ধানজমিতে প্রাচীন মূর্তি

ইতিহাস নিয়ে নাড়াচাড়া লোকজন অবশ্য মূর্তিটি কীসের তা এখনই স্পষ্ট করে জানাতে পারছেন না। তবে, অনেকেই মনে করছেন বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকের কুচিয়াকোল পঞ্চায়েতের দিগপাড় ও ফুলনগরের মাঝামাঝি এলাকায় পাওয়া ওই প্রাচীন মূর্তিটি মাকড়া পাথরের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০১:৪১
Share:

মাটি-খুঁড়ে। নিজস্ব চিত্র

ধান জমির পাশে মাটি থেকে বেরিয়ে থাকা এবড়োখেবড়ো পাথরের বড় চাঙড়টা অনেক দিন ধরেই পড়েছিল। চোখে পড়লেও এত দিন কেউ বিশেষ গুরুত্ব দেননি। কিন্তু, শিবরাত্রির সকালে মাটি খুঁড়ে সেই পাথর বার করে স্থানীয় কয়েকজন পুজো-অর্চনা শুরু করেছেন। স্থানীয়দের দাবি, পাথরের যে অংশ চাপা পড়েছিল, সেই দিকে শিবের মূর্তি খোদাই করা রয়েছে।

Advertisement

ইতিহাস নিয়ে নাড়াচাড়া লোকজন অবশ্য মূর্তিটি কীসের তা এখনই স্পষ্ট করে জানাতে পারছেন না। তবে, অনেকেই মনে করছেন বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকের কুচিয়াকোল পঞ্চায়েতের দিগপাড় ও ফুলনগরের মাঝামাঝি এলাকায় পাওয়া ওই প্রাচীন মূর্তিটি মাকড়া পাথরের। ওই মূর্তি সংরক্ষণের দাবি তুলেছেন অনেকেই। মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রশাসনিক উদ্যোগে মূর্তিটি উদ্ধার করে সংগ্রহশালায় রাখার চিন্তাভাবনা করছি।’’

তাপস মাঝি, গঙ্গা রানার মত স্থানীয় মানুষজন বলেন, ‘‘কৌতূহলবশত মাটির নীচে চাপা থাকা অংশ খুঁড়তেই এই মূর্তি বেরিয়ে পড়ে। কেউ বলছেন, মহাদেবের মূর্তি, আবার কেউ মনে করেন, মূর্তিটি গণেশের।” এরই মধ্যে অনেকে ধূপধুনো দিয়ে পুজোও শুরু করেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।

Advertisement

তবে মূর্তিটির উপরের অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় শনাক্তকরণে অসুবিধা হচ্ছে বলে জানান বিষ্ণুপুরের ইতিহাস গবেষক প্রবীণ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, “পাথরের গায়ে কাদামাটি লেগে থাকায় মাকড়া পাথর কি না ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। মূর্তিটিও কোন আমলের তা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। তবে যাই হোক সংরক্ষণের প্রয়োজন।”

বিষ্ণুপুর জেলা সংগ্রহশালার কিউরেটর তুষার সরকারের মত, “মূর্তিটি মাকড়া পাথরের। ময়নাপুর ও কুচিয়াকোলের প্রাচীন সংস্কৃতি বিচার করে মনে হচ্ছে, মূর্তিটি আনুমানিক সপ্তদশ বা অষ্টাদশ শতকের হতে পারে। মল্লরাজাদের সমসাময়িক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, মূর্তিটি কোন বিগ্রহের, তা নিশ্চিত ভাবে এখনই বলা যাবে না।”

তিনি জানাচ্ছেন, মল্লরাজ বংশের আদি রাজধানী ছিল জয়পুরের প্রদ্যুম্নপুর এলাকায়। আচার্য যোগেশচন্দ্র পুরাকৃতি ভবনে সংরক্ষিত বিভিন্ন মূর্তির অধিকাংশই জয়পুর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। সে দিক থেকে ওই এলাকা থেকে প্রাচীন মূর্তি পাওয়ার মধ্যে অস্বাভাবিকতা নেই বলেই মনে করছেন ইতিহাস গবেষকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement