নিচুতলা পর্যন্ত চলবে রদবদল, বার্তা সিপিএমে

লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরেই সাংগঠনিক পুনর্গঠনের ভাবনা ফের শুরু হয়েছিল সিপিএমে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:১৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

শুরু হয়েছে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী থেকে। সাংগঠনিক রদবদলের প্রক্রিয়া এর পরে নিচু তলা পর্যন্ত সম্পূর্ণ করতে হবে বলে দলের রাজ্য কমিটিতে বার্তা দিল সিপিএম। সেই সঙ্গেই প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য গড়া হল দুই সদস্যের কমিশন।

Advertisement

লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরেই সাংগঠনিক পুনর্গঠনের ভাবনা ফের শুরু হয়েছিল সিপিএমে। চার বছর আগের কেন্দ্রীয় প্লেনামের নানা সিদ্ধান্ত কতটা রূপায়িত হয়েছে, তার পর্যালোচনা রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল জেলা নেতৃত্বের কাছে। এ সবের প্রেক্ষিতেই এ বার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর চার সদস্যকে ‘অব্যাহতি’ দিয়ে তুলনায় কম বয়সের মুখ নিয়ে আসা হয়েছে রাজ্য নেতৃত্বে। সেই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়ে আলিমুদ্দিনে শুক্রবার রাজ্য কমিটির বৈঠকের শেষ দিনে জবাবি ভাষণে দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়ে দিয়েছেন, কাজে নিষ্ক্রিয়তা বা শিথিলতা থাকলে কোনও কমিটিতেই পদ আঁকড়ে থাকা চলবে না। পুনর্গঠনের কাজে আর কোনও অজুহাতও চলবে না। সম্মেলন-পর্ব যথাসময়ে যেমন হওয়ার, হবে। কিন্তু সংগঠনের প্রয়োজনীয় সংস্কার জেলা, এরিয়া ও লোকাল কমিটিতে ফেলে রাখা যাবে না বলে বৈঠকে বার্তা দিয়েছেন সূর্যবাবু।

রাজ্য কমিটির বৈঠকের বিরতিতে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন, সাংগঠনিক পুনর্গঠনের কাজ সর্বস্তরেই হবে। তাঁর যুক্তি, ‘‘আমরা আগেও বলেছি, দেশের মোট জনসংখ্যার বিন্যাস অনুযায়ী, সংখ্যাগরিষ্ঠেরই গড় বয়স এখন চল্লিশের আশেপাশে। সেখানে সিপিএম গড় বয়স ৬৫ নিয়ে চলতে পারে না! জনসমাজের সঙ্গে দলকে তাল রাখতে হবে।’’ প্রশ্নের জবাবে ইয়েচুরি এ-ও বলেছেন, লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরেও বাংলায় বামেদের মিছিল-সমাবেশে ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। নেতাজি ইন্ডোরে বৃহস্পতিবারই কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে ওঠার শতবর্ষ পূর্তির অনুষ্ঠানে বিপুল ভিড় হয়েছে। এই ভিড়কে ভোটে টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাংগঠনিক পারদর্শিতা দরকার।

Advertisement

এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস-সহ নতুন ৮ জনকে এ বার রাজ্য কমিটিতে নেওয়া হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা থেকে অবশ্য প্রাক্তন ছাত্র-নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়ের জন্য বৈঠকে সুপারিশ করা হয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুরের এক নেতা এ দিন বৈঠকে সওয়াল করেন, নেতৃত্বে জায়গা দেওয়া বা শৃঙ্খলা-রক্ষার প্রশ্নে এখনও পছন্দ-অপছন্দই বড় ভূমিকা নিচ্ছে। ক্যাডার নীতি ঠিক ভাবে মানা হচ্ছে না। সুশান্তবাবুর প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। আবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ দু’টি জেলার প্রতিনিধিরা বলেন, কঠিন সময়ে সুশান্তবাবুর ভূমিকা মনে রেখে দলের ‘অনড়’ অবস্থান নেওয়া উচিত নয়। জবাবি ভাষণে সূর্যবাবু বলেন, দলের নিয়ম-নীতি ও শৃঙ্খলা সব সদস্যের জন্যই প্রযোজ্য। সব কিছুরই সীমা থাকা উচিত। অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী, দু’তরফের বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে শোনার জন্যই কমিশন হয়েছে। পুরুলিয়ার বলরামপুর এরিয়া কমিটির নেতা কোকিল রজককে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করার সুপারিশ অনুমোদিত হয়েছে রাজ্য কমিটিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন