৩৫৬ ধারা জারি নিয়ে বাম শরিকদের মধ্যে প্রকাশ্যে বিরোধ

রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারির দাবি নিয়ে শরিকদের মতভেদ প্রকাশ্যে এল বামেদের অবস্থান মঞ্চ থেকেই। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে কোচবিহারে টানা দু’দিন অবস্থানের শুরু হয়েছে এ দিন বৃহস্পতিবার থেকে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে ২০ দফা দাবিকে সামনে রেখে ওই অবস্থানের ডাক দেওয়া হয়েছে বলে জেলা বামফ্রন্ট সূত্রে জানানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২৯
Share:

কোচবিহারে বামেদের অবস্থানে বক্তৃতা করছেন মহম্মদ সেলিম। নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারির দাবি নিয়ে শরিকদের মতভেদ প্রকাশ্যে এল বামেদের অবস্থান মঞ্চ থেকেই। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে কোচবিহারে টানা দু’দিন অবস্থানের শুরু হয়েছে এ দিন বৃহস্পতিবার থেকে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে ২০ দফা দাবিকে সামনে রেখে ওই অবস্থানের ডাক দেওয়া হয়েছে বলে জেলা বামফ্রন্ট সূত্রে জানানো হয়েছে। এ দিন অবস্থান মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ প্রশ্ন তোলেন, জেলা তথা রাজ্য জুড়ে বাম কর্মীদের উপর তৃণমূলের সন্ত্রাস চলতে থাকায়, কেন রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের দাবিও বামেদের দাবিপত্রে রাখা হবে না। উদয়নবাবুর দাবি, ৩৫৬-এর দাবিকে ২১ নম্বরে সংযোজন করতে হবে। উদয়নগুহের পরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অবশ্য সিপিএমের সাংসদ মহম্মদ সেলিম দাবি করে বলেন, রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে বামেরা ক্ষমতায় আসতে চায় না। আন্দোলন গড়ে তুলে তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করাই লক্ষ্য বলে সেলিমের দাবি।

Advertisement

প্রকাশ্য মঞ্চে দুই শরিক দলের অন্যতম শীর্ষ নেতাদের প্রকাশ্যে মতবিরোধের জেরে জেলা বামফ্রন্টেই অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। এই ঘটনার পরে, ৩৫৬ নিয়ে কোন ‘লাইন’ নেওয়া হবে তা নিয়ে নীচু তলার কর্মী সমর্থকরাও ধন্ধে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন। এ দিন থেকে কোচবিহার সাগরদিঘির পাড়ে শহীদ বাগ চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ওই অবস্থান সভায় ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিধায়ক উদয়ন গুহ ৩৫৬ ধারা জারির প্রসঙ্গ তুলে বলেছেন, “জেলা বামফ্রন্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ দফা দাবিতে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ওই কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়ার পরে রাজ্যে আরও নানা ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যে ৩৫৬ ধারা কেন হবে না? কতটা অন্ধকারে গেলে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারি হবে?” সেই উদয়নবাবুর সংযোজন, “আমি বললে কমরেড সেলিমরা হয়ত একমত হবেন না।” উদয়নবাবুর ওই বক্তব্যের ঠিক পরেই ওই অবস্থান সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিএম নেতা রায়গঞ্জের সাংসদ মহম্মদ সেলিম। তিনি অবশ্য ওই প্রসঙ্গে সাফ বলেন, “এ রাজ্যের মানুষ রাস্তায় নেমে কৃণমূল সরকারকে নবান্ন থেকে টেনে বের করতে পারবেন। দিল্লির সরকার খবরদারি করুক সেটা চাই না। সংবিধানের দোহাই দিয়ে সরকারের মোকাবিলা করতে চাই না।”

এ দিন অবস্থানের পরে একাংশ বাম কর্মীরা নেতাদের কাছে জানতে চান, “তবে কী রাজ্যে ৩৫৬ জারির পরিস্থিতি হয় নি?” এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, সেলিম বলেন, “ও নিয়ে উদয়নবাবুকে জিজ্ঞেস করুন। ওটা উদয়নবাবুর ব্যাক্তিগত মতামত। যা করার মানুষ করবেন।” পরে অবশ্য ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা উদয়নবাবুও জানিয়ে দেন, এ বিষয়ে দলে বা ফ্রন্টে আলোচনা হয়নি। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায়, প্রাক্তন বনমন্ত্রী অনন্ত রায়, সিপিআই নেতা শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় প্রমুখ অবস্থান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। উত্তরবঙ্গে এইমস, পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, কোচবিহারে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ, মেখলিগঞ্জ-হলদিবাড়িতে তিস্তায় সেতু সহ ২০ দফা দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে জেলা বামফ্রন্ট।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন