হুঁশিয়ারি পথে, যৌথ প্রতিবাদ বিধানসভাতেও

নবান্ন অভিযানে পুলিশি ভূমিকার প্রতিবাদে বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে হইচই বাধাল বিরোধীরা। পুলিশের সঙ্গে কলকাতা ও হাওড়ার রাজপথে সোমবার খণ্ডযুদ্ধ হয়েছিল বাম কর্মী-সমর্থকদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৭ ০৪:০৫
Share:

নবান্ন অভিযানে পুলিশি ভূমিকার প্রতিবাদে বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে হইচই বাধাল বিরোধীরা। পুলিশের সঙ্গে কলকাতা ও হাওড়ার রাজপথে সোমবার খণ্ডযুদ্ধ হয়েছিল বাম কর্মী-সমর্থকদের। বিধানসভার ভিতরে মঙ্গলবার বামেদের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়েই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামলেন প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের বিধায়কেরা। আর বাইরে মিছিল করে সিপিএমের হুঁশিয়ারি, ‘অগণতান্ত্রিক’ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের নতুন অধ্যায় শুরু হল ‘নবান্ন চলো’ থেকেই।

Advertisement

বিধানসভায় এ দিন শুরু থেকেই কালো কাপড় এবং ব্যানার নিয়ে ওয়েলে নেমে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ধরেন বাম ও কংগ্রেস বিধায়কেরা। বামেদের উপরে পুলিশের লাঠি চালানোর ছবি দেওয়া ব্যানার-পোস্টার ছিল তাঁদের সঙ্গে। বিধায়কদের কেউ কেউ কালো কাপড় স্পিকারের দিকে ছুড়েও দেন। নবান্ন অভিযানে বিক্ষোভকারীদের উপরে পুলিশ কেন ‘নির্বিচারে’ লাঠি চালিয়েছে, তা নিয়ে পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতিও চান তাঁরা। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য অধিবেশনের পরে নিজের ঘরে বলেছেন, ‘‘তদন্তের প্রশ্নই ওঠে না! যদি বামেরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করতো, প্ররোচনা না দিতো, পুলিশকে না পেটাতো, তা হলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টিই হতো না।’’

বিরোধীদের বিক্ষোভ চলাকালীনই এ দিন প্রশ্নোত্তর-পর্ব চালিয়ে যাচ্ছিলেন স্পিকার। তার মধ্যেই পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের মোবাইলে একটি ফোন আসে। ফোনে কথা বলতে বলতে তিনি কক্ষের বাইরে যান এবং একটু পরে ফিরে এসে ফোনটি দেন পার্থবাবুকে। ফোন নিয়ে পার্থবাবু আবার কক্ষের বাইরে গিয়ে কথা বলেন। ফিরে এসেই স্পিকারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় পরিষদীয় মন্ত্রীকে। শাসক শিবির সূত্রের খবর, বিরোধীদের মোকাবিলায় পরামর্শ দিতে ফোন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

আরও পড়ুন: কোথায় স্বজন, দিশাহারা শহর

প্রবল হট্টগোলের মধ্যেই প্রথমার্ধের বিরতি ঘোষণা করেন স্পিকার। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বাম ও কংগ্রেসের আচরণের নিন্দা করে স্পিকার বলেন, ‘‘প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, কাপড় নিয়ে অনেকেই সভার মধ্যে ঢুকে পড়ছেন। এ সব কিছুই বিধানসভার রীতির পরিপন্থী।’’ বাম ও কংগ্রেস বিধায়কদের বিক্ষোভে বিধানসভার কার্যবিধির ৩২৫ ধারা লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে স্পিকার জানান। এর পরে পার্থবাবুও বলেন, ‘‘গত দু’দিন ধরে কিছু সদস্য বিধানসভাকে কলুষিত করছেন। স্পিকারের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন।’’ আগামী দিনে এ ভাবে সভায় বিক্ষোভ দেখালে সংশ্লিষ্ট বিধায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্পিকারকে অনুরোধ করেন পার্থবাবু।

কর্মী-সমর্থক এবং সাংবাদিকদের উপরে পুলিশি আক্রমণের প্রতিবাদে এ দিন বিকালে ধর্মতলা থেকে এন্টালি বাজার পর্যন্ত কলকাতা জেলা বামফ্রন্টের অয়োজিত মিছিলে পা মেলান সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, নরেন চট্টোপাধ্যায়, সুকুমার ঘোষ, প্রবীর দেব, অসীম দাশগুপ্তেরা। মিছিল শেষে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে তরোয়াল নিয়ে মিছিল হল, উস্কানি দেওয়া হল। তখন তৃণমূলের পুলিশ কী করছিল?’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘নবান্ন অভিযান শেষ নয়। নতুন করে শুরু। প্রতিটা রক্তবিন্দুর হিসাব নেব!’’ নবান্ন অভিযানে ধৃত ১২ জন বাম কর্মী-সমর্থক এ দিনই ব্যাঙ্কশাল কোর্টে জামিন পেয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন