দাড়ি কেটে বেরিয়েই যেন ভুলে গেলাম সব

পকেটে থাকা চাবির রিঙে লেখা ছিল ‘রাজ হোটেল’। আর সেই সূত্র ধরেই হরিদ্বারে বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া বালির বৃদ্ধকে তাঁর পরিজনদের কাছে ফিরিয়ে দিলেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাতে ছেলের কাছে ফিরে পঁচাত্তর বছরের ওই বৃদ্ধ দাবি করেছেন, কিছুক্ষণের জন্য সব ভুলে গিয়েই যত বিপত্তি!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭ ০৩:০৪
Share:

ফেরা: হরিদ্বার থেকে বাড়ির পথে যতীন্দ্রনাথ দাস। —নিজস্ব চিত্র।

পকেটে থাকা চাবির রিঙে লেখা ছিল ‘রাজ হোটেল’। আর সেই সূত্র ধরেই হরিদ্বারে বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া বালির বৃদ্ধকে তাঁর পরিজনদের কাছে ফিরিয়ে দিলেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাতে ছেলের কাছে ফিরে পঁচাত্তর বছরের ওই বৃদ্ধ দাবি করেছেন, কিছুক্ষণের জন্য সব ভুলে গিয়েই যত বিপত্তি!

Advertisement

উত্তর ভারত ভ্রমণে বেরিয়ে গত ২৬ মার্চ হরিদ্বার পৌঁছেছিলেন বালির পি এন ঘোষ রোডের বাসিন্দা, প্রাক্তন ফুটবল কোচ যতীন্দ্রনাথ দাস। রাতে পরিবারের অন্যরা কেনাকাটা করতে গেলেও তিনি হোটেলে থেকে গিয়েছিলেন। পরে দাড়ি কাটতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। এর পরে বালিতে ওই বৃদ্ধের বাড়িতে খবর আসতেই ছেলে অনুপবাবু স্থানীয় ক্লাব সমন্বয় সমিতির সভাপতি ভাস্করগোপাল চট্টোপাধ্যায়কে সব বলেন। তিনি আবার বিষয়টি জানান ওই বৃদ্ধের ছাত্র, ফুটবলার তথা হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্থানীয় বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়াকে। সাংসদ-বিধায়ক দু’জনেই হরিদ্বারের পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ভাস্করগোপাল বলেন, ‘‘ওঁর ছেলে অনুপ দুই বন্ধুকে নিয়ে হরিদ্বারে পৌঁছে গিয়েছিল। আমরাও ওখানকার স্থানীয় কোতোয়ালি থানায় প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছিলাম।’’

আরও পড়ুন: কেন প্রায় ৫০ বছর ফাঁকা পড়ে আছে পুরুলিয়ার এই স্টেশন?

Advertisement

বুধবার যতীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘দাড়ি কেটে বেরোনোর পরে আচমকা কেমন যেন সব ভুলে গেলাম। সোজা হাঁটতে শুরু করলাম। আর হোটেল খুঁজে পেলাম না।’’ তিনি জানান, ২৬ মার্চ রাতে রাস্তার ধারের একটি চায়ের দোকানে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। পরের দিন ভোর হতেই আবার হোটেল খুঁজতে বেরিয়ে পরেন। সেই রাতটাও কাটে রাস্তার ধারে। ২৮ মার্চ সকালে পৌঁছন হরিদ্বার থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরের শিবালিক নগর কলোনিতে। সেখানে তাঁকে ইতস্তত ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয় বাসিন্দা রাজকুমার চৌহানের। জানতে পারেন, যতীন্দ্রনাথবাবু হোটেলের নাম ভুলে গিয়ে পথ হারিয়েছেন।

রাজকুমারবাবুই ওই বৃদ্ধের পকেট থেকে সাত হাজার টাকা-সহ হোটেলের ঘরের চাবি উদ্ধার করেন। তা থেকেই জানা যায় হোটেলের নাম। রাজকুমারবাবু বলেন, ‘‘ওই হোটেলের কাছে আমার আত্মীয় থাকেন। তাঁদের মাধ্যমেই হোটেলের মালিকের থেকে সব জানতে পারি।’’ এর পরে শিবালিক নগর কলোনির বাসিন্দারা চাঁদা তুলে গাড়ি ভাড়া করে হরিদ্বারে এসে মঙ্গলবার রাতে অনুপের হাতে তাঁর বাবাকে ফিরিয়ে দেন। রাস্তায় ওই বৃদ্ধকে রুটি-তরকারি-মিষ্টিও খাইয়েছেন রাজকুমারবাবুরা। বুধবার রাতেই কলকাতায় ফেরার ট্রেন ধরেছেন বালির ওই বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন