সন্ধে নামলেই জলপাইগুড়ি দাপায় বাইক-বাহিনী, আতঙ্ক

সন্ধে নামলেই শহরের পথে মোটরবাইকের দাপটে ঘুম ছুটছে জলপাইগুড়ির বাসিন্দাদের। শহরে যথাযথ পুলিশি নজরদারি না থাকায় সন্ধ্যার পরে রাস্তায় চলাচল করা বাসিন্দাদের কাছে রীতিমত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। একাংশ যুবক ঝড়ের গতিতে বেপরোয়া ভাবে বাইক চালাচ্ছেন, কেউ বা জনবহুল এলাকাতেও আঁকাবাঁকা ভাবে তীব্র গতিতে বাইক নিয়ে চলে যাচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৪ ০২:১৬
Share:

সন্ধে নামলেই শহরের পথে মোটরবাইকের দাপটে ঘুম ছুটছে জলপাইগুড়ির বাসিন্দাদের।

Advertisement

শহরে যথাযথ পুলিশি নজরদারি না থাকায় সন্ধ্যার পরে রাস্তায় চলাচল করা বাসিন্দাদের কাছে রীতিমত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। একাংশ যুবক ঝড়ের গতিতে বেপরোয়া ভাবে বাইক চালাচ্ছেন, কেউ বা জনবহুল এলাকাতেও আঁকাবাঁকা ভাবে তীব্র গতিতে বাইক নিয়ে চলে যাচ্ছেন। দিনের পর দিন এই ঘটনা ঘটলেও, প্রশাসন নির্বিকার। বুধবার বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বাইক বাহিনীর দৌরাত্ম্য বন্ধ করার দাবিতে কালীপুজোর পরে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে বিজেপির যুব সংগঠনও। যদিও জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল, উদাসীনতার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। অভিযান চলছে। ট্রাফিক নিয়ম না মেনে চললে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

জলপাইগুড়ি ট্রাফিক পুলিশের ওসি সৈকত ভদ্র জানান, “ট্রাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে পুজোর সময় ১১টি বাইক আটক করে মাথা পিছু এক হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিদিন অভিযান চলছে।” তবে পুলিশ কর্তারা যাই দাবি করুন না কেন, শহরবাসীর অভিজ্ঞতা ভিন্ন। সন্ধে নামতে জুবিলি পার্ক সংলগ্ন তিস্তা বাঁধ, কিং সাহেবের ঘাট সংলগ্ন স্পার, করলা সেতু, রাজবাড়ির দিঘির পাড়, গোশালা ও পাহাড়পুর লাগোয়া এলাকায় নেশার আসর বসে বলে অভিযোগ। সেই সব আসর থেকে বেড়িয়েই যুবকদের একাংশকে বাইক নিয়ে শহর দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। রাত যত বাড়ে বাইক বাহিনীর দৌরাত্ম্যও ততই বেড়ে চলে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে রাস্তা পারাপারের সময় অল্পের জন্য দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন কামারপাড়ার বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী বিমল সরকার। তিনি বলেন, “মাঝ রাস্তায় পৌঁছেছি এমন সময় ঝড়ের গতিতে কয়েকটা বাইক চলে আসে। চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে যাই। মুহূর্তের মধ্যে ওঁরা উধাও হয়ে গেল।”

Advertisement

ট্রাফিক নিয়মে হেলমেট ছাড়া বাইক চালানো নিষিদ্ধ। বাইকে চালক ছাড়া একজন আরোহী বসতে পারবেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাত আটটার পরে বাতাসের গতিতে ছুটে বেড়ানো বাইক চালকদের মাথায় হেলমেট দেখা যায় না। শুধু তাই নয়,একটি বাইকে তিনজন উঠে বিকট চিত্‌কার করে ছুটে বেড়ায়। এক সঙ্গে পাঁচ ছ’টি বাইক এভাবে দাপিয়ে বেড়াতে থাকে। সে সময় পুলিশকে রাস্তার কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ।

বিজেপির জেলা যুব মোর্চার সভাপতি জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “বেশ কয়েকবার পরিস্থিতির কথা পুলিশকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। তাই কালী পুজোর পরে আন্দোলনে নামব।” একই ভাবে কংগ্রেস এবং সিপিএম নেতৃত্বও শহরে বাইকের দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে সরব হয়েছেন। জেলা সিপিএম আহ্বায়ক সলিল আচার্য বলেন, “শহর ক্রমশ বিপজ্জনক জায়গায় চলে যাচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।” পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক সেটা শাসক দল তৃণমূল নেতৃত্ব অস্বীকার করতে পারছেন না। দলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “জেলা পুলিশ কর্তাদের বলেছি, কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন