বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে বিতর্কের মাঝেই ‘বিশ্ব বাংলা’ বিল

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে গত জানুয়ারিতে শিক্ষা সম্মেলনে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘোষণা মতোই বোলপুরে ‘বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয়’ তৈরি করতে চলেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু ‘বিশ্ব বাংলা’ নিয়ে চলতি বিতর্কের মাঝে আবার ওই নামেই বিশ্ববিদ্যালয় কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:২৮
Share:

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে গত জানুয়ারিতে শিক্ষা সম্মেলনে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘোষণা মতোই বোলপুরে ‘বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয়’ তৈরি করতে চলেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু ‘বিশ্ব বাংলা’ নিয়ে চলতি বিতর্কের মাঝে আবার ওই নামেই বিশ্ববিদ্যালয় কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।

Advertisement

বিধানসভায় আজ, মঙ্গলবারই পেশ হতে চলেছে ৪০ পাতার ‘বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় বিল, ২০১৭’। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিধানসভায় বিলটি পেশ করার সময়েই তা নিয়ে আপত্তি জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বিরোধী শিবির। তাদের প্রশ্ন, ‘বিচারাধীন’ বিষয় বলে ডেঙ্গি নিয়ে বিধানসভায় আলোচনার অনুমতি মিলছে না। ‘বিশ্ব বাংলা’ লোগো ও ব্র্যান্ডের স্বত্বাধিকার নিয়েও এখন আদালতে লড়াই চলছে। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও জনস্বার্থের মামলা দায়ের করেছেন। বিরোধী এক বিধায়কের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে ‘বিচারাধীন’ থাকা একটি নামকে ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয় বিল কী ভাবে বিধানসভায় আলোচনা হবে?’’

বিরোধীদের আরও বক্তব্য, বোলপুরের কাছে শিল্পতালুকের জন্য যে জমি নেওয়া হয়েছিল, সেখানেই এখন বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসন তৈরির পরিকল্পনা হচ্ছে। যেখানে কৃষকদের বিক্ষোভে পাশে দাঁড়াতে গিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডলের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও সিপিএমের আইনজীবী-নেতা বিকাশ ভট্টাচার্যকে। কৃষকদের বিক্ষোভ এবং বিরোধীদের প্রতিবাদে বাধা পাওয়ার বিষয়টিও তুলতে চায় বিরোধীরা। সরকার পক্ষ অবশ্য বিল পাশে বদ্ধপরিকর। প্রয়োজনে বিরোধীশূন্য সভাতেই বিল পাশ হয়ে যাবে বলে শাসক শিবিরের আশা। তাদের মতে, সরকার যে পূর্বঘোষণা মেনে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করছে, এই বার্তা দেওয়া দরকার।

Advertisement

প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছে, এই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হলে রবীন্দ্র সাহিত্য নিয়ে পঠনপাঠন এবং গবেষণার পাশপাশি ভারততত্ত্ব, ভারতীয় দর্শন, ভারতীয় সাহিত্য নিয়েও পড়াশোনা এবং গবেষণার সুযোগ থাকবে। তার সঙ্গে কলা, বিজ্ঞান এবং কগনিটিভ সায়েন্সের পঠনপাঠনের ব্যবস্থা থাকবে।

চলতি অধিবেশনেই বিধানসভায় আসছে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত আরও তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি বিষয়ক বিল। হুগলিতে হবে ‘পশ্চিমবঙ্গ গ্রিন ইউনিভার্সিটি’। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ, জীব বৈচিত্র্য নিয়ে পঠনপাঠন, গবেষণায় গুরুত্ব দেওয়া হবে। পরিবেশ দূষণ রোধের লক্ষ্যে এই বিষয়ে একটি উৎকর্ষ কেন্দ্র তৈরির কথা বিলে বলা হয়েছে। তার পাশাপাশি কলা, বিজ্ঞান এবং আইন নিয়ে চিরাচরিত পড়াশোনা এবং গবেষণার সুযোগও থাকবে। ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব মেদিনীপুরে তৈরি হবে আরও দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়।

তবে আইআইএসডব্লুবিএম-কে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা এবং টেকনো ইন্ডিয়ার উদ্যোগে নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যলয় তৈরির বিল সোমবার স্থির হওয়া অধিবেশনের বাকি দিনগুলির কার্যসূচিতে নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন