ-রা জানান, উদ্যান পালন দফতর থেকে সাহায্য মেলে না। উপরন্তু এ বারে চাষের এলাকা কমে যাওয়ার পাশাপাশি বৃষ্টির দেখা নেই। সমস্যা সব দিয়েই বাড়ছে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও উদ্যান পালন আধিকারিক জয়দীপ বর্মন বলেন, “তরমুজ চাষির এই অভিযোগ ঠিক নয়। সমস্যার বিষয়ে কেউ আমাদের জানায়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন