BJP

বিজেপি-তে নয়া ছবি, বাংলার শুভেন্দু-দিলীপ যেন দিল্লি দরবারের মোদী-নড্ডা জুটি

রাজ্য কার্যকারিণী সমিতির বৈঠক থেকেই শুভেন্দু যে সেই গুরুত্ব পেতে চলেছেন, তা আগেই জানিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২১ ১০:১৮
Share:

বিজেপির রাজ্য কার্যকারিণী সমিতির বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।

এক দিকে নরেন্দ্র মোদী-জেপি নড্ডা, অন্য দিকে শুভেন্দু অধিকারী-দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি-র কার্যকারিণী বৈঠক মঞ্চের পটভূমিকাই বলে দিল, দলের ভবিষ্যৎ রাস্তা কেমন হতে চলেছে।

Advertisement

বিজেপি-র সংবিধান অনুযায়ী সংগঠনের ক্ষেত্রে পরিষদীয় বা সংসদীয় দলনেতা সাংগঠনিক ক্ষেত্রে সভাপতির সমান মর্যাদা পান। সেই হিসেবেই একটা সময়ে দলে সভাপতি লালকৃষ্ণ আডবাণীর সমান গুরুত্ব পেতেন লোকসভায় বিরোধী দলনেতা অটলবিহারী বাজপেয়ী। পরে বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী হলেও একই রকম গুরুত্ব পেয়েছেন সভাপতি জনা কৃষ্ণমূর্তির মতো। সেই ধারা মেনেই মোদী এবং নড্ডা দলে সমান গুরুত্ব পান। সেই নিয়ম মেনে রাজ্যেও তাই দিলীপের সমান গুরুত্বের অধিকারী শুভেন্দু।

রাজ্য কার্যকারিণী সমিতির বৈঠক থেকেই শুভেন্দু যে সেই গুরুত্ব পেতে চলেছেন, তা আগেই জানিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। মঙ্গলবার মঞ্চের প্রেক্ষাপট এবং বৈঠকের নির্যাস বুঝিয়ে দিল,‌ আগামিদিনে রাজ্য বিজেপি দিলীপ-শুভেন্দুর সমান্তরাল নেতৃত্বেই চলবে। পরিষদীয় নেতৃত্বে যেমন শুভেন্দুর প্রাধান্য থাকবে তেমনই দল ও শাখা সংগঠন পরিচালনায় দিলীপ মুখ্য ভূমিকা নেবেন।

Advertisement

নিজস্ব চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি-তে বরাবরই সর্বোচ্চ ক্ষমতা ভোগ করে এসেছেন রাজ্য সভাপতিরা। কারণ, এর আগে বাংলায় বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা পদে বিজেপি-র কেউ থাকেননি। নবান্ন দখলের স্বপ্ন পূরণ না হলেও বড় সংখ্যায় বিধায়ক নিয়ে প্রধান ও একমাত্র বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা হয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু। যিনি অল্প ভোটের ব্যবধানে হলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছেন। এর পর থেকেই দিলীপ ও শুভেন্দুর শিবির আলাদ হয়ে যাবে কিনা এমন প্রশ্ন তৈরি হয় রাজ্য বিজেপি-র অন্দরে। এমন প্রশ্নের পিছনে কারণও ছিল। প্রকাশ্য বিবাদ না হলেও দিলীপকে না জানিয়ে শুভেন্দুর দিল্লিযাত্রা কিংবা রাজভবন সফর নিয়ে বিতর্ক সামনে এসেছে।

নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবারের বৈঠকে উপস্থিত দলের অনেক রাজ্য নেতাই বলছেন, এ বার সেই সব বিতর্ক হয়তো আর দেখা যাবে না। কারণ, দিলীপ-শুভেন্দু দু’'জনেই একে অপরের পদের মর্যাদার‌ক্ষার সদিচ্ছা বুঝিয়েছেন। দিলীপ যেমন শুরুতেই বলেন, ‘‘ভোটের ফল বলছে, রাজ্যের মানুষ আমাদের ক্ষমতায় চায়নি। যোগ্য বিরোধী হিসেবে চেয়েছে। সেই ভূমিকা পালন করতে বিজেপি বিধানসভার ভিতরে ‌ও বাইরে সমান ভাবে লড়বে।‍’’ তেমনই শুভেন্দুও নতুন বিধায়কদের জন্য তাঁর প্রস্তাবিত প্রশিক্ষণ শিবিরের উদ্বোধনে ডেকেছেন দিলীপকে। শুধু তা-ই নয়, প্রাক্তন বিধায়ক ও লোকসভার সদস্য হিসেবে প্রশিক্ষকের ভূমিকায় চেয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতিকে।

মঙ্গলবার রাতে রাজ্য বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতা বলেন, “দিলীপদা আর শুভেন্দুদার মধ্যে কোনও বিবাদ ছিল না এবং নেই। কে আদি আর কে নব্য, তা নিয়েও কোনও লড়াই নেই। তবে কিছু ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও চাইছেন দুই মুখ নিয়ে বাংলায় এগোক দল।” কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সেই অভীপ্সাই দিলীপ ও শুভেন্দুর বক্তব্যেও প্রকাশ পেয়েছে। দিলীপ যেমন সংগঠনকে মজবুত করে আগামিদিনের নির্বাচনে সাফল্যের প্রস্তুতি নেওয়ার ডাক দিয়েছেন তেমনই প্রায় একই সুরে শুভেন্দু বলেন, “সংগঠন মজবুত হলে বিধায়ক সংখ্যা ৭৭ থেকে ১৭৭ হতে সময় লাগবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন