মালদহের চাঁচল মহকুমা হাসপাতালের সুপারের বদলির সিদ্ধান্ত স্থগিত করল স্বাস্থ্য দফতর। বৃহস্পতিবার জাতীয় ও রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের পর শুক্রবার বিকেল থেকে সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও বিএমওএইচকে ঘেরাও করে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে চাঁচল নাগরিক মঞ্চ। রাতে আন্দোলনের কথা জেনে হাসপাতালে পৌঁছন উত্তর মালদহের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নূরও।
সুপারের বদলি রদ-সহ মহকুমা হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ পরিকাঠামো গড়ে তোলার দাবিতে এ দিন অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। রাতে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে মঞ্চের সদস্যদের সুপারের বদলি রদের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এতে প্রায় ৪ ঘণ্টা বাদে রাত ৮টা নাগাদ ঘেরাওমুক্ত হন দুই স্বাস্থ্যকর্তা। পাশাপাশি দ্রুত মহকুমা হাসপাতালের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও স্বাস্থ্য দফতরের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়।
মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ মণ্ডল বলেন, “হাসপাতালের সুপারের বদলি আপাতত রদ করা হল। স্বাস্থ্যভবনের ওই সিদ্ধান্তের কথা মঞ্চের সদস্যদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের উন্নয়ন নিয়ে যে সমস্ত দাবির কথা বলা হয়েছে, তার অনেকগুলিই করা হয়েছে। বাকিগুলিও যাতে দ্রুত হয় তা দেখা হচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তার সঙ্গেও কথা হয়েছে।” মৌসম বলেন, “ওই সুপার ভাল কাজ করছেন বলে সবাই দাবি করছেন। আন্দোলনকারিদের পাশে দাঁড়াতেই হাসপাতালে গিয়েছিলাম।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, কাজে যোগ দেওয়ার পাঁচ মাসের মধ্যে সুপার সুবর্ণ গোস্বামীকে বদলি করায় আন্দোলনে নামে নাগরিক মঞ্চ। মহকুমা হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ চালু করার দাবিও জানানো হয়। মঞ্চের সদস্যরা জানান, হাসপাতালে এখনও চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এ ছাড়া হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্ক ও বার্ন ইউনিট নেই। সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার চালু হলেও চিকিৎসকের অভাবে তা নিয়মিত হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে এসিএমওএইচকে তাঁরা লিখিতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। তাঁদের দাবি সহ সুপারের বদলি নিয়ে কী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে এ দিন এসিএমওএইচ-এর দফতরে যান নাগরিক মঞ্চের সদস্যরা। সেখানে গিয়ে সিএমওএইচকে চাঁচলে আসতে হবে বলে দাবি জানানো হয়। অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। রাতে মহকুমাশাসকের নির্দেশে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে হাসপাতালে যান দুই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। কিন্তু তাতেও ফল হয়নি।
নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক দেবব্রত ভোজ ও মনওয়ারুল আলম বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকায় আমরা খুশি। কিন্তু পরিকাঠামো উন্নয়নে ব্যবস্থা না নিলে ফের আন্দোলন হবে।” সুপার সুবর্ণ গোস্বামী এ দিন বলেন, “সরকারি কর্মী হিসেবে আমাকে যেখানেই পাঠানো হবে, সেখানেই ভালভাবে কাজ করার চেষ্টা করব। এর বেশি কিছু বলব না।”