Suvendu Adhikari

মানুষ তৈরি কিন্তু দল তৈরি কি, প্রশ্ন শুভেন্দুর

বৈঠকে প্রারম্ভিক বক্তৃতা করেন সুকান্ত। সমাপ্তি ভাষণ ছিল শুভেন্দুর। সুকান্তের বক্তব্যেও ছিল আত্মসমালোচনার সুর। সূত্রের খবর, সুকান্ত বলেছেন, তাঁদের দলের কিছু নেতার অভ্যাস, অন্যেরা উপরের দিকে উঠলে পিছন থেকে টেনে ধরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও বারুইপুর শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৫৩
Share:

রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের বৈঠক কলকাতায়। বারুইপুরের যুব মোর্চার সমাবেশে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।

সদ্য বঙ্গ সফরে এসে রাজ্য নেতাদের ‘আত্মসমীক্ষা’ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজ্য বিজেপির বৈঠকে দলীয় বৈঠকে বুধবার কার্যত একই কথা শোনা গেল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গলায়। রাজ্য পদাধিকারীদের নিয়ে এ দিন আইসিসিআর-এ বৈঠকে বসেছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। শুভেন্দু ছাড়াও রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, সতীশ ধন্ড, সহ-পর্যবেক্ষক আশা লকড়া, অমিত মালবীয়রা বৈঠকে ছিলেন। সূত্রের খবর, সেখানেই শুভেন্দু বলেন, রাজ্যের মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। কিন্তু বিজেপি সেই জায়গাটা নিতে প্রস্তুত তো? দল কতটা মানুষের কাছে পৌঁছতে পারছে, তার উপরেই সাফল্য নির্ভর করছে। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, এখন আর বৈঠক করার সময় নেই। এ বার লড়াইয়ের ময়দানে তাঁদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

Advertisement

বৈঠকে প্রারম্ভিক বক্তৃতা করেন সুকান্ত। সমাপ্তি ভাষণ ছিল শুভেন্দুর। সুকান্তের বক্তব্যেও ছিল আত্মসমালোচনার সুর। সূত্রের খবর, সুকান্ত বলেছেন, তাঁদের দলের কিছু নেতার অভ্যাস, অন্যেরা উপরের দিকে উঠলে পিছন থেকে টেনে ধরা। এই ‘অভ্যাস’ দূর করতে হবে। সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, তাঁদের দলে শৃঙ্খলাই শেষ কথা। নাম না করে সদ্য পদ খোয়ানো অনুপম হাজরার উদাহরণ টেনে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, অনেক কেন্দ্রীয় নেতার কী পরিণতি হয়েছে, সেই কথা মাথায় রেখে সকলে যেন কাজ করেন। শাহ ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার বৈঠকের পরে মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ থেকে সরানো হয়েছিল প্রাক্তন সাংসদ অনুপমকে। তিনি কি আবার তৃণমূলে ফিরে যাবে? বোলপুর আদালতে এ দিন একটি মামলায় হাজিরা দিতে এসে এই প্রশ্নে অনুপমের মন্তব্য, ‘‘আমি এখন দু’দিনের জন্য হিমালয়ে যাচ্ছি। হিমালয় থেকে ফিরে আসি। এ নিয়ে তৃতীয় দিনে কথা হবে।”

শাহ-নড্ডা জোড়া বৈঠক করে লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ৩৫টি আসনের লক্ষ্যমাত্রার কথা ফের স্মরণ করিয়ে তৃণমূল-বিরোধী প্রচারে আগ্রাসী ও দ্রুতগামী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন দলকে। সূত্রের খবর, এ দিন বৈঠকে মঙ্গল দলের কর্মীদের আরও বেশি করে সময় দিতে বলেছেন। তাঁর নির্দেশ, ১ জানুয়ারি থেকে সকলের সব ‘ছুটি’ বাতিল। সকলকে সর্বক্ষণের কর্মীর মতো কাজ করতে হবে। সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির ৭টি মোর্চার একত্রে আগামী ৩ জানুয়ারি সংযুক্ত মোর্চা সম্মেলন হতে চলেছে।

Advertisement

রাজ্যের বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে শুভেন্দু এ দিন যাদবপুর সাংগঠনিক জেলার যুব সম্মেলনে যোগ দিতে বারুইপুর গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণ করেন তিনি। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সূত্রে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস ও সিপিএমকে এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ করেছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকা থেকে জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত লোকজন ধরা পড়ছে বলে অভিযোগ করে বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, ‘‘বারুইপুরের মানুষের কাছে আমার আবেদন, জমি বিক্রি বা ঘর ভাড়া দেওয়ার আগে দেশের স্বার্থটা এক বার দেখবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন