West Bengal Budget 2023-24

বঙ্গে বাড়তি ২২ হাজার কোটি খরচ নিয়ে প্রশ্ন

বাজেটের বাইরে অতিরিক্ত খরচের পরিমাণ প্রায় ২১,৭৪৩ কোটি টাকা। গত বছর (২০২১-২২) সেই খরচ ছিল প্রায় ২০,৭৫১ কোটি টাকা। এখানেই বিষয়টি নিয়ে ‘অস্পষ্টতা’র অভিযোগ বিরোধীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:২১
Share:

বাজেট-বহির্ভূত অর্থ ব্যয়ের হিসেব বিধানসভায় পেশ করেন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ছবি: পিটিআই।

প্রায় প্রতি বছর বাজেটের বাইরে কিছু অর্থ খরচ করতে হয় রাজ্য এবং কেন্দ্র উভয় পক্ষকেই। রাজ্য সরকার চলতি আর্থিক বছরে (২০২২-২৩) অতিরিক্ত প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে এবং সেই খরচ নিয়ে অস্পষ্টতার অভিযোগ তুলেছে বিরোধী শিবির। সোমবার ওই বাজেট-বহির্ভূত অর্থ ব্যয়ের হিসেব বিধানসভায় পেশ করেন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর খতিয়ান অনুযায়ী গত আর্থিক বছরের তুলনায় ওই বাড়তি খরচ প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বেশি। এ দিন বিষয়টি পাশ হয়ে গেলেও প্রধান বিরোধী দল বিজেপি এর ‘অস্পষ্টতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় খানিকটা বেসুর বেজেছে। শাসক শিবিরের দাবি, শুধু যে সামাজিক ক্ষেত্রে নয়, উল্লেখযোগ্য হারে বরাদ্দ হয়েছে পরিকাঠামোতেও।

Advertisement

হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বাজেটের বাইরে অতিরিক্ত খরচের পরিমাণ প্রায় ২১,৭৪৩ কোটি টাকা। গত বছর (২০২১-২২) সেই খরচ ছিল প্রায় ২০,৭৫১ কোটি টাকা। যে-সব খাতে অতিরিক্ত খরচ হয়েছে, তার মধ্যে সামাজিক, পেনশন-অবসরকালীন সুবিধা, পরিবহণ ভর্তুকি ছাড়াও একশো দিনের কাজ প্রকল্পে ১১২৫ কোটি, সড়ক-সেতু উন্নয়নে ৯৬৩ কোটি, কেন্দ্রীয় অনুদানভুক্ত নানা প্রকল্পে ৯৩৪ কোটি, স্বাস্থ্য খাতে ১৩৮ কোটি, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সংরক্ষণে ৩৩৭ কোটি, আরবান হেল্‌থ মিশনে ৪৫৮ কোটি অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়েছে। বিদ্যুৎ ভর্তুকিতে খরচ হয়েছে ৩৫৮ কোটি, ডেউচা-পাঁচামির জন্য ২০০ কোটি, স্বচ্ছ ভারতে ২০২ কোটি টাকা। জিএসটি-র জাতীয় ট্রাইবুনাল খাতে বরাদ্দ হয়েছে ৩৫০০ কোটি।

বিরোধী শিবিরের প্রশ্ন, আগে থেকে খরচের বিষয়টি অনুমান করা গেল না কেন? সাধারণত প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা আচমকা তৈরি হয়ে যাওয়া কোনও গুরুতর পরিস্থিতিতে সরকারকে যে-অর্থ খরচ করতে হয়, মূলত তারই হিসেব থাকে অতিরিক্ত খরচের তালিকায়। কিন্তু গত এক বছর রাজ্যে তেমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। বিরোধীদের অভিযোগ, মূলধনী খাতে বরাদ্দ নেহাতই কম। তাই স্থায়ী সম্পদ তৈরির কোনও সুযোগ থাকছে না। কিন্তু সামাজিক খাতে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ফলে প্রায় ছ’লক্ষ কোটি টাকার ঋণ সরকার কী ভাবে সামলাবে, বাজেটে তারও কোনও দিশা দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধী শিবির।

Advertisement

সরকারের দেওয়া হিসেব নিয়ে প্রশ্ন তুলে অর্থনীতিবিদ তথা বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী এ দিন বিধানসভায় মন্তব্য করেন, খুব কঠিন বই। কোনও ব্যাখ্যা নেই সেখানে। অতি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে খরচ করা যেতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন হল, তাতে কি পরিকল্পনার অভাব ছিল!

তবে কেন্দ্রের সঙ্গে তুলনা টেনে চন্দ্রিমার দাবি, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে মোট বাজেটের ২০.৬১% অতিরিক্ত অর্থ খরচ করেছিল কেন্দ্র। ২০২২-২৩ বছরে তা হয়েছে (প্রথম দফার সাপ্লিমেন্ট) ১১.০২%। একই সময়ে মোট বাজেট বরাদ্দের নিরিখে রাজ্যের অতিরিক্ত খরচের হার যথাক্রমে ৬.৭২% এবং ৬.৭৭%। ‘‘আমরা কড়া ফিসকাল শৃঙ্খলার মধ্যেই রয়েছি। কেন্দ্রীয় অনুদানভুক্ত কোনও প্রকল্প বন্ধ করা হয়নি,’’ বলেন চন্দ্রিমা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন