পুর হাসপাতালের প্যাথলজিক্যাল বিভাগে ডাকাতির ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও অভিযুক্তদের ধরতে পারেনি পুলিশ। শনিবার গভীর রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে চক ভবানী এলাকায় পুরসভার মাতৃসদনে এক দল দুষ্কৃতী হানা দেয়। বন্দুক ও ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে দুই নৈশপ্রহরীকে বেঁধে ১০-১২ জনের দুষ্কৃতী দলটি কেন্দ্রের সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে লুঠপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ। জেলা পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া সোমবার মাতৃসদনে তদন্তে গিয়ে বলেন, “৫ জনকে আটক করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তদন্ত চলছে। রাত পাহারায় থাকা পুলিশকর্মীদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে ওই প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি চালায় একটি বেসরকারি সংস্থা। দোতলায় রোগীদের শয্যা ও অপারেশন থিয়েটার। নীচের তলায় রোগ নির্ণয় কেন্দ্র। সেখানে রক্ত পরীক্ষা থেকে এক্সরে, আলট্রাসোনোগ্রাফি, ইসিজি, সিটিস্ক্যানের মতো আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে। পুর হাসপাতালের নৈশপ্রহরী ছোটন দাস জানান, রাত ১টা নাগাদ পাঁচিল টপকে ১০-১২ জনের একটি দুষ্কৃতী দল তাঁদের মাথায় আগ্রেয়াস্ত্র ও ভোজালি ঠেকিয়ে পিছমোড়া করে বেঁধে ওই বিভাগে গিয়ে তাণ্ডব চালায়। ঘণ্টাখানেক লুঠপাটের পর দলটি মাতৃসদনের পিছনে আত্রেয়ী নদী বাঁধের নির্জন রাস্তা ধরে পালায়। সংশ্লিষ্ট সংস্থার ম্যানেজার শ্যামল কান্ডারীর অভিযোগ, “দুষ্কৃতীরা সিসিটিভি ভেঙে কাউন্টারের আলমারি ভেঙে নগদ ৩০,০০০ টাকা, দু’টি মোবাইল এবং দু’টি সাইকেল লুঠ করে। নথিপত্রও তছনছ করে পালিয়েছে ওরা।”
রবিবার সকালে পুরসভার সাফাইকর্মীরা গিয়ে নীচের তলার ওই বিভাগ থেকে নৈশপ্রহরীদের উদ্ধার করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুরসভার মাতৃসদনটির পাশে প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকদের সরকারি আবাসন। বিএসএনএলের অফিসও পাশেই। বালুরঘাট থানা এবং জেলা প্রশাসনিক ভবনও কাছে। তা সত্ত্বেও হাসপাতালে হানা দিয়ে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের নৈশ টহলদারি নিয়ে বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলছেন। শহর জুড়েই সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপর রাত পাহারার দায়িত্ব দেওয়া হলেও মাতৃসদনের পিছনের দিকে কাউকে দেখা যায় না বলে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ। বণিক সভার প্রতিনিধি কমলেশ ফৌজদার বলেন, “কিছু দিন আগেও গঙ্গারামপুর থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বড়বাজার এলাকায় ভর সন্ধেয় দুষ্কৃতীরা পর পর বোমা ফাটিয়ে সোনার দোকানে ভয়াবহ ডাকাতি করে পালায়।”
তবে মাতৃসদনের ঘটনায় দু’টি সিসিটিভির ক্যামেরা ভেঙে ফেলার আগে কিছু ছবির ফুটেজ পুলিশ উদ্ধার করতে পেরেছে। সেই সূত্র ধরে পুলিশ কী ভাবে তদন্ত এগোয়, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে ওই বেসরকারি সংস্থা।