মাঠে থাকবেন মহুয়া আদৌ? প্রশ্ন বিরোধীর

এ বারও যখন সেই মহুয়া মৈত্র কৃষ্ণনগর থেকে তৃণমূলের হয়ে লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়েছেন তখনও কিন্তু বিরোধীরা তাঁকে প্রয়োজনে এলাকায় পাওয়া যাবে না বলে দাবি করে প্রচার শুরু করেছেন। তবে এ বার ‘বহিরাগত’ বলে নয়, বরং কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠার জন্য মহুয়াকে বেশির ভাগ সময়ে দিল্লিতে কাটাতে হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। 

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০৪:৪৯
Share:

প্রচারে নামলেন তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। কৃষ্ণনগরে শুক্রবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

তিনি যখন করিমপুর থেকে বিধানসভা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তখন বিরোধীরা ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। বলা হয়েছিল শিক্ষিত, শহুরে নেত্রীকে গ্রামগঞ্জে পাওয়া যাবে না। ভোটারদের সুবিধা-অসুবিধায় নেত্রী থাকবেন ধরাছোঁওয়ার বাইরে। ভোটে জেতার পর তাঁদের কথাকে অনেকাংশে ভুল প্রমাণ করেছিলেন তিনি।

Advertisement

এ বারও যখন সেই মহুয়া মৈত্র কৃষ্ণনগর থেকে তৃণমূলের হয়ে লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়েছেন তখনও কিন্তু বিরোধীরা তাঁকে প্রয়োজনে এলাকায় পাওয়া যাবে না বলে দাবি করে প্রচার শুরু করেছেন। তবে এ বার ‘বহিরাগত’ বলে নয়, বরং কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠার জন্য মহুয়াকে বেশির ভাগ সময়ে দিল্লিতে কাটাতে হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

মহুয়া নিজে প্রচার আরম্ভ করেছেন শুক্রবার থেকে। তার কিছু দিন আগে থেকেই বিরোধীরা তাঁদের প্রচারে বলছেন, ‘‘মহুয়া মৈত্র জাতীয় স্তরে তৃণমূলের মুখপাত্র হয়ে উঠছেন। কারণ তিনি ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় দক্ষ। তাই নির্বাচনে জিতলে তাঁকে দিল্লিতেই বেশি সময় দিতে হবে। দিল্লির রাজনীতির অলিন্দে তাঁর উপস্থিতি থাকবে বেশি। নিজের কেন্দ্রে দিকে তেমন নজর থাকবে না। সেখানে ‘অদৃশ্য’ থাকবেন। কৃষ্ণনগরের মানুষের পাশে তাঁকে বিশেষ পাওয়া যাবে না।’’ মহুয়ার বিরুদ্ধে একেই এ বার বড় ইস্যু করে প্রচারে ঝাঁপাচ্ছেন তাঁরা। বিষয়টি শুনে রীতিমতো আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে মহুয়া বলেন, “আমি চাঁদে থাকলেও এলাকায় ওদের থেকে বেশি কাজ করব। করিমপুরে বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও এই একই কথা বলেছিল। এই ক’দিনে যা উন্নয়ন করে দিয়েছি সেটা করিমপুরের মানুষরাই বলবেন। এ সব শুনতে-শুনতে আমি ক্লান্ত।”

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

শুক্রবার বেলা বারোটা নাগাদ কয়েকশো কর্মীর সঙ্গে জেলা পরিষদের সামনে থেকে হাঁটা শুরু করেন মহিলা। লড়াইয়ের ময়দানে তিনি যে বিরোধীদের এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দেবেন না তা হাবভাব, কথায় বুঝিয়েও দেন। দলীয় সূত্রের খবর, লড়াই কঠিন বুঝতে পেরে প্রচারের প্রথম দিনেও হালকা থাকতে চাননি। সোজা চলে যান নাকাশিপাড়া। সেখানে শুনাকাশিপাড়া, বেথুয়াডহরি-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দোলের আগে তিনি নাকাশিপাড়া, কৃষ্ণনগর উত্তর ও দক্ষিণ বিধানসভা এলাকার কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক সেরে ফেলতে চান বলে ঘনিষ্ঠেরা জানিয়েছেন। কারণ, এই এলাকায় দলের সংগঠন এখনও দুর্বল হয়ে আছে।

এরই মধ্যে দিল্লি থেকে চলে এসেছেন সুপ্রিম কোর্টের ছয় জন তরুণ আইনজীবী ও এক জন আইনের ছাত্র। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার জন্য সাতটি ‘ওয়ার রুম’ খোলা হচ্ছে যার দায়িত্বে থাকবেন ওই সাত জন। তাঁরা দলীয় কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। মহুয়া মৈত্রের এক ঘনিষ্ঠের কথায়, “করিমপুর বিধানসভা নির্বাচনের মতোই এ বারের ভোট করবেন দিদি। এখানে নেতারা তো থাকবেনই সেই সঙ্গে কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করে লড়াইটা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন