কৃষ্ণেন্দু ও (ডানদিকে) দুলাল। নিজস্ব চিত্র
কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর পুরপ্রধানের চেয়ার দখলের পর সেই চেয়ারই বদলে দিলেন ইংরেজবাজার পুরসভার তত্ত্বাবধায়ক পুরপ্রধান দুলাল সরকার। সেই চেয়ার এখন ঠাঁই পেয়েছে পুরপ্রধানের আপ্ত সহায়কের ঘরে। দুলালবাবু এখন বসছেন অন্য একটি কাঠের চেয়ারে। শুধু তাই নয়, কৃষ্ণেন্দুবাবু চেম্বারের যে দিকে মুখ করে বসতেন, টেবিল সরিয়ে এনে ঠিক তার উল্টো দিকে মুখ করে বসছেন দুলালবাবু।
আগে ঘরে মুখ্যমন্ত্রীর কোনও ছবি ছিল না। এখন পুরপ্রধানের মাথার ওপরেই মুখ্যমন্ত্রীর ছবি। চেম্বারে থাকা বড়সড় প্রজেক্টরের সংযোগও খুলে ফেলা হয়েছে এবং ওই প্রজেক্টরের সঙ্গে যুক্ত শহরের বিভিন্ন জায়গায় থাকা প্রায় ২৫ টি সিসি ক্যামেরার সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়া ওই চেম্বারে আরও একাধিক পরিবর্তন আনা হয়েছে।
কিন্তু কেন এই বদল? তবে কী প্রাক্তণ ও বর্তমান দুই পুরপ্রধান বাস্তুমতে তাঁদের ঘর সাজিয়েছিলেন বা সাজিয়েছেন? যদিও দুজনেই বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
দুলালবাবু বলেন, ‘‘মানুষ পুরপ্রধানের সঙ্গে দেখা করতে এসে যাতে সহজেই ঘরে ঢুকতে পারে সেজন্যই দিক পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন অফিস টাইমে চেম্বারের দরজা সবসময় খোলা রাখা হচ্ছে। এখানে অন্য কোনও বিষয় খোঁজা অর্থহীন।’’ কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘কে কী পরিবর্তন করেছেন বা কেন করেছেন সে ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।’’
এ দিকে শহরের ২৫টি এলাকায় থাকা সিসি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার শহরের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুরপ্রধান দুলাল সরকার অবশ্য জানান, ওই সিসি ক্যামেরার সমস্ত ছবি প্রজেক্টরের মাধ্যমে পুরপ্রধানের চেম্বারে বসে বড় পর্দায় দেখা গেলেও সেই ক্যামেরার সার্ভার বসানো ছিল একটি বেসরকারি সংস্থার ঘরে। তিনি বলেন, ‘‘শহরের নিরাপত্তার বিষয়টি বেসরকারি সংস্থা থেকে নিয়ন্ত্রণ হবে এটা মানা যায় না। পুলিশ যদি ওই ক্যামেরায় নজরদারি চালাতে চায় তবে আমরা তা ব্যবস্থা করতে দেব।’’ কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘পুরসভার বোর্ড অব কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েই সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। তা দিয়ে পুলিশও নজরদারি চালাত। এখন কে কী বলছেন জানি না। তবে সিসি ক্যামেরা বন্ধ করা শহরের নিরাপত্তার অন্তরায়।’’
ইংরেজবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ তৃণমূলের অ্যাসোসিয়েট মেম্বার হওয়ার আগে দলকে শর্ত দিয়েছিলেন, পুরপ্রধানের পদ থেকে কৃষ্ণেন্দুকে হটাতে হবে। দলের নির্দেশ মেনে পয়লা ডিসেম্বর পুরপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফাও দেন কৃষ্ণেন্দু। ১৯ ডিসেম্বর রাজ্য সরকারের তরফে দুলাল সরকারকে পুরসভার তত্ত্বাবধায়ক চেয়ারম্যান করা হয়। আজ বুধবার স্থায়ী চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য বোর্ড অব কাউন্সিলরদের বৈঠক ডেকেছেন দুলালবাবু। দলীয় সূত্রে খবর, বুধবার নীহারবাবুকেই সম্ভবত চেয়ারম্যান পদে বসানো হবে। কিন্তু চেয়ারে বসার পর থেকে ইতিমধ্যে পুরপ্রধানের চেম্বারে একাধিক পরিবর্তন করেছেন দুলালবাবু। এ নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যেও জোর কৌতুহল তৈরি হয়েছে।